<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৯ দফা দাবির মধ্যে একটি দফা ছিল লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে ছাত্ররাজনীতি সংস্কার করা প্রয়োজন। তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে যে ভীতি রয়েছে তা কেটে যাবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার দিনব্যাপী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে এক বৈঠকে ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা। এতে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), ছাত্র ফেডারেশন (গণসংহতি), গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা অংশ নেন। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ১টা এবং দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুই দফায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈঠকে ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ সময় তাঁরা দ্রুত ছাত্রসংসদ নির্বাচন চালু করাসহ ফ্যাসিবাদের দোসর ঢাবির সিন্ডিকেট সভার বর্তমান সদস্যদের বহিষ্কার করাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। বৈঠকে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তা সঠিক নয় বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাদের জানান বলে উল্লেখ করেন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের বিষয়ে প্রাথমিক কিছু প্রস্তাব দিয়েছে ঢাবি ছাত্রদল। এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের জন্য প্রয়োজন দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্রসংসদ নির্বাচন চালু করা। হলগুলোতে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই অবস্থান করবেন। কোনো রকম গেস্টরুম, গণরুম, র‌্যাগিং সংস্কৃতি যাতে না থাকে তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত হল নির্মাণ করতে হবে। বিগত ফ্যাসিবাদের আমলে যে ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার তদন্তপূর্বক শাস্তি নিশ্চিত করতে একটি কমিশন গঠন করতে হবে। দ্রুত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দিয়ে গঠিত সিন্ডিকেট ও সিনেট ভেঙে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দাসত্বের ছাত্ররাজনীতি নয়, বরং মেধার ছাত্ররাজনীতি চাই বলে ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেখানে শিক্ষার্থীদের অধিকারের কথাগুলো থাকবে, সবাই মত প্রকাশের স্বাধীনতা পাবে এবং প্রত্যেকেই নিজেদের অধিকার ফিরে পাবে। কাউকে তার মতের জন্য নির্যাতন নিষ্পেষণ করা হবে না। কারো রাজনৈতিক আদর্শ কারো ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ছাত্ররাজনীতি সংস্কারের জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ছাত্র প্রতিনিধি, ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে একটি পলিসি ডায়ালগের আহবান জানান তিনি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংস্কারের জন্য শক্তিশালী নীতিমালা তৈরির কথা বলে ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কিছু বিধি-নিষেধ সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের সংগঠন করার স্বাধীনতা আছে। বিধি-নিষেধ না মানলে নির্দিষ্ট সংগঠন নিষিদ্ধ হতে পারে, কিন্তু সংগঠিত হওয়ার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার তো বিতর্কের ঊর্ধ্বে। প্রশ্ন উঠতে পারে, হল দখল, সন্ত্রাস, গেস্টরুম, গণরুম ইত্যাদি প্রসঙ্গে। সে ক্ষেত্রে হলে সন্ত্রাসের রাজনীতি ঠেকাতে সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে শক্তিশালী নীতিমালা তৈরি করা এবং প্রশাসনকে দায়বদ্ধ করা প্রশাসনের দায়িত্ব। এ ছাড়া ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে নব্বইয়ে গঠিত পরিবেশ পরিষদ কার্যকর করা এবং সেই চুক্তি বিষয়ে প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট করার আহবান জানানো হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্কসবাদী) সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ না করে ছাত্ররাজনীতি সংস্কার করার কথা বলেছি আমরা। সংস্কারের জন্য দ্রুত হল সংসদ ও ডাকসু নিয়মিত চালু করতে হবে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ও হলে হলে দখলদারির রাজনীতি চলবে না। হল প্রশাসনের কাছে হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসার কথা বলেছি। তাহলে দখলদারির মাধ্যমে যে ছাত্ররাজনীতি করা হতো সেটি করা যাবে না এবং ছাত্ররাজনীতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেই ভয় সেটি দূর হয়ে যাবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি না সে বিষয়ে আমাদের একটি অফিশিয়াল বক্তব্য পরবর্তী সময়ে আসবে। ডাকসুর বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল। তবে আমাদের প্রধান চিন্তা এখন দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা; শ্রেণি কার্যক্রম চালু করা। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই সবাইকে ডেকে আলোচনা করা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>