<p>গাজায় যুদ্ধ ও রক্তপাত বন্ধসহ সব ধরনের সংঘাতের বিস্তার প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। গতকাল মঙ্গলবার কাতারের শুরা কাউন্সিলের উদ্বোধনী বক্তব্যে জোরালোভাবে এ আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের জীবনের কোনো মূল্য নেই, শিশুদের জীবন যেন কারো কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ </p> <p>আল-থানি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি জনগণের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার একমাত্র উপায় হলো ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির বাস্তবায়ন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা, যা এখন পর্যন্ত এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক রেজল্যুশন অনুসারে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার সংরক্ষণ করে ন্যায়সংগত ও ব্যাপক শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই।’</p> <p>ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি প্রসঙ্গে কাতারের আমির বলেন, ‘আমরা বলব, যথেষ্ট হয়েছে। ইসরায়েলকে হত্যাযজ্ঞ চালানোর নিঃশর্ত সবুজ সংকেত দেওয়া উচিত নয়। চলমান অবরোধ, দখলদারি, বসতি স্থাপনের বাস্তবতা উপেক্ষা করা যায় না। ফিলিস্তিনি জনগণ থেকে পানি, ওষুধ ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করা পুরোপুরি অবৈধ। আমরা কারো দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করব না।’ </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের পেছনে থাকা সবাইকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, এরপর কী ঘটতে যাচ্ছে? যুদ্ধ কি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে? এরপর ফিলিস্তিনিরা কোথায় যাবে? যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়; বরং এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও হতাহতের সংখ্যা কেবল বাড়বে। এখন যা ঘটছে তা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে ধর্মীয় ও পার্থিব কোনো রীতি-নীতি ও মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হয়নি। ক্রমবর্ধমান এই সহিংসতা বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’</p> <p>উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন অভিযান পরিচালনা করে। এর পর থেকে গাজায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। সংঘর্ষের শুরুতেই দুই শতাধিক ইসরায়েলি নাগরিককে বন্দি করে হামাস। অতঃপর কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত সোমবার রাতে ইসরায়েলি দুই নারী বন্দিসহ চারজনকে আইসিআরসির প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, যার এক-তৃতীয়াংশ শিশু। অন্যদিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত দেড় হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তা ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকার অন্তত ৩৩টি মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস হয়।<br />  <br /> <em>সূত্র : আলজাজিরা </em></p>