<p>অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। বিবৃতিতে একজন উপদেষ্টার ‘সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা মনে করে না’ বলে দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়েছে।</p> <p>বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় দিবস নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত ও একজন উপদেষ্টার বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টার ‘রিসেট বাটন পুশ করায় অতীত মুছে গেছে’ সংবলিত বিতর্কিত বক্তব্যকেই সত্য বলে প্রমাণ করল। কারণ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল ঘটনাই নয়, ভাষণটি ইউনেসকোর স্বীকৃত বিশ্বঐতিহ্যের স্মারক ও অংশ। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার ঘটনা শুধু বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি কালো অধ্যায় নয়, আধুনিক বিশ্বরাজনীতির ইতিহাসেও একটি কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত। আর স্বাধীনতা অর্জনের স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন করে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধান কার্যকর করার ঘটনাও বিশ্বের স্বাধীন দেশগুলোর সংবিধান রচনা ও কার্যকর করার ইতিহাসে অনন্য গৌরবোজ্জ্বল ঘটনা।</p> <p>বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির পিতা হিসেবে স্বাধীনতাসংগ্রামের মধ্যেই সমগ্র জনগণ ও জাতির দ্বারা স্বীকৃত হয়েছেন এবং সমগ্র বিশ্ব বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি ও প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিয়েছে। এ অবস্থায় মহান স্বাধীনতাসংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ এ দেশের জনগণের ঐতিহাসিক গণ-আন্দোলনের অর্জিত ও মীমাংসিত বিষয়গুলো অমীমাংসিত করতে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বক্তব্য না দেওয়া এবং এসব বিষয়ে বিতর্কে না জড়াতে সতর্ক থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।</p> <p>যুব ইউনিয়ন : বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু এক যৌথ বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের ৭ মার্চ ও ৪ নভেম্বরের সংবিধান দিবস এবং জাতীয় শোক দিবস বাতিল ঘোষণার সিদ্ধান্তে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ নানা সংকট মোকাবেলার বদলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রিসেট করাকে তাদের দায়িত্ব বলে মনে করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করতে সহায়তা করবে। কারণ ৭ মার্চ ও ৪ নভেম্বর দিবস এবং জাতীয় শোক দিবস বাতিল করার অর্থ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার নামান্তর, যা বাংলাদেশের ছাত্র-যুবসমাজ কখনোই মেনে নেবে না। ঐতিহাসিক ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ দিবসকে জাতীয় যুব দিবস ঘোষণা করার দাবি জানান তাঁরা।</p>