ঢাকা, রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫
২৩ চৈত্র ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৫
২৩ চৈত্র ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৬

মুডি’স ঋণমানে অবনমন, প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের

ইউএনবি
ইউএনবি
শেয়ার
মুডি’স ঋণমানে অবনমন, প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের সার্বভৌম ঋণমানের এক ধাপ অবনমন দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা মুডি’স। মার্কিন এই এজেন্সির রেটিং প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অর্জিত উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতিফলন হয়নি। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত সোমবার বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং ‘বি১’ থেকে ‘বি২’-তে নামিয়ে এনেছে মুডি’স।

একইসঙ্গে স্বল্পমেয়াদে ইস্যুয়ার রেটিং ‘নট প্রাইম’ হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে।

অবনমনের কারণ হিসেবে রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছে রেটিং এজেন্সিটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এ বছরের শুরুতে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক রূপান্তরের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শুরু করা মূল সংস্কার ও উন্নতিকে উপেক্ষা করা হয়েছে এই মূল্যায়নে।

এতে বলা হয়, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের আগস্টে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে।

নতুন সরকার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, দুর্নীতি রোধ এবং সুশাসন শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে ব্যাপক সংস্কার শুরু করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমান প্রশাসনের অধীনে বেশ কয়েকটি মূল পদক্ষেপ এবং অর্জনের রূপরেখা দিয়েছে। এটি ইতিবাচক অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রদর্শন করে। সেগুলো হলো-

১. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শাসন ব্যবস্থার সংস্কার : রাজনৈতিক দল ও প্রধান অংশীজনদের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনপ্রশাসন, আর্থিক খাত এবং দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার মতো ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার সাধন করেছে।

২. ব্যাংকিং খাত সংস্কার : বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন এবং তারল্য ও কর্মক্ষমতা উন্নয়নে দৈনিক তদারকির কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিসহ ব্যাংকিং খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করেছে। এই সিদ্ধান্তে ইতোমধ্যেই এই ব্যাংকগুলোতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার লক্ষণ দেখা গেছে।

৩. সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা : সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা, বৈদেশিক রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং মূল্যস্ফীতির চাপ। তবে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে বৈদেশিক খাতের সূচকগুলো স্থিতিশীল হয়েছে।

শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধির কারণে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১২০ টাকায় স্থির রয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে স্থিতিশীল হয়েছে এবং বাহ্যিক অ্যাকাউন্টের ভারসাম্যহীনতায় উন্নতি হয়েছে।

৪. মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ : মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক চাহিদা ও সরবরাহ-পার্শ্ব নীতির সমন্বয় বাস্তবায়ন করেছে। চাহিদার দিক থেকে, নীতি হার সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোসহ আর্থিক কঠোর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সরবরাহের দিক থেকে, প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর কর কমানো হয়েছে এবং বিশেষত কৃষিতে সরবরাহ চেইনের বিঘ্ন মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বন্যার কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ থাকলেও গত তিন মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির উন্নতি হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এও বলেছে, মুডি’স চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বৃহত্তর চিত্র উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। রেটিং এজেন্সির মূল্যায়ন একটি ‘পশ্চাদমুখী দৃষ্টিভঙ্গি’ এবং নতুন সরকারের অধীনে ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো পুরোপুরি বিবেচনা করেনি।

বাংলাদেশের সংস্কার ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আরো পুঙ্খানুপুঙ্খ ও সরেজমিন পর্যালোচনা করার জন্য সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘মূল্যায়ন করার সময় মুডি’স দুরদৃষ্টি দেয়নি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্বাস করে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমর্থন এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব উভয়ের সমর্থনে অব্যাহত সংস্কারের মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরো বিস্তৃত মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছে। যার মধ্যে মূল অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ এবং প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ জড়িত। বাংলাদেশ ব্যাংক দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছে, কেবল এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমেই মুডি'স বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি সুষ্ঠু ও সঠিক মূল্যায়ন দিতে পারে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ

দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) এপ্রিল মাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

রবিবার (৬ এপ্রিল) ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ৪৫০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিইআরসি চেয়ারম্যান জানায়, এপ্রিল মাসের জন্য ১২ কেজি এলপিজির দাম ১ হাজার ৪৫০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

এর আগে, গত ৩ মার্চ সেই মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৮ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৪৭৮ টাকা।

আর জানুয়ারি মাসের শুরুতে সেই মাসের জন্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল এলপিজির দাম। তবে গত ১৪ জানুয়ারি এই মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৫৯ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়।

এদিকে, রোববার এপ্রিল মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে ২ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬৬ টাকা ৪১ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, এপ্রিল মাসের জন্য সৌদি আরামকোর প্রোপেন এবং বিউটেনের ঘোষিত সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন যথাক্রমে ৬১৫ মার্কিন ডলার ও ৬০৫ মার্কিন ডলার এবং প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫ অনুযায়ী প্রোপেন ও বিউটেনের গড় সৌদি সিপি প্রতি মেট্রিক টন ৬০৮.৫০ মার্কিন ডলার বিবেচনায় এপ্রিল মাসের জন্য বেসরকারি এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সমন্বয় করা হলো।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কারোপের প্রভাব কেমন হবে, জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কারোপের প্রভাব কেমন হবে, জানালেন অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছে, সেটি সামলে নেওয়া খুব বেশি কঠিন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই শুল্কনীতিতে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না।

আজ রবিবার সচিবালয়ে ঈদ পরবর্তী প্রথম কার্যদিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে এবং যেকোনো বৈশ্বিক চাপে সরকার তা টিকে থাকতে সক্ষম হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের রপ্তানি বাজার বহুমুখী, সেই সঙ্গে উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে আছি।

ঈদ উপলক্ষে দেশে প্রবাসআয় বেড়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এবার মানুষ ভালোভাবে ঈদ কাটিয়েছে। মার্চ মাসে ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এতে রিজার্ভও বেড়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আজ থেকে ব্যাংক লেনদেন ১০-৪টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজ থেকে ব্যাংক লেনদেন ১০-৪টা

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের অফিস আজ রবিবার খুলছে। আজ থেকে ব্যাংকের অফিস ও লেনদেনের সময়সূচি ফিরবে আগের অবস্থায়। ফলে ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকের ৪টা পর্যন্ত। তবে অফিস সূচি থাকবে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

বাকি সময় লেনদেন পরবর্তী ব্যাংকের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনা হবে।

রমজানে ব্যাংকে লেনদেনের নতুন সময়সূচি নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। রোজার মাসে ব্যাংকে লেনদেন হয় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। রমজানে ব্যাংকের অফিস সূচি ছিল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এর মধ্যে বেলা ১টা ১৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জোহরের নামায়ের বিরতি ছিল। 
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
ব্লুমবার্গকে বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পথ খোঁজা হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পথ খোঁজা হচ্ছে
সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পথ খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা ঘাটতি কমানোর সুযোগগুলো সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছি।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের ৪০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি শিল্পে বড় ধরনের আঘাত আসতে পারে।

এই ধাক্কা সামলাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাচ্ছে বাংলাদেশ।

আরো পড়ুন

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্বামীর বিশেষ অঙ্গ কাটলেন স্ত্রী

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্বামীর বিশেষ অঙ্গ কাটলেন স্ত্রী

 

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশই তৈরি পোশাক। একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পোশাক ক্রেতা। ফলে এই শিল্পের ওপর আঘাত লাগলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।

গত বছর ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দেশ।

বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ধার্য হওয়া শুল্ক কমাতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমানোর উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ। ট্রাম্প প্রশাসন যে কয়েকটি দেশের ওপর সর্বোচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এই পদক্ষেপ বস্ত্র রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিতে পারে।

আরো পড়ুন

৪ বছরের শিশুর শ্লীলতাহানির চেষ্টা, অভিযুক্তকে গণধোলাই

৪ বছরের শিশুর শ্লীলতাহানির চেষ্টা, অভিযুক্তকে গণধোলাই

 

যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত নতুন শুল্ক পণ্যভিত্তিক মানদণ্ডের পরিবর্তে দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতির ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, এই পদ্ধতি বাংলাদেশের মতো বাণিজ্য উদ্বৃত্ত থাকা অনেক ছোট অর্থনীতির দেশের জন্য অন্যায্য।

শুল্কের প্রভাব মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশ সরকার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ মূল অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি বাড়ানো।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি বিজিএমইএ—এর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলার আমদানি বাড়াতে পারি, তবে আমেরিকান তুলার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

আরো পড়ুন

স্নান উৎসব ঘিরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার যানজট

স্নান উৎসব ঘিরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার যানজট

 

এর আগে, গত ১৭ মার্চ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান, কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির পরিকল্পনা করছে।

তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। বাংলাদেশ আগেই শুল্কের আওতায় রপ্তানি করলেও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঝুঁকি সব সময় থাকে। আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করি এবং সেই তুলা দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করি, তাহলে তারা আমাদের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হবে।’

গত ২৭ মার্চ দেশীয় সুতাশিল্পের সুরক্ষায় স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ওয়ালমার্ট এবং গ্যাপ ইনকর্পোরেটেডের মতো বড় মার্কিন খুচরা বিক্রেতারা প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক কেনে। আনোয়ার হোসেনের মতে, শুল্ক বৃদ্ধি তাদের ক্রয় কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ তথা বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির রপ্তানি দেড় শতাংশ কমে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

মুম্বাইয়ে ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অর্থনীতিবিদ অঙ্কুর শুক্লা মনে করেন, এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য আইএমএফ নির্ধারিত ঋণ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি লিখেছেন, ‘এটি এই দেশগুলোতে তহবিলের ঋণকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে—যা প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে।’

তবে বাংলাদেশের জন্য কিছুটা ইতিবাচক দিকও রয়েছে। পোশাক খাতে দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীলঙ্কা (৪৪ শতাংশ) এবং ভিয়েতনামের (৪৬ শতাংশ) তুলনায় বাংলাদেশের শুল্কের হার কম (৩৭ শতাংশ)। এ বিষয়ে অঙ্কুর শুক্লা বলেন, এটি ‘বাংলাদেশকে একটি তুলনামূলক সুবিধা দিতে পারে এবং কিছু বাজারের হিস্যা দখল করতে সাহায্য করতে পারে।’

কর্মকর্তারা বলছেন, পারস্পরিক বাণিজ্য আলোচনার অংশ হিসেবে শুল্ক সমন্বয়ের সুযোগ থাকতে পারে। 

তবে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বশির উদ্দিনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ‘মেঘ জমেছে’। তিনি আরো বলেন, ‘এটি আর দ্বিপক্ষীয় বিষয় নয়—এটি একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সুনামি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ