<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বিবেচনায় ফুসফুস ক্যান্সারের অবস্থান প্রথম সারিতে। আবার ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর প্রধানতম কারণও এই ফুসফুস ক্যান্সার। অথচ গত শতাব্দীর শুরুর দিকে ফুসফুস ক্যান্সার ছিল একটি বিরলতম রোগ। পরে সিগারেটের সহজলভ্যতা ও জনপ্রিয়তার কারণে এবং পরিবেশদূষণ ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুসফুস ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারণ</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধানতম কারণ ধূমপান। যারা ধূমপায়ীর কাছাকাছি থেকে পরোক্ষভাবে ধূমপান করেন তারাও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। অনেকের ধারণা, ভেইপ বা ই-সিগারেট নিরাপদ। তবে গবেষণা বলছে, এগুলোর মধ্যেও ফরমালডিহাইড ও অ্যাক্রোলিনের মতো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক উপাদান রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া খনি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ঢালাই শ্রমিক, জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রমিকসহ বায়ুদূষণ হয় এমন পরিবেশে যারা দীর্ঘক্ষণ থাকেন তাদেরও ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লক্ষণ</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দীর্ঘমেয়াদি কাশি যা চিকিৎসায় ভালো হচ্ছে না, কাশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া, বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টকে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। এর পাশাপাশি সব ক্যান্সারের মতো এই ক্যান্সারেও রক্তস্বল্পতা, ওজন হ্রাস ও অরুচির মতো উপসর্গ থাকে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রোগটি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়লে মাথা ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, খিঁচুনি ও রোগী অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে পারে। ক্যান্সার কোষ হাড়ে বাসা বাঁধলে রোগী প্রচণ্ড ব্যথার কথা বলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে হাড় ভেঙেও যেতে পারে। রোগটি যকৃতে (লিভার) ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুধামান্দ্য, বমিভাব, পেট ব্যথা এবং ত্বক ও চোখ হলুদাভ (জন্ডিস) হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রোগ নির্ণয়</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই উপসর্গগুলো নিয়ে কোনো রোগী এলে শুরুতেই বুকের একটি এক্স-রে করা হয়। সেখানে টিউমারের উপস্থিতি থাকলে সিটি স্ক্যান করে সেটির আকার, অবস্থান ও বিস্তার সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা নেওয়া হয়। পরে একটি সুই দিয়ে টিউমার থেকে অল্প মাংস এনে মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে বায়োপসি এবং হিস্টোপ্যাথলজি বলে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইমিউনোহিস্টোকেমিস্ট্রি নামক পরীক্ষাও করা হয়। এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে ফুসফুস ক্যান্সার আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায় এবং একই সঙ্গে এটি কী ধরনের ফুসফুস ক্যান্সার সেটাও জানা যায়। একেক ধরনের ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য চিকিৎসা পদ্ধতি একেক রকম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্যান্সারটি কোন স্টেজ বা পর্যায়ে আছে তা জানার জন্য পেট-সিটি স্ক্যান, মস্তিষ্কের এমআরআই করা হয়। আমাদের দেশে পেট-সিটি স্ক্যানের জন্য দেরি হলে সিটি স্ক্যানের মাধ্যমেই স্টেজ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করে থাকেন চিকিৎসকরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া চিকিৎসা শুরুর আগে কিডনি, লিভার, হার্ট, লাং (ফুসফুস) ভালো আছে কি না তা রক্ত পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া হয়।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিকিৎসা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফুসফুস ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোকে মোটা দাগে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">► </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সার্জারি </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">► </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রেডিওথেরাপি </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">► </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেমোথেরাপি </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">► </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টার্গেটেড থেরাপি ও ইমিউনোথেরাপি </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">► </span><span style="font-family:SolaimanLipi">প্যালিয়েটিভ কেয়ার</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্যান্সারটি কোন স্টেজে আছে এবং চিকিৎসা গ্রহণে রোগীর শারীরিক সক্ষমতা কেমন তার ওপর ভিত্তি করে কী কী চিকিৎসা লাগবে এবং তার ক্রম কেমন হবে তা নির্ধারণ করা হয়। বেশির ভাগ রোগীকে একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়। তবে ইতিবাচক দিক হলো, ফুসফুস ক্যান্সার নির্ণয় এবং এর সব চিকিৎসা পদ্ধতি বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বিদ্যমান এবং সহজলভ্য।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফুসফুস ক্যান্সারের চিকিৎসা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর ক্যান্সার আবার ফিরে আসতে পারে, তাই রোগীকে নিয়মমাফিক ফলো আপে থাকতে হয়, যেন ক্যান্সার ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তা শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করা যায়। ফুসফুস ক্যান্সারের প্রকোপ কমাতে ধূমপান ও পরিবেশদূষণের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নিজে সচেতন হোন, অন্যকে সচেতন করুন। সবাই মিলে সুস্থ থাকুন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : কনসালট্যান্ট, ক্যান্সার বিভাগ</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল</span></span></span></span></p>