বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ চার মাসের একটি হলো পবিত্র রজব মাস। ‘রজব’ শব্দের অর্থ হলো সম্মানিত। ইসলাম-পূর্ব জাহেলি যুগে আরবরা এ মাসকে খুবই সম্মানের চোখে দেখত। এ মাসের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষায় তারা নিত্য চলমান হানাহানি, মারামারি ও যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে দিত।
বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ চার মাসের একটি হলো পবিত্র রজব মাস। ‘রজব’ শব্দের অর্থ হলো সম্মানিত। ইসলাম-পূর্ব জাহেলি যুগে আরবরা এ মাসকে খুবই সম্মানের চোখে দেখত। এ মাসের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষায় তারা নিত্য চলমান হানাহানি, মারামারি ও যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে দিত।
ইরশাদ হয়েছে, ‘মহান আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস ১২টি, সেই দিন থেকে যেদিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ।
মর্যাদাপূর্ণ মাস চারটি হলো—জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। (বুখারি শরিফ : ২/৩৭২)
এই মর্যাদাপূর্ণ চারটি মাসের অন্যতম হলো রজব। তাই মর্যাদাপূর্ণ মাস রজব সম্পর্কে সচেষ্ট থাকা উচিত। এর সদ্ব্যবহার থেকে বিরত থাকলে বহু কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে।
মহান আল্লাহ বিশেষ রাতে ও বিশেষ দিনে বান্দাদের দোয়া কবুল করেন, তন্মেধ্যে পাঁচটি রাত অন্যতম। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এমন পাঁচটি রাত আছে, যেগুলোতে আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত ও দুই ঈদের রাত। (বায়হাকি, হাদিস : ৬০৮৭, মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯২৭)
রজব মাসের আমল : আনাস বিন মালেক (রা.) বলেন, রজব মাস আগমন করলে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলতেন—‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফী রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’
অর্থ : হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসে আমাদের বরকত দান করুন আর রমজান পর্যন্ত আমাদের জীবিত রাখুন।
তবে এ মাসের জন্য নির্ধারিত বিশেষ কোনো নামাজ, রোজা ও বিশেষ পদ্ধতির কোনো আমলের হুকুম দেওয়া হয়নি। তাই মনগড়া আমল করে এ মাসের ফজিলত ও বরকত লাভ করা যাবে না। রজব মাসের বরকত ও ফজিলত হাসিল করার জন্য অন্য মাসে পালনীয় ফরজ ইবাদতগুলো যথাযথ পালন করতে হবে এবং বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে হবে।
সম্পর্কিত খবর
আল্লাহ মুমিন নর-নারীর ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন। মুমিনের দায়িত্ব হলো যথাসময়ে ফরজ নামাজ আদায় করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা মুমিনের অবশ্য কর্তব্য।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০৩)
আর নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে নামাজ আদায়ের কথা হাদিসেও এসেছে।
সফরকালে নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা উচিত। তা হলো-
এক. চলন্ত জাহাজ, ট্রেন ও বিমানে নামাজ পড়া
চলন্ত লঞ্চ, জাহাজ, ট্রেন ও বিমানে ফরজ নামাজ সম্ভব হলে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে রুকু-সিজদাসহ আদায় করবেন।
দুই. অপারগ হলে ইশারায় পড়া এবং পরবর্তীতে কাজা করা
আর যদি কেবলামুখী হয়ে রুকু-সিজদার সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ পড়ে নেবেন। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এলে সতর্কতামূলক ওই ফরজ নামাজ পরবর্তী সময়ে আবার পড়ে নেবেন।
তিন. পারলে যানবাহন থেকে নেমে নামাজ পড়া
আর বাসে যেহেতু সাধারণত দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়া যায় না, তাই কাছাকাছি যাতায়াতের ক্ষেত্রে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে গন্তব্যে পৌঁছে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে না বলে মনে হলে এবং নেমে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ অথবা অসুবিধাজনক না হলে পথিমধ্যে নেমে ফরজ নামাজ পড়ে নেবেন।
চার. নামা সম্ভব না হলে ইশারায় পড়া ও পরে কাজা করা
আর দূরের যাত্রা হলে অথবা যে ক্ষেত্রে নেমে গেলে ঝুঁকি অথবা সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে সে ক্ষেত্রে বাস না থামলে সিটেই যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ আদায় করে নেবেন এবং সতর্কতামূলক পরবর্তী সময়ে এর কাজা করে নেবেন।
পাঁচ. নামাজের জন্য যাত্রাবিরতি দেওয়া
উল্লেখ্য, দীর্ঘ যাত্রায় বাসচালকদের উচিত ফরজ নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে কোনো মসজিদে যাত্রাবিরতি করা। এ বিষয়ে বাস মালিকদেরও ইতিবাচক নির্দেশনা দিয়ে রাখা উচিত। এ ক্ষেত্রে মালিক সমিতি ও শ্রমিক সমিতিগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে। আর যাত্রীদের কর্তব্য হলো, বাসের একজন মুসল্লি নামাজ পড়তে চাইলেও তার জন্য বাস থামাতে চালককে নির্দেশনা দিয়ে রাখা।(তথ্যসূত্র : ইলাউস সুনান : ৭/২১২; মাআরিফুস সুনান : ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার : ২/১০১)।
আজ বুধবার ২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬
ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—
জোহরের সময় শুরু ১২টা ৬ মিনিট।
আসরের সময় শুরু - ৪টা ২৯ মিনিট।
মাগরিব- ৬টা ১৯ মিনিট।
এশার সময় শুরু - ৭টা ৩৪ মিনিট।
আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ৩৫ মিনিট।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৫টা ৪৯ মিনিটে।
সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।
প্রশ্ন : লঞ্চ বা জাহাজ ঘাটে ভিড়ে থাকা অবস্থায় তাতে ফরজ নামাজ আদায় করা যাবে কি? এ অবস্থায় নিচে নেমে নামাজ আদায় করা আবশ্যক কি না?
- খোরশেদ আলম, বরিশাল
উত্তর : লঞ্চের কোনো অংশ জমি স্পর্শ অবস্থায় থাকলে লঞ্চে নামাজ পড়তে আপত্তি নেই; অন্যথায় নিচে নেমে নামাজ আদায় করতে হবে। (হিন্দিয়া : ১/১৫৮, নূরুল ঈজাহ : ৯৯)
সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
।প্রশ্ন : কোনো স্বপ্ন দেখে নিজেই অনুমানের ভিত্তিতে তার ব্যাখ্যা করার বিধান কী?
-আতিক, মিরপুর।
উত্তর : স্বপ্নের ব্যাখ্যা নিজে বুঝতে পারলে কাউকে বলার প্রয়োজন নেই। তা না হলে অভিজ্ঞ দ্বিনদার হিতাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যাখ্যা জেনে নেওয়া উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ২/৫২৭)
সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
।