জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেছেন, ‘যেখানেই চাঁদাবাজি, সেখানেই আপনারা প্রতিরোধ করুন। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে একটা ইনসাফভিত্তিক সমাজ কায়েম করার জন্য, চাঁদাবাজমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য। আপনারা কোনোভাবেই চাঁদাবাজি সহ্য করবেন না। এনসিপি সবসময় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে।
যেখানেই চাঁদাবাজি, সেখানেই প্রতিরোধ : এনসিপি নেতা শিশির
সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা দক্ষিণ ইউনিয়নের জামতলী বাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রশংসা করে শিশির বলেন, ‘প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মানুষ শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারছে। গত ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো সরকার যতই দিন যাচ্ছে ততই জনপ্রিয় হচ্ছে। আস্তে আস্তে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে, আস্তে আস্তে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের মনে ভয়ে কাঁপন ধরছে, আস্তে আস্তে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের মান-মর্যাদা উঁচু থেকে উচ্চতর অবস্থানে পৌঁছাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই রমজানে লোডশেডিংয়ের সমস্যা হয়নি। তিনি (ড. ইউনূস) রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন।’
গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল আহমেদ, এনসিপি নেতা মাইন উদ্দিন, খন্দকার ওমর ফারুক, জালাল আহমেদ, আবুল কাশেম, আসাদুজ্জামান মিলন, কবির হোসেন, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম, ইঞ্জিনিয়ার রাসেল সিদ্দিকী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালমাই উপজেলা শাখার আহ্বায়ক নোমান হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মারুপ সিরাজী, কবি খান মোহাম্মদ রুবেল ও জুলাই আন্দোলনে পুলিশের ছররা গুলিতে আহত মেহেদী হাসান শুভসহ শতাধিক নেতাকর্মী।
এর আগে, এনসিপি নেতা শিশির দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা, লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম ও সেকেন্ড অফিসার আবদুল্লাহ আল ফারুকের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সম্পর্কিত খবর

নির্বাচন পেছাতে চক্রান্ত চলছে : ফারুক
অনলাইন ডেস্ক

নির্বাচন পেছাতে চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সেনবাগ জাতীয়তাবাদী ফোরামের এক প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দিয়ে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, নূন্যতম সংস্কার এবং আওয়ামী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করে দ্রুত নির্বাচনমুখী হওয়া দরকার।
ফারুক অভিযোগ করে বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হলেও তাদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে বিচার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।
এসময় সাবেক এমপি মোর্শেদ আলমকে রিমান্ডে নিয়ে তার সব অবৈধ সম্পদের হিসাব জনগণের সামনে আনার দাবি জানান ফারুক।

পেটের ক্ষিধে ঠিকমতো মিটলে রাজনীতি সুন্দর হবে : সারজিস
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

‘পেটের ক্ষিধে ঠিকমতো মিটলে রাজনীতি সুন্দর হবে এবং পেটে ক্ষিধে রেখে সুন্দর রাজনীতির সংস্কৃতি নিয়ে আসা সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে তিনি পঞ্চগড় জেলা শহরের অদূরে জেলা প্রশাসন ইকো পার্কে মাশরুম ও মুক্তা চাষ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, গতানুগতিক কৃষি করতে করতে কৃষকরা এখন ক্লান্ত। এখানে ঠিকমতো না আছে উপার্জন না আছে কোন নিশ্চয়তা।
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি অযৌক্তিকভাবে আমাদের সুবিধা বঞ্চিত করে দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার বিকল্প খুঁজে নিবে। বাংলাদেশ ভারত দুটি পাশাপাশি দেশ। কখনো এই দুটি দেশ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাবে আমরা এটি প্রত্যাশা করি না।
শামসুজ্জামান দুদু যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে তিনি বলেন, দুদু ভাই যে মন্তব্য করেছেন তা তার ব্যক্তিগত মন্তব্য দল হিসেবে বিএনপির নয়। তারা আমাদের রাজনীতির সিনিয়র তাদের দেখে আমরা শিখবো। কিন্তু তারা যদি তাদের অনুজদের সামনে রেখে প্রতিহিংসামূলক কথা বলার সংস্কৃতি আবার তৈরি করেন যেমনটি শেখ হাসিনা ড. ইউনুস ও খালেদা জিয়াকে ছোট করে কথা বলতেন যা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছিল আমরা একই সংস্কৃতি তাদের মাধ্যমে আর দেখতে চাই না। লেখাপড়ার পরিবেশ একেবারে শেষ হয়ে গেছে বা নষ্ট হয়ে গেছে তা ঠিক নয়। তবে কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন যারা কথা বলছেন এই মানুষগুলো আর স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন কিনা তার নিশ্চিয়তা ছিলো না। এই ছাত্রদের এতো ত্যাগ এতো রক্তের পরেই কিন্তু এই অভ্যুত্থান এবং এই মানুষগুলো এখন বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারছে। আগামীতে যেই রাজনৈতিক দল নেতৃত্বে আসুক না কেন যে ছাত্ররা এই অভ্যত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের প্রতি এতোটুকু শ্রদ্ধা প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিবর্গের থাকা উচিত। বিএনপি বড় দল হিসেবে এই প্রত্যাশা আরো বেশি।
নববর্ষ নিয়ে সারজিস বলেন, শো অফের জন্য যেন বাইরের যে অপসাংস্কৃতিগুলো রয়েছে তা যেন আমরা এই একটা সংস্কৃতির অংশ না বানিয়ে না দেই। একজনের সংস্কৃতির অন্যজনের উপর চাপিয়ে দেয়ার কাজও যেন আমরা না করি। সবার সংস্কৃতির উপর আমাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। নববর্ষে আমাদের এলাকায় হালখাতা হতো, উৎসবের মতো আমেজ থাকতো। আমাদের এলাকায় ইলিশ এতো সহজলভ্য ছিলো না। আমি বাড়িতে পহেলা বৈশাখে ইলিশ খেয়েছি এমন হয় নি। তবে বাড়িতে পান্তা ভাত, সিঁদলের ভর্তা, পেলকা ও তিতারি শাক রান্না হতো।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন ও প্রশিক্ষক ড. নজরুল ইসলামসহ প্রশিক্ষনার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জাতীয় বীর ঘোষণার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জাতীয় বীর ঘোষণার দাবি জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার তাঁর স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এ দাবি জানান গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান।
এদিন সন্ধ্যা ৭ টায় গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবনের স্মৃতিচারণ করা হয়।
দোয়া মাহফিলে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন গরীবের ডাক্তার। বিগত আওয়ামী সরকার তাকে বারবার অসম্মানিত করেছে, মিথ্যা মামলা পর্যন্ত দিয়েছে। কিন্তু আফসোস, তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বার্তা দেওয়া হলো না, কোনো দোয়া মাহফিলের আয়োজন হলো না।
তিনি বলেন, ‘আমরা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জাতীয় বীর ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদান অপরিসীম। ২০১৮ সালের ভোট চুরির নির্বাচনের পর যখন কেউ কথা বলার সাহস পেতো না তখন ভোটাধিকার নিয়ে কথা বলতেন ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আজ হতাশা নিয়ে বলতে হচ্ছে, তাঁর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়ভাবে কিছুই করতে দেখা যায়নি।
দলটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সব সময় মানুষের পক্ষে ছিলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন। এমনকি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি রাজপথেও শামিল হয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার কোনো আয়োজন করেনি, এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।’
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন- দলের কেন্দ্রীয় নেতা জিলু খান, আনিসুর রহমান মুন্না, আশরাফুল হাসান তপু, শাহজাহান চৌধুরী, মনির মওলা, আলাউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা সানাউল্লাহ প্রমুখ।

ড. ইউনূসে লাভ কী, সারজিসেরই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত : দুদু
অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘এতবড় গণ-অভ্যুত্থান আমরা সংঘটিত করেছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা এক সাগর রক্ত দিয়েছে। সেটিকে রক্ষা করতে হবে, দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এখন জরুরি কাজগুলো করে নির্বাচন দিতে হবে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন।
সরকারের ৫ বছর থাকা নিয়ে সঞ্চালক জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্যের প্রসঙ্গ টানলে দুদু বলেন, ‘এই সরকারের ৫ বছর, ১০ বছর থাকার কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ঠিক না। এতে বিপদ হতে পারে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় তারই (সারজিস আলম) প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত; ড. ইউনূস এলে লাভ কী, সে যখন বুঝতে পেরেছে।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া ৫ বছর তাকে কীভাবে রাখব? ভোট করার মতো অবস্থা নেই, কম সংস্কার, বেশি সংস্কার; এই বিষয়গুলো আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়। নব্বই গণ-অভ্যুত্থানের পর একটা সাংবিধানিক সরকারই ছিল, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সারজিস আলম একটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল। ভারত কী চায় এটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বড় ঘটনা না। তারা কী জিনিস তা আমরা ৫২ বছরে বুঝেছি। এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষকে ক্ষমতায়ন করা। ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। এতে কার্পণ্য করলে বাংলাদেশকে অনিশ্চয়তার মধ্যে নিয়ে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যে পরিবর্তন দরকার, সেটা করে নির্বাচন দিতে হবে। ৮ মাসে রোডম্যাপও পাওয়া গেল না। আওয়ামী লীগের রাজনীতি-নির্বাচন অনেক পরের ব্যাপার, তারা যে নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে তারা বের হলেই মানুষ ধরবে।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই দেশে মুসলিম লীগ পাকিস্তান সৃষ্টি করেছিল ও বড় আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু প্রথম নির্বাচনের পরেই তারা ধুয়েমুছে গিয়েছিল। ১৯৫৪ এর নির্বাচনে আমরা দেখেছি। আওয়ামী লীগ তো একবার শেখ মুজিবের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। এবার শেখ হাসিনা বাকিটুকু শেষ করেছে।’