<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এমন এক প্রবীণ পুরুষ রয়েছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স ১১৯ বছর। তিনি শ্রীমঙ্গল দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা মেকানীছড়ার বাসিন্দা রাম সিং গড়। গিনেস বুক অব রেকর্ড অনুযায়ী পৃথিবীর সবচেয়ে প্রবীণ পুরুষের বয়স ১১১ বছর। তিনি ইংল্যান্ডের নাগরিক জন আলফ্রেড টিনিসউড। ২০২৪ সালে ৫ ফেরুয়ারি যাবতীয় রেকর্ড নথিবদ্ধকারী সংস্থা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তাঁকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু সব কিছু ঠিক থাকলে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রবীণ পুরুষ হিসেবে রেকর্ডের জন্য গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের কথা জানায় প্রশাসন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ-ত্রিপুরা সীমান্তে গ্রাম মেকানীছড়া। পাহাড়ি ওই গ্রামে বাস করেন রাম সিং গড়। দেখা হয় তাঁর সঙ্গে। চা-বাগানের তৈরি পাকা ঘরে সন্তান ও নাতিপুতির সঙ্গে বসবাস করেন তিনি। বয়সের ভারে দুর্বল হলেও অন্যের সাহায্য ছাড়াই চলাফেরা করতে পারেন তিনি। বাড়িতে টুকটাক কাজও করেন। চশমা ছাড়া পড়তে পারেন লেখা।   </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর জন্ম ৬ আগস্ট ১৯০৫ সালে। তবে তিনি দাবি করেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া জন্ম সালের চেয়ে বেশি বয়স হতে পারে তাঁর। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাম সিং গড় জানান, দু শ বছর আগে দাদা শাম্মি গড়, নানা হালকু গড়ের সঙ্গে তাঁর বাবা বুগুরাম গড় ভারতে মধ্যপ্রদেশের জবলপুর থেকে চা শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশে আসেন। এখানে আসার পর তাঁর বাবা বিয়ে করেন। তাঁদের হাত ধরে শুরু হয় এ দেশে চা চাষ। তাঁর দাদা ও বাবার হাতে শ্রীমঙ্গলের পুটিয়াছড়া চা-বাগান সৃজন হয়। এবং তিনি নিজ হাতে জঙ্গল কেটে সৃজন করেন হরিণছড়া চা-বাগান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কয়েক বছর পর বিয়ে করেন তিনি। প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক মেয়ে সন্তান ছিল। কয়েক বছর আগে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তিনি। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। সেই স্ত্রীর ঘরে পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে ৮০ বছর বয়সে মারা যান কয়েক বছর আগে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো জানান, যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হয় ১৯১৪-১৮ খ্রিস্টাব্দে। তিনি তখন চা-বাগানের চৌকিদার। ইংরেজ সাহেবদের কাছে এই যুদ্ধের কথা শুনেন। আকাশে প্লেনের উড়াউড়ি দেখেন। আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দেশভাগ সব ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে তাঁর। ইংরেজ সাহেবদের সঙ্গে তাঁর অনেক স্মৃতি রয়েছে। তাদের সঙ্গে অনেক বিষয় নিয়ে গালগল্প হতো। সেগুলো স্পষ্ট মনে আছে। তিনি শ্রীমঙ্গলের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তখন ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একপাশে পাকা ঘর, লোহার পিলার ছিল, আর একপাশে ছিল ছনের ঘর। তখন তিনি মৌলভীবাজার সড়কের কোনো এক হিন্দু পরিবারে থেকে পড়ালেখা করতেন। এ সময় শ্রীমঙ্গলে কোনো পাকা সড়ক ছিল না।</span></span></p>