<p>শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের শেয়ারবাজারে একের পর এক উল্লম্ফন হচ্ছে। সরকার পতনের পর এরই মধ্যে শেয়ারবাজারে তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এই তিন কার্যদিবসেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৫৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে। আর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে প্রায় ৭০০ পয়েন্ট।</p> <p>শেয়ারবাজারে একের পর এক উল্লম্ফন হওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারবাজারে মূল্য সূচক ও বাজার মূলধনের বড় উত্থান হয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে হাসিনা সরকারের অধীনে লেনদেন হয়েছে এক কার্যদিবস। বাকি যে তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়, সে সময় দেশে কোনো সরকার ছিল না।</p> <p><img alt="বাজার মূলধনে যোগ হলো ৫৮ হাজার কোটি টাকা" height="542" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/07.July/30-07-2024/Rif/11-09-2024-p1-6.jpg" style="float:left" width="200" />ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। তার আগে ৪ আগস্ট শেয়ারবাজারে লেনদেন হয়। এটিই হাসিনা সরকারের আমলে শেয়ারবাজারের শেষ লেনদেন ছিল। ৪ আগস্ট ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ১০৪ পয়েন্ট। আর বাজার মূলধন কমে সাত হাজার ৯২৪ কোটি টাকা।</p> <p>আন্দোলন ঘিরে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠলে দেশে কারফিউ জারি করে তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তবে হাসিনা সরকারের পতন হলে ৬ আগস্ট থেকে আবার সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলে দেওয়া হয়। ফলে শেয়ারবাজারেও লেনদেন চালু হয়। এরপর লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হয়েছে।</p> <p>এই তিন কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৬৯৫ পয়েন্ট। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস দেশে ফেরার দিন বৃহস্পতিবারই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩০৬ পয়েন্ট। ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক হিসেবে যাত্রা শুরু করে ডিএসইএক্স। এরপর এক দিনে সূচকটির এত বড় উত্থান আর কখনো হয়নি। ডিএসইএক্স সূচক রেকর্ড লাফ দেওয়ার পাশাপাশি লেনদেন বেড়ে এক হাজার ৬০৬ কোটি টাকা হয়েছে। আর বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা।</p> <p>এতে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৩৩৯টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১১টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।</p> <p>বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ তিন হাজার ৯১৩ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৫০ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা বা ৭.৭৪ শতাংশ।</p> <p>এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৫৯০.৮৭ পয়েন্ট বা ১১.০৮ শতাংশ। প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বাছাই করা ভালো কম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ২৩১.৮৮ পয়েন্ট বা ১২.২০ শতাংশ। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ১০৯.৫৩ পয়েন্ট বা ৯.৪০ শতাংশ।</p> <p>মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৮৩৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৫৬ কোটি চার লাখ টাকা বা ৭৪.৩৪ শতাংশ।</p> <p> </p> <p> </p>