<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভিন্ন সময় সংবিধান পরিবর্তন করে ব্যক্তির হাতে অবাধ ক্ষমতা দেওয়ার ফলে রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) উপদেষ্টা ড. আলী রীয়াজ। সংবিধান পুনর্লিখন ছাড়া ক্ষমতার এই এককেন্দ্রিককরণ বন্ধ করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ : সংবিধান প্রসঙ্গ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শীর্ষক আলোচনাসভায় ড. আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে আলোচনাসভাটির আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। সংলাপে অংশ নেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হাসান আরিফ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, চাকমা সার্কেলের প্রধান ও আইনজীবী রাজা দেবাশীষ রায় প্রমুখ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলোচনাসভায় ড. আলী রীয়াজ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধান এমনভাবে পরিবর্তিত করা হয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে দলীয়, রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি রাষ্ট্রপতি নিয়োগের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে ছিল। ক্ষমতার অপব্যবহারের এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে? তাই সংবিধান সংস্কার নয়, পুনর্লিখন প্রয়োজন; যাতে নতুনভাবে কোনো দল ক্ষমতায় এসে নিজেদের মতো সংবিধান পরিবর্তন করতে না পারে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধান সংশোধন নাকি নতুন করে পুনর্লিখন প্রয়োজন, তা বিতর্কের বিষয় মন্তব্য করে ড. আলী রীয়াজ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকার পরও এর সমাধান হতে পারে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে। সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে সংখ্যাগুরুর অত্যাচার বন্ধের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। সংবিধান প্রণয়নে অংশগ্রহণ করার জন্য সরকারের দায়িত্ব সব স্তরের জনগণকে পথ তৈরি করে দেওয়া।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংবিধানের পরিবর্তন করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে। সংবিধান জীবিত ডকুমেন্ট, তাকে নিয়ে কাজ করা সম্ভব। গোঁজামিল দিয়ে সংবিধানকে সংশোধন করা হয়েছে বারবার, তা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। সব ধরনের মতামতকে সঙ্গে নিয়েই গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের দিকে এগিয়ে যাবে দেশ। সরকার সিদ্ধান্ত দেবে না, সিদ্ধান্ত দেবে ছাত্র-জনতা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতীতে সংবিধান সংশোধনের নামে প্রতিটি সরকার দলীয়করণ করেছে মন্তব্য করে নুরুল কবির বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটা দেশের সংবিধান সেই দেশের রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত। অথচ সংবিধানে মৌলিক অধিকার, সমতার কথা আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়নের কথা নেই। সব ক্ষমতা একজনের হাতে থাকলে স্বৈরাচার তৈরি হবেই। প্রত্যক্ষ প্রতিবিম্ব থাকা প্রয়োজন সংসদীয় আলোচনায়। নানা রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে পিছিয়ে পড়া মানুষের কথা তুলে আনতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা সসীম, জনগণের ক্ষমতা অসীম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধান পুনর্লিখন বা সংশোধনের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে উল্লেখ করে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধানের যে এক-তৃতীয়াংশ সংশোধনযোগ্য নয়, তা কিন্তু সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নয়। মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন না করেই সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব। পঞ্চদশ সংশোধনী স্থগিত করে সংবিধানকে পুনরায় সংশোধন করা সম্ভব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান সংবিধান ১৯৭১ সালের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। যে আইন ছিল শাসক শ্রেণির শোষণের জন্য, সেই আইন এখনো কিভাবে বিদ্যমান থাকে? আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনকে যদি কিনে ফেলা যায়, তাহলে গণতন্ত্র কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধান পুনর্লিখনের ভিত্তিটা কী? যে আন্দোলন হয়েছে তা ছিল প্রথমত কোটাবিরোধী আন্দোলন, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন নয়। পরিবর্তন সবাই চায়, পরিবর্তন হওয়া উচিত। শ্রেণিবৈষম্য, অর্থনৈতিকবৈষম্য দূর করতে হবে, গণতন্ত্রের ফল আস্বাদন করতে হলে। বেআইনি কাজকর্মকে আইনি করা হয়েছে আদালতের মাধ্যমে, আইন প্রণয়ন হয় সচিবালয়ে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p>