‘গণতন্ত্র নয়, উন্নয়ন’—এই নীতিতে বাংলাদেশে গত ১৫ বছর সরকার পরিচালিত হয়েছে। দীর্ঘ সময় ক্ষমতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনার এই নীতির মূলমন্ত্র ছিল মেগাপ্রজেক্ট। আর মেগাপ্রজেক্ট মানেই মেগাদুর্নীতি। অধ্যাপক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্রে জানা গেল, গত ১৫ বছরে প্রতিবছর দেশ থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার
দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করতে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন জরুরি
- সারোয়ার তুষার, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক কমিটি


জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীরা যে দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিল, সেটি ছিল লুটেরা মাফিয়া সিন্ডিকেটের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কোটা পদ্ধতির মধ্য দিয়ে সরকারি চাকরিতে আওয়ামী লীগের দল ভারী করার আয়োজন করা হয়েছিল। কারণ লাগামহীন লুটপাটের জন্য শেখ হাসিনা সর্বত্র নিজের আস্থাভাজন লোক রাখতে চেয়েছেন, লুটেরা সিন্ডিকেটকে বৃহৎ থেকে বৃহত্তর করতে চেয়েছেন। এর সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গুম-খুন এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রকল্পের জন্য নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা, নাগরিকদের জন্য বিনা মূল্যে শিক্ষা-চিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। ব্যক্তি খাত তথা প্রাইভেট সেক্টরকে রাষ্ট্রীয় হয়রানিমুক্ত করতে হবে। এই খাতকে প্রতিযোগিতাবান্ধব জায়গায় নিয়ে আসতে পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে ব্যবসায়ীরা সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ব্যবসা করবেন। করের নীতি পরিবর্তন করতে হবে। সরকারি প্রকল্পগুলোতে অপচয় ও পাচারের মহামারি রোধে পরিকল্পনা জরুরি। এসব সংস্কার দুর্নীতি ও বৈষম্য রোধে সহায়ক হবে। এসব সংস্কারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে সুস্থ ধারায় ফেরানো সম্ভব হবে।
গত ১৫ বছরে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। দেশের টাকা বিদেশে পাচার রোধে কার্যকর পদ্ধতি গ্রহণ করলে দেশের অর্থনীতি আরো প্রসারিত হবে। শেখ হাসিনার আমলে ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে দেশের ব্যাংকগুলোর অবস্থা জীর্ণশীর্ণ। ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে ব্যাংক-বীমা খাতে কঠোর নীতি প্রণয়ন করতে হবে। বিদ্যমান ব্যাংক কম্পানি আইন, স্টক অ্যান্ড সিকিউরিটিজ আইন এবং মানি লন্ডারিং আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। সংস্কার সম্পন্ন হলে এই গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামোগুলোতে সরকারের অন্যায্য হস্তক্ষেপ বন্ধ হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচার রোধেও কতগুলো আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। অর্থনৈতিক আইন ও বিধি-বিধান সংস্কার করলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।
অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতিতে বিপুল জনগোষ্ঠী যুক্ত। রাস্তার হকার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী থেকে এই খাতের বিপুলসংখ্যক পেশা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রাষ্ট্র ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের অর্থনৈতিক সংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। পৃষ্ঠপোষকতার অনুপস্থিতির সুযোগে এই খাতে রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের চাঁদাবাজি চলছে। অথচ এই খাত নিয়ে সরকারের কোনো নীতি ও পরিকল্পনা নেই। এদের স্বীকৃতি ও প্রণোদনা দেওয়া দরকার। এই শ্রেণির ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে অর্থনীতির একচেটিয়াতন্ত্র অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।
তথ্য-প্রযুক্তি ও জনশক্তি রপ্তানি খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য যুবসমাজকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিলে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাবে এবং প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে।
বেসরকারি খাতেও বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ করছে। অথচ এখানে চাকরির নিরাপত্তা নেই, অন্য খাতের বিবেচনায় আয়ব্যবস্থায় সাম্য নেই। সরকারের উচিত এই খাতের জন্য বিশদ পরিকল্পনা গ্রহণ করা, যেন জনগণ সরকারি চাকরিকেই একমাত্র অবলম্বন মনে না করে।
পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় স্বভাবতই শোষণ ও বৈষম্য নিহিত থাকে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বদল না করেও আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে বৈষম্যের অবসান সম্ভব। নীতি ও পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে জনগণের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের মাধ্যমে বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব। রাজনৈতিক ক্ষমতার বিশেষ চরিত্রের জন্য আমাদের দেশে বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যদি রাজনৈতিক ক্ষমতার বিন্যাস বদলাতে পারি তাহলে বৈষম্যের অবসান সম্ভব। রাজনৈতিক ক্ষমতার বিন্যাস পরিবর্তন করলে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্যেও কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা যাবে।
সম্পর্কিত খবর

সংস্কারে স্বপ্নের আগামী


পাহাড়ি জনপদ
সমস্যা ও সম্ভাবনা : প্রেক্ষাপট পার্বত্য চট্টগ্রাম
- সাইং সাইং উ নিনি, ফ্যাকাল্টি কো-অর্ডিনেটর, স্কুল অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, বান্দরবান ইউনিভার্সিটি

পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান বাংলাদেশের—এই তিনটি জেলার অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট আলোচনা করতে গেলে দেখা যায়, ভৌগোলিক কারণে এখানকার জীবন ও জীবিকা সমতলের চেয়ে কঠিন ও কষ্টসাধ্য। উল্লেখ্য, দেশভাগের পর থেকে এ অঞ্চলের প্রেক্ষাপট পাল্টাতে শুরু করে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে শুরু করে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের অবস্থা ছিল এক রকম।
পর্যটন সম্ভাবনা
কৃষির পাশাপাশি এ অঞ্চলে পর্যটনশিল্পের অভূতপূর্ব সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে পর্যটনের ব্যবসা বেশ সরব ছিল; যদিও বা পর্যটনশিল্পের সঙ্গে এলাকার সাধারণ আদিবাসীদের সংযুক্তি খুব বেশি একটা চোখে পড়ার মতো নয়।
পরিবেশ ও ভৌগোলিক অবস্থা
সম্প্রতি পাহাড়ে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, পানিসংকটসহ উৎপন্ন পণ্য বাজারজাতকরণের অভাবে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে পাহাড়ে, বিশেষ করে বান্দরবানের কয়েকটি উপজেলায় কয়েক বছর ধরে ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে পানিসংকট বাড়ছে। ফলে ফসল উৎপাদন এবং সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। পাহাড়ে ঝিরি-ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে যে নীরব ঘাতকরা কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে কখনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ঝিরি-ঝরনা ও পানির উৎসস্থলগুলোতে বন সংরক্ষণ করা না হলে এ অঞ্চলে পানিসংকট আরো তীব্র হবে। অর্থনৈতিক মুক্তি বিকল্প কর্মসংস্থান এবং সচেতনতার মাধ্যমে অংশীদারির ভিত্তিতে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে এখানকার আদিবাসী সমাজকে সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
রাজনীতি
এ অঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিয়ে বহুদিন ধরে কথা বলে এলেও সাধারণ মানুষ এখনো ভূমিহীন হয়ে আছে। বিশেষ করে পাহাড়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষগুলোর নিজস্ব কোনো ভূমি নেই বললেই চলে। এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ আগে থেকেই প্রথাগত আইনের ওপর নির্ভরশীল। প্রথাগত আইনে ভূমির মূল মালিক রাজা। এ অঞ্চলের মানুষ ভূমির ক্ষেত্রে রাজার ওপর নির্ভরশীল এবং বিশ্বাস করে। ফলে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক জটিলতা, বিশেষ করে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকে এই সমস্যা শুরু হয় এবং পরে ১৯৭১ সালের পরে আরো নতুন মাত্রায় রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও আজ পর্যন্ত চুক্তির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এখানকার মানুষের ভূমি অধিকার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা
পাহাড়ের মানুষগুলো এখনো পাহাড় সমান জীবনসংগ্রামের কষ্ট, বাধা-বিপত্তি, আর্থিক দৈন্য, নিজস্ব সংস্কৃতিচর্চার অভাবসহ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছে। পাহাড়ে অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন ঘটে চলেছে। আদিবাসীদের শিক্ষাদীক্ষা ও সচেতনতার অভাবে জাতীয় পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে পিছিয়ে আছে। কিছু সম্প্রদায় শিক্ষিত হলেও এখনো অনেক আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ পিছিয়ে রয়েছে। ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস সমতলের মানুষের চেয়ে আলাদা হওয়ার কারণে আদিবাসী সমাজ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। এ ব্যাপারে পাঠ্যপুস্তকে সঠিক ধারণার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধি করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মিডিয়াকে এগিয়ে আসতে হবে।
পাহাড়ের জুমচাষ থেকে শুরু করে কৃষি ও পর্যটনশিল্প এখন ধসের মুখে। ৫ আগস্টের পর এ অঞ্চলের মানুষ রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি জাতিগত উসকানিমূলক দাঙ্গার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ে উসকানিমূলক জাতিগত দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও সম্প্রতি মিডিয়ার নীরব এবং অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষামূলক ভূমিকার কারণে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ নিপীড়িত ও নিগৃহীত হয়েছে। সাধারণ মানুষ সব কিছু মিলিয়ে আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এখনো পর্যটনকেন্দ্র সবগুলো খুলে দেওয়া হয়নি।
সব কিছু মিলিয়ে পাহাড়ের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অবস্থানে ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা—সব কিছু মিলিয়ে এর থেকে উত্তরণের জন্য জনগণ ও সরকারের সমন্বিত প্রয়াস ও উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ঐশ্বর্যমণ্ডিত অপার সম্ভাবনার একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল। ভূমি অধিকার, জাতিগত উত্তেজনা, অনুন্নয়ন এবং পরিবেশগত অবক্ষয় সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার মাধ্যমে এ অঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভব। কার্যকর শাসন ও আদিবাসী অধিকার সংরক্ষণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের সম্ভাবনাকে উন্মোচিত করা সম্ভব।
এ অঞ্চলের মানুষ বিচ্ছিন্নতায় নয়, জাতীয় সম্পৃক্ততায় বিশ্বাস করে। শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নত অবকাঠামো, কমিউনিটি, ইনক্লুসিভ ট্যুরিজম এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পাবে।

শাসনব্যবস্থা
নিষ্কণ্টক স্বাধীন বিচারব্যবস্থা চাই
- ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আব্দুল্লাহ, শিক্ষক, আইনজীবী

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে প্রতিদিনের খবরের কাগজে বিচারব্যবস্থা সংস্কার অসংখ্য মানুষের আলোচনা-সমালোচনা ও আকাঙ্ক্ষার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাঙ্ক্ষিত এই সংস্কার কি শুধু প্রক্রিয়ার সংস্কারে অর্জন সম্ভব, নাকি আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিরও সংস্কার প্রয়োজন?
প্রথমে আমরা এটা মেনে নিই যে বিচারব্যবস্থায় আস্থাহীনতা এই অঞ্চলে নতুন কিছু নয়। অবিভক্ত ভারতবর্ষে আনুমানিক ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকেই বিচারব্যবস্থার সূচনা হলেও তৎকালীন বিচারব্যবস্থা গভীরভাবে সামাজিক শ্রেণি প্রথা দ্বারা প্রভাবিত ছিল এবং বিচারকার্য রাজতন্ত্রের সঙ্গে একীভূত ছিল। ন্যায়বিচারের আলোকবর্তিকার প্রভাব তখনো নিষ্কণ্টকভাবে সমাজে প্রতিফলিত হয়নি।
সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের সংকীর্ণ মনোভাব অনেকাংশে আমাদের জাতীয় বিচারব্যবস্থায় ফাটল ধরিয়েছে। এই ফাটল নিরাময়ে নতুন বছরে যেমন সুদৃঢ় বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিতে হবে, তেমনি সমান্তরালে সামাজিক ন্যায়বিচারও সুপ্রতিষ্ঠা করার নব উদ্যোগ নিতে হবে।
সহজ কথায়, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মূল স্লোগান হলো বৈষম্য দূরীকরণ—তা সে যেভাবেই হোক।
এটি এখন স্পষ্ট যে আমাদের জাতিগত দীর্ঘমেয়াদি উন্নতিতে সামাজিক ন্যায়বিচারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল্যবোধ বাদ দিয়ে টেকসই বিচারব্যবস্থা প্রণয়ন অবাস্তব।
বিচারব্যবস্থা বলতে শুধু আদালত পরিচালনার প্রক্রিয়াকে বোঝায় না, বিচারব্যবস্থা একটা মাইন্ডসেট। বিচারব্যবস্থাকে দৃঢ় করতে হলে সবাইকে বিচারব্যবস্থাকে সম্মান করার ও স্বাধীন করার মাইন্ডসেট তৈরি করতে হবে, প্রয়োজন হবে জনগণ ও বিচারব্যবস্থার কোয়ালিশন।
তৃতীয়ত, ব্রিটিশ আমল থেকে বয়ে চলা শাসন বিভাগের কর্তৃত্ব বিচার বিভাগ থেকে সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে নিতে হবে। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভা থেকে পৃথক ও স্বাধীন করা এখন সবচেয়ে জরুরি। কেননা শাসকের আইন নয়, বরং আইনের শাসন নিশ্চিত করাই বিচার বিভাগের সর্বপ্রথম দায়িত্ব। ভারতবর্ষে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক্করণের সর্বপ্রথম ধারণা দেন লর্ড কর্নওয়ালিস, ১৭৯৩ সালে। প্রস্তাব করেন নির্বাহী ও বিচার বিভাগকে আলাদা করার, যা ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে অনুমোদিত হয়নি। বাংলাদেশে ১৯৯৯ সালে বিখ্যাত ‘মাসদার হোসেন মামলা’ বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন করার এক যুগান্তকারী মাইলফলক রায় নিয়ে এসেছিল। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথকও করা হয়েছিল ২০০৭ সালে। তবে কার্যত বাস্তবতা ভিন্ন; সেই মামলার বাদী সাবেক জেলা জজ মাসদার হোসেন কিছুদিন আগেও এক পত্রিকার সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘মাসদার হোসেন মামলার রায়ের বাস্তবায়ন হলে আমাকে এত কথা বলতে হতো না।’ তার মানে হচ্ছে, আমরা এখনো স্বাধীন বিচারব্যবস্থা বুঝে পাইনি। বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন একান্ত আবশ্যক। তবে একই সঙ্গে বিচারকদেরও জবাবদিহির নিয়মতান্ত্রিক জায়গায় আনতে হবে, যেন বিচারকরা স্বৈরতন্ত্র চর্চা করতে না পারেন।
বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে আইনজীবীদের গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের উচিত আইনজীবীদের মান ও ইথিক্স নিয়ন্ত্রণে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন করে আইনজীবীদের কাজের মানের ওপর প্রতিবছর প্রতিবেদন তৈরি করা, আইনজীবীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাহলে আইনজীবী, বিচারক ও বিচারপ্রার্থীর মধ্যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স নির্ণয় হবে।
গত ৩ অক্টোবর ২০২৪ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। আমি মনে করি, একটি প্রগতিশীল বিচারব্যবস্থার জন্য আমাদের একটি স্বাধীন ও স্থায়ী বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন দরকার, যারা সময়ে সময়ে বিচারব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার প্রস্তাব দেবে, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও অস্বচ্ছতা তুলে ধরবে, বিচারপ্রার্থীর সুবিধা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় লিগ্যাল এইড ও আইনজীবীদের পারফরম্যান্স তুলে ধরবে এবং বিচার বিভাগকেও জবাবদিহির আওতায় আনবে, যাতে দেশের জনগণ বিচারব্যবস্থার ওপর বলিষ্ঠ আস্থা আনতে পারে।
বিচারব্যবস্থা সংস্কার একটি বিস্তর বিষয়, তবে আমরা বিশ্বাস করি, জনসাধারণের বিচারিক প্রক্রিয়া সংস্কারের সঠিক মনোভাব তৈরি হলে এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হলে নির্ভরযোগ্য বিচার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে বিচারব্যবস্থাকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে হবে, যেন বিচারপ্রার্থীদের শেষ ভরসার জায়গা অন্তত আদালত প্রাঙ্গণ হয়। আমরা খুবই আশাবাদী, কেননা নতুন তরুণসমাজ আজকে সচেতন, শিক্ষিত এবং সাম্যবাদী অধিকার নিশ্চিতে উদ্যমী। তাই রাষ্ট্রের সব কার্যনির্বাহী ও নীতিনির্ধারকসহ সব স্তরের মানুষের কাছে একটি শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা বিনির্মাণে সবার সক্রিয় অংশগ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

খেলা
‘আমিত্ব’ থেকে মুক্তির সুযোগ
- সাইদুজ্জামান, ক্রীড়া সম্পাদক, কালের কণ্ঠ

শাসন বদলায়, ব্যবস্থাপত্র বদলায় না। দুই যুগেরও বেশি সময়ের পেশাদার সাংবাদিকতার নির্যাস এটুকু। দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর লেখার শুরুটা এমন মন খারাপ করা হবে ভাবিনি। কালের কণ্ঠের প্রথম কপি পাঠকের হাতে যাওয়ার আগের প্রস্তুতি পর্ব থেকে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।
খেলাধুলা বিনোদনের অংশ। এর দিগন্তজুড়ে আনন্দ আর উৎসব। প্রিয় দলের হারের বেদনাও অবশ্য আছে।
এই খেলোয়াড়ি মনোভাবটাই আমাদের তৈরি হয়নি। ম্যাচ জিতে উঠে আসা খেলোয়াড়কে সীমাহীন তেজোদ্দীপ্ত দেখায়।
পর পাকিস্তানকে কি বাংলাদেশ বলেকয়ে হারাবে? নাকি ভারত অজেয়? কোনোটিই চূড়ান্ত নয়, ভারতের বিপক্ষেও জিতেছে বাংলাদেশ। ভারত কেন, নির্দিষ্ট দিনে যেকোনো দলকেই হারাতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
এটা বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বেলায়ও প্রযোজ্য। ট্রফি জেতা দল পরের ম্যাচেই হারতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কিংবা ওপরের সারির দলের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য আছে। চ্যাম্পিয়নরা বেশির ভাগ সময় হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে। আর বাংলাদেশের বেলায় অপেক্ষায় থাকতে হয় সেই বিশেষ দিনটির জন্য। মোদ্দাকথা, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখনো শীর্ষ সারির দল হয়ে উঠতে পারেনি। এই না পারার পেছনে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের স্টেকহোল্ডারদের কমবেশি দায় আছে।
ক্রিকেটকেই উদাহরণ ধরছি। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে ২০১৯ সালের আসর পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বর্ণসময় বলা যায়। যদিও ওই চার বছরে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আর কিছু দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ছাড়া কিছু জেতেনি বাংলাদেশ। তবে একটা বিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, বুঝি উন্নতির সিঁড়ি খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ। আদতে সে রকম কিছু ঘটেনি কারণ, মিরপুরের প্রতিটি জয়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস করেছে সবাই। কেউ এটা ভাবেনি যে এমন উইকেট বিশ্বের আর কোথাও মিলবে না। শীর্ষে পৌঁছতে হলে বিশ্বের সব প্রান্তে খেলার প্রস্তুতি নিতে হয়। সেসব হয়নি। বরং মিরপুরের সহায়ক উইকেটে পাওয়া জয়ে উটপাখির মতো মুখ গুঁজে ছিল সবাই। ফল যা হওয়ার তা-ই, অনভ্যস্ত কন্ডিশনে হঠাৎ বৃষ্টিতে চড়া মেকআপে মাখামাখি অবস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেটের! এমন পরিস্থিতিতেও তৎকালীন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান কোষাগারে হাজার কোটি টাকা আমানত থাকা নিয়ে যে বাগাড়ম্বর করতেন, তা সহ্য করা কঠিন ছিল।
ক্রিকেটের কথা বেশি বলছি কারণ, দেশের এই একটি ফেডারেশনেই খেলার মানোন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থকড়ি ছিল এবং আছে। দ্বিতীয় ধনী ফেডারেশন ফুটবল। তবে ক্রিকেটের সঙ্গে ব্যবধান বিস্তর। ফিফা, এএফসি কিংবা বিভিন্ন টুর্নামেন্ট থেকে পৃষ্ঠপোষকতা বাবদ যে অর্থাগম ঘটে, তা দিয়ে সাফ অঞ্চলের সীমানা ডিঙানো স্রেফ অসম্ভব। বাকি ফেডারেশনগুলোর অর্থব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা না করাই তাদের জন্য অপেক্ষাকৃত সম্মানজনক!
সবচেয়ে মজার ব্যাপার, নিদারুণ অর্থকষ্টে ভোগা সেইসব ফেডারেশনের চেয়ারে বসতে আগ্রহীর সংখ্যা কখনো কমেনি। অসীম আগ্রহ সত্ত্বেও ফেডারেশনে অর্থাগম ঘটাতে পারেননি তাঁরা। তবে ফেডারেশনের পদ ব্যবহার করে রাজনীতি কিংবা ব্যবসার মাঠে জয়ী হয়েছেন। মাঝখান থেকে হারিয়ে গেছেন সত্যিকারের সংগঠকরা, যাঁরা স্রেফ ভালোবাসার সুতায় বাঁধা পড়েছিলেন খেলার মাঠে। তাঁরা হারিয়ে গেছেন, সঙ্গে নিয়ে গেছেন খেলার মাঠের নিখাদ আনন্দ। হার-জিত ঘিরে তাই উগ্রতার ব্যারোমিটার ঊর্ধ্বমুখী।
এই সমস্যার সমাধান কী? চট করে উত্তর দেওয়া কঠিন। তবে এটুকু বুঝি, ক্রীড়াঙ্গনে মানসিকতার সংস্কার অতি জরুরি।
এই সংস্কারের শুরুটা হতে হবে শীর্ষ থেকে। জুলাই-আগস্ট উত্তাল আন্দোলনের আগে ‘আমিত্ব’ গ্রাস করেছিল পুরো দেশকে। ক্রীড়াঙ্গন থেকে এই আমিত্বকে প্রথমে বিসর্জন দিতে হবে। বাংলাদেশ জিতলেই প্রেসিডেন্ট বক্সে বসে বিশেষ কারোর আত্মতুষ্টির হাসি দেখানো বন্ধ করতে হবে। আপনার এই হাসির চেয়ে পূর্ব গ্যালারির রোদে পোড়া দর্শকের উচ্ছ্বাস অনেক বেশি অর্থবহ। আপনার কোষাগারে কোটি টাকা লুটোপুটি খায় রোদে পুড়ে খেলা দেখা দর্শকের কল্যাণেই। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নবনির্বাচিত সভাপতি তাবিথ আউয়াল এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর অদ্যাবধি তীব্র প্রচারমুখী মনে হয়নি তাঁকে। সযতনে তিনি এড়িয়ে চলেন সংবাদমাধ্যমকে। একজন মুখপাত্রকে দায়িত্ব দিয়েছেন, যিনি নিয়ম করে বাফুফের হাল-হকিকত জানান মিডিয়াকে। অবশ্য বাংলাদেশের জল-হাওয়ায় এই ধারা তিনি কত দিন ধরে রাখতে পারেন, সেটি সময়ই বলবে।
পরিবর্তন এসেছে ক্রিকেট বোর্ডেও। এই প্রথমবার জাতীয় দলের সাবেক কোনো অধিনায়ক বিসিবির শীর্ষাসনে বসেছেন। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বিধি-নিষেধের কারণে পূর্বতন বোর্ড ভেঙে দিতে পারেননি ফারুক আহমেদ। তবে পরিচালনা পর্ষদের সভায় টানা অনুপস্থিত থাকায় গঠনতন্ত্র মেনে অনেককে বাদ দিয়েছেন তিনি। আগের বোর্ডের যাঁরা এখনো আছেন, তাঁরা খুব স্বস্তিতে নেই বলেই খবর। মোটামুটি ‘ওয়ান ম্যান শো’ ফারুক আহমেদের বর্তমান বোর্ড। সেই একমেবাদ্বিতীয়ম স্বয়ং বোর্ড সভাপতি। একা হাতে একের পর এক পৃষ্ঠপোষক এনেছেন ফারুক, যা প্রশংসনীয়। তবে চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতার অগ্নিপরীক্ষা নিয়ে নেবে বলে মনে হচ্ছে।
বিপিএলের ‘গা গরম’ করা থেকেই সেই পরীক্ষা শুরু ফারুকের। জমকালো আসরের প্রতিশ্রুতি দিতে যে কনসার্টের আয়োজন করেছেন, তা নিয়ে গম্ভীর আলোচনা হচ্ছে। এক ঢাকার আয়োজনের পেছনেই খরচ হয়েছে ছয় কোটি টাকারও বেশি। আমজনতা এরই মধ্যে অঙ্ক করে বলছে, যে টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দলের অর্থ পুরস্কার দুই কোটি, সেই টুর্নামেন্টের পদধ্বনি শোনাতে এত ব্যয় কেন?
অবশ্য এবারের বিপিএল আদৌ লাভজনক হয় কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। এবারের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, এমনকি পুরনো বকেয়া টুর্নামেন্ট শুরুর আগেও বুঝে পায়নি বিসিবি। বরং দুশ্চিন্তা আছে ভবিষ্যতে সেই বকেয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে। কারণ বেশ কটি ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ঠিকঠাক বুঝিয়ে দেয় না। নিয়মানুযায়ী সেটি বুঝিয়ে দিতে হয় বিসিবিকে। এবারের বিপিএল পূর্বাভাস বলছে, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক পরিশোধ নিশ্চিত করতে স্থায়ী আমানতের অংশবিশেষ ভাঙাতে হবে বিসিবিকে।
এই ব্যাপারগুলো আমিত্বের পথে প্রারম্ভিক যাত্রা। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে ধুঁকে ধুঁকে এখন অন্তত এটুকু ‘অ্যান্টিসিপেট’ করতে শিখেছি। এসবের পরিবর্তন না হলে সংস্কারের যাবতীয় চেষ্টা বৃথা যাবে।
এখন প্রশ্ন একটাই—রক্ত দিয়ে পাওয়া সংস্কারের এই সুযোগ কি আমরা হেলায় হারাব?