২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন : প্রেসসচিব

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন : প্রেসসচিব
ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া।

দেশের পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম। ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার এখন অনেক গোছানো। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সবাই অনেকটা উদ্বিগ্ন ছিল, সেই পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

পুরো রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ছিল। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়েও সরকার এখন অনেকটা প্রতিষ্ঠিত।’

প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদিও স্যার বলেন, আমরা এখনো একটা যুদ্ধ অবস্থায় আছি। তবে আমরা মনে করি, আগস্টে আমরা যে জায়গায় ছিলাম, সেখান থেকে বড় একটা উত্তরণ হয়েছে।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোরের ‘গল্পের ঈদ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম। এ সময় সঙ্গে তার স্ত্রী সাবিনা জাহান লুনাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক।

এ সময় দুজনই তাদের ঈদের পরিকল্পনা জানান।

পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদের দিন সময় কাটানোই মূল পরিকল্পনা থাকে বলে জানান প্রেসসচিব।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসসচিব হিসেবে যুক্ত হওয়ার আগে শফিকুল আলম দেশের বাইরের একটি বার্তা সংস্থায় চাকরি করতেন। সাংবাদিক শফিকুল আলম আর প্রেসসচিব শফিকুল আলমের মধ্যে কোনো পার্থক্য পেয়েছেন কি না—উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে সাবিনা জাহান লুনা বলেন, ‘আকাশ-পাতাল পার্থক্য পেয়েছি। আমাদের বিয়ের ২৫ বছর হয়ে গেছে। তবে গণ-অভ্যুত্থানের পর তাকে (শফিকুল আলম) অনেক পরিবর্তন হতে হয়েছে।

আগে একদম পুরাই ফ্যামিলিম্যান ছিল। এখন তো সারাক্ষণ সরকার ও দেশের জন্য আমাদের একটু সময় কম দিচ্ছে। তবু আলহামদুলিল্লাহ দেশের জন্য করুক, এটাই চাওয়া। দেশের ভালো হোক।’

পূর্বের সময়ের প্রেসসচিব এবং বর্তমানের দায়িত্বটা ভিন্ন জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘আগে যেসব প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাদের সঙ্গে যেসব সাংবাদিকের সখ্যতা ছিল, তাদের এই পোস্টটা দেওয়া হতো। প্রেসসচিব খুব বেশি কাজ করতেন না। মাঝেমধ্যে বিদেশি ডিগনিটারি আসলে তাদের জন্য কিছু আয়োজন করাই ছিল তাদের কাজ।’

নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাকে প্রচুর ইনফর্ম থাকতে হয়। সপ্তাহে তিনটি প্রেস ব্রিফিং করতে হয়, এ জন্য ম্যাটারিয়াল জোগাড় করতে হয়। সব সময় সতর্ক থাকতে হয়।’ 

কখনো ভেবেছিলেন যে আপনি প্রেসসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন—উপস্থাপিকার এমন প্রশ্নের উত্তরে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমার মনে হয়নি। প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে আমার খুব বেশি হৃদ্যতা ছিল, এমনটাও নয়। পেশাগত কারণে আমি তাকে অনেক সময় কাভার করেছি। তার প্রতি যে অন্যায়-অবিচার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেটা নিয়ে আমরা কাভার করেছিলাম। সেই সূত্রেই তিনি আমাকে চিনতেন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর হঠাৎ আমি একদিন ফোন পেলাম। জানতে চাওয়া হলো, আমি আগ্রহী কি না?’

প্রেসসচিব হিসেবে শফিকুল আলমকে নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা-সমালোচনা ও চর্চা হয়। এটির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আগের প্রেসসচিবরা কোনো কাজ করতেন না। আগের কালচারটা ছিল, প্রাইম মিনিস্টারের সঙ্গে যাদের দহরম-মহরম সম্পর্ক তাদের প্রেসসচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতো। যারা কোনো কাজই করতেন না। কিন্তু আন্তর্জতিকভাবে প্রেসসচিবের কাজ অনেক। সেগুলোই আমি করে যাচ্ছি। এ জন্য সবার কাছে মনে হচ্ছে, আমি অনেক কাজ করছি। মূলত এটি আমার কাজ।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে প্রেসসচিব বলেন, ‘পুরো পৃথিবীতে তো উনি সেলিব্রিটি। এটা আমি আরো জানতে পেরেছি এই গত সাড়ে সাত-আট মাসে। তাকে বাইরে যে মর্যাদার সঙ্গে ট্রিট করা হয়, সেটি অবিশ্বাস্য।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ডাভোসে আমরা গিয়েছি, ওইখানে গিয়ে আমরা জাস্ট ঢুকছি—এই সময় খবর আসছে যে তার (ড. ইউনূস) সঙ্গে জার্মানির চ্যান্সেলর মানে ওদের প্রাইম মিনিস্টার কথা বলবেন। উনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাচ্ছেন। উনার যে স্ট্রাকচার এটা তো আনবিলিভেবল।’

স্বামী-স্ত্রীর চেয়ে ‘বন্ধুত্ব’ সম্পর্কটা একটু বেশি জানিয়ে সাবিনা জাহান লুনা বলেন, ‘আমরা তো ক্লাসমেট। তাই আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বটা একটু বেশি। আমাদের মধ্যে একজন একটু রেগে গেলে অন্য জন চুপ থাকি।’

ভাইরাল মাফলার সম্পর্কে প্রেসসচিব বলেন, ‘মাফলারটা আমার স্ত্রীর বোন কানাডা থেকে নিয়ে এসেছেন। যে দাম বলা হচ্ছে, সেটির ধারে-কাছেও না; তবে খুব সস্তাও না। এটা অনেক বছর ধরে ব্যবহার করে আসছি। যখন এটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয় তখন লেভেলটা দেখেছি। এটি আমার পছন্দের একটি মাফলার।’

হুমকি বা ট্রলে কিভাবে প্রভাবিত করে—জানতে চাইলে প্রেসসচিবের স্ত্রী সাবিনা জাহান লুনা বলেন, ‘ভীষণভাবে ভয় পাই। মন খারাপ হয়। আমাকে খুব ভাবায়। তবে এখন আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সময় শেষ হয়ে গেলে ‘গন্তব্য’ কী হবে—জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘এটি নিয়ে এখনো ভাবিনি। আমাদের এখনো আরো কয়েক মাস তো আছে। মে বি ইলেকশনটা যখন হবে তারপরে আমি ছেড়ে দেব। খুব একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছা যে বই লেখা কিন্তু এতে তো সংসার চলে না, আমার তো সংসার চলাতে হবে। সেই চিন্তা করে আমার হয়তো জার্নালিজমে আবার ফিরতে হবে। আবার কেউ কেউ বলেন, ভাই—আপনি তো প্রেস কনফারেন্স খুব ভালো করেন, পলিটিকসে আসেন। তবে ওইটাও আমি অতটা দেখি না। দুই-তিনজন বলার কারণে পলিটিকসের বিষয়টি মাথার মধ্যে ঢুকছে, পরে আমি ওয়াইফের সঙ্গে বলছিলাম; তবে সে বলে দিয়েছে, একদম না—কোনোভাবেই এইটা করা যাবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে যদি কিছু কন্ট্রিবিউট করতে পারি, সেটাও একটা কাজ হবে। কিন্তু আমার প্রাথমিক ইচ্ছা জার্নালিজমে ফিরে যাওয়া, তবে সেটি লোকাল জার্নালিজমে হতে পারে। নিজে যদি কোনো পত্রিকা দিতে পারি, সেটার খুব ইচ্ছা আছে।’

নাগরিক হিসেবে হিসেবে গণ-অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নিয়ে মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হয় সাবিনা জাহান লুনার কাছে। তিনি বলেন, ‘যখন বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের মারা হচ্ছিল, তা দেখে ট্রমাটাইজ হয়ে গেছিলাম। আমার স্কুলের এক ছেলেও মারা গেল, আহনাফ। এদিকে উনিও কিছুটা থ্রেটে ছিল, ধরে নিয়ে যাবে কি না। সেই টেনশনে ওই সময়টা খুব খারাপ গেছে। তারপর যখন বিজয় এলো তখন তো মনে হলো যে অনেক কিছুই হয়ে গেল। উনি যখন আমাকে বলল যে তাকে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে ডাকা হয়েছে। আমি তখন কোনো কিছুই আর চিন্তা করিনি। বললাম—অন্তত দেশের সেবায় যাও। আর এমনি উনি ভালো মানুষ, ভালো লোক, সৎ মানুষ।’

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন অনেক জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব বলেন, ‘অর্জনটা আসলে অনেক, তবে দৃশ্যমান নয়। অর্জনটা আমি দেখি, একটা রেভল্যুশন হলে বিপ্লব হলে যেই ধরনের কেওয়াচ তৈরি হয়, সিচুয়েশন তৈরি হয়, সেই জায়গাটা তো বাংলাদেশের মানুষ উইটনেসই করেনি। এটা না করার মূল কারণ হচ্ছে প্রফেসর ইউনূসের লিডারশিপের গুণ। দেখেন, উনি কিভাবে এই পুরো সিচুয়েশনগুলো হ্যান্ডল করলেন। আমরা ম্যাসিভ বিদেশি আউটপোরিং অব সাপোর্ট পেয়েছি, প্রচুর সাপোর্ট আমাদের এসেছে। বাংলাদেশকে নতুন করে সবাই চিনছে। আমাদের ইকোনমি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, ল অ্যান্ড অর্ডার আমি বলব যে বেটার দিকে যাচ্ছে।’ 

তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার যে বাংলাদেশকে সমর্পণ করবে সেটি আমার মনে হয় খুবই বেটার ও হেলদি অবস্থায় থাকবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কনফিডেন্স যত দ্রুত আনা প্রয়োজন ছিল, সেটি আমরা পারিনি। এই জায়টায় আমাদের অনেক স্ট্রাগল করতে হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে এটিও ঠিক হয়ে যাবে।’

চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘স্যারের কথা হচ্ছে—রাজনৈতিক দলগুলো যদি কম সংস্কার চায় তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন। নতুবা এটা ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে যেকোনো সময় হতে পারে। সেটি ফেব্রুয়ারি নাকি মার্চে হতে পারে—এটি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বোঝা যাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তবে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি আছে বলে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টার বিভিন্ন দেশে সফর নিয়ে প্রেসসচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানে নতুন বাংলাদেশের কথা বলছেন। সেসব দেশের লিডার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছেন। কেননা তারাই (ব্যবসায়ীরা) তো এসে বিনিয়োগ করেন। যেসব জায়গায় উনি গিয়েছেন, প্রত্যেক জায়গায় উনার মেসেজটা হচ্ছে বাংলাদেশ ‘রেডি ফর বিজনেস’। তোমরা আসো, বিনিয়োগ করো।” এই ডাকে সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্নের কথা জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি, দেশটা একদিন অনেক অনেক বড় হবে। আগামী ২০ থেকে ৪০ বছর মধ্যে বিশ্বের একটি ধনী দেশ হবে। খুব সমৃদ্ধ একটি সভ্যতার অংশ হবে বাংলাদেশ।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভূমিকম্প-পরবর্তী মায়ানমারে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম চলমান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভূমিকম্প-পরবর্তী মায়ানমারে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম চলমান
সংগৃহীত ছবি

মায়ানমারে সাম্প্রতিক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত উদ্ধার, চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে।

দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে প্রেরিত এই বিশেষ দল উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে নিবেদিতভাবে অংশগ্রহণ করছে।

গতকাল মায়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ উদ্ধারকারী দলকে মায়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল এবং আজ মায়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ধসে পড়া ভবনে বাংলাদেশ উদ্ধারকারী দল অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রসহ অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ চিকিৎসা সহায়তা দল আজ নেপিদো শহরের ৫০ শয্যাবিশিষ্ট যবুথিরি টাউনশিপ হাসপাতাল, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল এবং ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে। আজ মোট ৫০ জন রোগীকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং তিনটি জটিল অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।

উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ভূমিকম্পে আহত রোগীদের মধ্যে ১৫টি জটিল অস্ত্রোপচারসহ সর্বমোট ৪৫৭ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বাধীন উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম আগামীকালও চলমান থাকবে। 

গত ২৮ মার্চ মায়ানমারে সংঘটিত ভূমিকম্পের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে ১ এপ্রিল সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা দল মায়ানমারের নেপিদো শহরে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

মন্তব্য

স্বৈরাচারের দোসরদের কিছুতেই ছাড় নয় : রাষ্ট্রদূত মুশফিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
স্বৈরাচারের দোসরদের কিছুতেই ছাড় নয় : রাষ্ট্রদূত মুশফিক
সংগৃহীত ছবি

মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কিছু কর্মকর্তা নিজেরা স্বেচ্ছায় স্বৈরাচার তোষণের অংশ হিসেবে পেশাগত ভূমিকার বাইরে গিয়ে রেডলাইন অতিক্রম করেছেন। তাদেরকে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বৈরাচারের দোসরদের কিছুতেই ছাড় দেওয়া হবে না।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মিলনায়তনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘আমার ফরেন প্রেস সেন্টারের ক্রিডেন্সিয়াল বাতিল করার জন্য দূতাবাসের কর্মকর্তারা স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংশ্লিষ্ট অফিসে লাগাতার তদবির করেছিলেন। আমি জানি এই স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আপনারা কত আন্তরিকভাবে আমাকে সাহায্য করেছেন এবং আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেছেন। আমি আপনাদের নিকট চিরঋণী।’

বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশি কূটনীতিকরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম বেতন-ভাতা পান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজে কূটনীতিক হিসেবে কাজ করার সুযোগ না পেলে আমি জানতেই পারতাম না যে বাংলাদেশ মিশনগুলো বিদেশে কত অল্প পরিমাণ রিসোর্স দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।

পতিত স্বৈরাচার কূটনীতিকদের দিয়ে বিশ্বব্যাপী ভুয়া উন্নয়নের প্রচার করালেও ২০১২ সালের পর থেকে কূটনীতিকদের বেতন-ভাতা আর বৃদ্ধি পায়নি।’

সাম্প্রতিক ট্রাম্প ট্যারিফের বিষয়ে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের একটি ডেলিগেশন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার জন্য শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। আমি ওয়াশিংটন দূতাবাসকে জানিয়েছি যে এ বিষয়ে যদি আমার কোনো সহযোগিতা লাগে, তবে যে কোনো সময় ভূমিকা রাখতে আমি সবসময় প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা।

এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লূর রহমান জিল্লু, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন, গিয়াস আহমেদ, কামাল পাশা বাবুল, মোশাররফ হোসেন  জসিম ভূঁইয়া, আব্দুস সবুর, মোশাররফ হোসেন সবুজ, মাকসুদুল এইচ চৌধুরী, মোতাহার হোসেন, নাসিম আহমেদ, বাচ্চু মিয়া,  হাবিবুর রহমান হাবিব, আতিকুল হক আহাদ, মিজানুর রহমান, মূলধারার রাজনীতিক এটর্নি মঈন চৌধুরী, জাস্টিস সোমা সাঈদ, জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, বদিউল আলম, সেলিম রেজা, মাযহারুল ইসলাম মিরন, তরিকুল ইসলাম মিঠু, আহমেদ সোহেল, সাইফুর রহমান খান হারুন, মৃধা মোহাম্মদ জসিম, মনির হোসেন, অনিক রাজ প্রমুখ।

মন্তব্য

ঢাকায় জার্মানির ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঢাকায় জার্মানির ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল

ঢাকায় পাঁচ দিনের সফরে এসেছে জার্মানির ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিনিধিদলটি ঢাকা সফর করবে।

রবিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকায় জার্মানির দূতাবাস এ তথ্য জানায়।

দূতাবাস জানায়, প্রতিনিধিদলে জার্মানির ফেডারেল পররাষ্ট্র দপ্তর, ফেডারেল অর্থনৈতিক বিষয় ও জলবায়ু কর্ম মন্ত্রণালয়, জার্মানির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংস্থা, জার্মানির রপ্তানি ঋণ সংস্থা (ইউলার হার্মিস), গিজ এবং কম্পানির প্রতিনিধিরা রয়েছেন।

এই মিশন জার্মান এশিয়া-প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (ওএভি) দ্বারা সমন্বিত, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক, যা এশিয়াজুড়ে জার্মানির ব্যাবসায়িক স্বার্থ প্রচার করে। এই অঞ্চলে প্রবেশ বা সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী জার্মান কম্পানিগুলোর জন্য একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কাজ করে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জার্মানি থেকে প্রথমবারের মতো এমন ধরনের মিশনকে স্বাগত জানিয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রস্টার বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যবসায় সম্ভাবনা এবং সুযোগগুলো প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি সংস্কারের অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করার জন্য ওএভি সঠিক সময়ে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আনার উদ্যোগকে আমরা প্রশংসা করি।’

প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় জার্মান দূতাবাস আয়োজিত একটি ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের সফর শুরু করে।

তারা ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫-এ অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অংশীদারিতে এই সম্মেলন আয়োজন করবে।

জার্মানি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার। ২০২৪ সালে দেশটির সঙ্গে মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৯.৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এই সফর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতি জার্মানির পারস্পরিক দৃঢ় বিশ্বাস এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।

মন্তব্য

বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেবেন ৪০ দেশের বিনিয়োগকারী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেবেন ৪০ দেশের বিনিয়োগকারী
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে আগামীকাল সোমবার থেকে চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ শুরু হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৪০টি দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় ৬ শতাধিক দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

রবিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, প্রথম দিন দুটি ট্র্যাকে অনুষ্ঠানটি হবে।

প্রথম ট্র্যাকে ৬০ জনের বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীকে নিয়ে একটি স্পেশাল ফ্লাইট চট্টগ্রাম যাবে। সেখান থেকে কোরিয়ান ইপিজেড ও মিরসরাইতে স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন শেষে রাতে ফিরে আসবেন তারা।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা যাচ্ছেন তারা হলেন সেসব উদ্যোক্তা, যারা মনে করছেন তাদের সেখানে একটি কারখানা স্থাপন করতে হবে। তাদের জায়গাজমি লাগবে।

তাদের জন্য আমরা কী ধরনের সাপোর্ট সিস্টেম তৈরি করতে পারি, তা তারা সরেজমিন দেখবেন। অন্যদিকে সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্টার্টআপ কানেক্ট নামে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসূচি রয়েছে। সেখানে যেসব আরলি স্টেজ স্টার্টআপ এবং ভেঞ্চার বিনিয়োগকারী আসছেন তাদের মধ্যে ম্যাচ মেকিং ইভেন্ট, নেটওয়ার্কিং ও প্যানেল হবে।’ 

সারা দিন স্টার্টআপ ইভেন্টকে ফোকাস করা হবে।

চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালের দিকে বিনিয়োগকারীরা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে যেখানে জাপানি ইকোনমিক জোন রয়েছে সেখানে সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। তারা সেখানের কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কী ধরনের কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তা বুঝে তাদের বিনিয়োগের জন্য কতটুকু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা দেখবেন। দ্বিতীয় ধাপে বিশ্বব্যাংক ও আইএলওর সঙ্গে কিছু অ্যাংগেজমেন্ট রয়েছে। তাদের এফডিআই সম্পর্কিত কিছু ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিনিয়োগের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। ৯ এপ্রিল বুধবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।

সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়া সারা দিনই একাধিক (৩-৪টা) প্যারালাল অনুষ্ঠান চলবে ‘

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিছু বিনিয়োগকারীকে পুরস্কৃত করা হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন। একই সঙ্গে কিছুসংখ্যক বিদেশি বিনিয়োগকারী বক্তব্য দেবেন। সেখান থেকে আমরা বোঝার চেষ্টা করব আর কী করলে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য বেটার ডেস্টিনেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে। পরবর্তীতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইয়ুথ এন্টারপ্রেনারশিপ মেলার আয়োজন থাকবে। উপদেষ্টা সেখানে আরলি স্টেজ কম্পানির সঙ্গে কথা বলবেন। দ্বিতীয় ধাপে রিনিউয়েবল এনার্জি নিয়ে কথা হবে। বেশ কয়েকটি কম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ