ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয় না, আসে লুটেরা শ্রেণি : ফরহাদ মজহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয় না, আসে লুটেরা শ্রেণি : ফরহাদ মজহার
ছবি: কালের কণ্ঠ

কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘কমিউনিটি যখন দাঁড়িয়ে যায়, এলাকা যখন দাঁড়িয়ে যায় তখনই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উম্মেষ ঘটে। ভোট দিয়ে হয় না, ভোটে লুটেরা মাফিয়া শ্রেণি আসে।’ 

আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত শাহ আলী মাজারে জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের আয়োজিত গণমানুষের জাগ্রত জুলাই শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র কায়েম হয় যখন আমরা বুঝবো এই কমিউনিটি সবচেয়ে শক্তিশালী, কমিউনিটিতে থাকতে হবে, কমিউনিটির সিদ্ধান্তে এই এলাকায় উন্নয়ন হবে, কমিউনিটি যেমনি করে চায় তেমনি করে হবে।

কমিউনিটি খুব ভালো করে বুঝে কোনটা তার ভাল, কোনটা তার খারাপ।’

আরো পড়ুন
রাজশাহীসহ পাঁচ আঞ্চলিক কেন্দ্রে রাবির ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল

রাজশাহীসহ পাঁচ আঞ্চলিক কেন্দ্রে রাবির ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল

 

তিনি আরো বলেন, ‘যে ইসলাম ধর্মের অন্তর্গত না, যে সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্মের, অন্য ধর্মের সেও আমার সমাজের অন্তর্গত। আমার সমাজের বাইরে সে না, এই যে সত্য কথাটা, এটা মাজার নিত্যদিন প্রচার করে। মাজারে যে গান হয়, যে সংস্কৃতির চর্চা হয় তার একটাই ভাষা, মানুষ।

মানুষের চেয়ে সত্য আর কিছু নাই। মাজার এটাই করে। এই যে কথা বলবার যে শক্তির জায়গা এটা যদি রাখতে পারি তখন আমরা বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো।’

শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠন করতে জনগণকে লাগবে উল্লেখ করে এই রাষ্ট্রচিন্তক বলেন, ‘জনগণকে বাদ দিয়ে উপর থেকে চাপ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা যায় না।

আমাদের উপদেষ্টা ফারুকী (সংস্কৃতি উপদেষ্টা) এটা খুব ভাল করে বুঝেন যে, জনগণকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা যায় না।’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘মাজার আমাদের মনে করিয়ে দেয় স্মৃতি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যখন এই স্মৃতির উছিলায় একত্রিত হই, মানুষটা নাই কিন্তু মানুষের স্মৃতি আছে, সেটা কি? তার কাজ, তার আমল। মানুষ নশ্বর, মৃত্যুকে সে কখনোই এড়াতে পারবে না, সে মরবেই কিন্তু সে যেটা রেখে যায় সেটা হচ্ছে আমল। মাজার শেখায়, তোমার জীবন তুচ্ছ, তোমার আমল সবার আগে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজন ও আহতদের কথা শুনলে যে আমরা বিধ্বস্ত হয়ে যাই, প্রচণ্ড বেদনার্ত লাগে, এই অনুভুতিটা থাকা ভালো। এই জাতি যতদিন এই বেদনা মনে রাখবে ততদিনই ঠিক পথে থাকবে, এই বেদনা ভুলে গেলেই আমরা আবার ভুল পথে চলে যাবো।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, আমরা ১০০ ভাগ সফল হয়েছি, যারা আহত হয়েছেন, যারা শহীদ হয়েছেন ঐ পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের কাজে। এর অনেক কারণ আছে, কখনো রিসোর্সের সীমাবদ্ধতা, কখনো পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা। কিন্তু একটা জিনিস নিশ্চিত করে বলতে পারি, যদিও এটা আমার মন্ত্রণালয়ের কাজ না, আমাদের ইচ্ছায় কোনো রকমের কমতি নাই। আমাদের ক্যাবিনেটে সারাক্ষণই আমরা এই কথাটা বলি যে, আমরা বোধহয় যথেষ্ট করতে পারলাম না। এই কথাটা আমি অনুভব করি। এর অর্থ হলো, আমরা স্বীকার করি, আমরা যা করেছি তা যথেষ্ট না।’

জুলাই যাদুঘর ভিন্ন আঙ্গিকে নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা জুলাই জাদুঘর করছি, সাধারণত যাদুঘর যেমন হয় এটা এমন হবে না। এই যাদুঘরে যারাই যাবেন তারা জুলাই-আগস্টের বেদনার ভিতর দিয়ে ভ্রমণ করবেন। আমার বিশ্বাস, যখন যাদুঘর দেখে বের হয়ে আসবেন তখন তিনি হাটতে পারবেন না, তার পা ভারি হয়ে আসবে। আমরা চেষ্টা করবো জুলাই যাদুঘরে যেন আপনাদের সমস্ত বেদনা লিপিবদ্ধ থাকে।’

অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মিরপুরে শহীদ মো. নাদিমের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নিহা ও শহীদ মেহেরুন নেছা তানহার বাবা মোশাররফ হোসেন।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘৫৫ বছর যে আসছে সে আমাদের অত্যাচার করছে। আমাদের সন্তানদের রক্তের বিনিময় নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ হয়েছে। ৮ মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত বিচার পায়নি। আমাদের পূনর্বাসনও হয়নি। দ্রুত গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে গরিব-অসহায়দের জন্যে মেডিক্যাল ক্যাম্প, জুলাইয়ের গ্রাফিতি, আন্দোলনের ছবি ও খবরের কাগজ প্রদর্শনী, কবিতাপাঠ, জুলাই আন্দোলনে আহত, সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ভাবগানের আসর ও বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ রোমেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মিরপুরে আন্দোলনে আহত মাহফুজুর রহমান, আবুল বাসার সোহেল, সম্মুখ সারির যোদ্ধা আলী নুর, কবি নকিব মুকশি, হাসনাত শোয়েব, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুরের সদস্য তৌফিক হাসান, হুমায়ুন শফিক, উদয় হাসান ও মিলন হোসেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভারত থেকে এলো ১০ হাজার টন সিদ্ধ চাল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারত থেকে এলো ১০ হাজার টন সিদ্ধ চাল
সংগৃহীত ছবি

ভারত থেকে ১০ হাজার টন চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে একটি জাহাজ।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় (প্যাকেজ-৮) ভারত থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল নিয়ে এমভি ফু থানহ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।

জাহাজে রক্ষিত চালের নমুনা পরীক্ষা এরই মধ্যে শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, চাল খালাসের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে।

এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, উন্মুক্ত দরপত্র চুক্তির আওতায় ভারত থেকে মোট ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি প্যাকেজে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এরই মধ্যে চুক্তি মোতাবেক ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৭১৯ মেট্রিক টন চাল দেশে পৌঁছেছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বোরো ধান এলে চালের দাম আরো সহনীয় হবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বোরো ধান এলে চালের দাম আরো সহনীয় হবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
সংগৃহীত ছবি

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বোরো ধানের চাল আসবে। আশা করি, নতুন ধান উঠলেই চালের বাজার আরো সহনীয় হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।  

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোজ্য তেলের আমদানি, সরবরাহসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে বেশ কিছুদিন ধরেই চালের দাম বেড়ে আছে।

দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বোরো ধানের চাল আসবে। চিকন যে চাল বিশেষ করে নাজিরশাইল বা মিনিকেট এটা কিন্তু বোরো মৌসুমের চাল থেকেই আসে।’

তিনি বলেন, ‘এ বছর আবহাওয়া এবং বিদ্যুতের অবস্থা ভালো ছিল। তা ছাড়া সারের সরবরাহসহ সামগ্রিক বিষয় ভালো ছিল।

আমরা মনে করছি, আল্লাহর রহমতে আমাদের ফসল তথা ধানেও একটা বরকত আসবে। আশা করি, নতুন ধান উঠে এলে চালের বাজার আরো সহনীয় হয়ে উঠবে।’

দিনি আরো বলেন, ‘কৃষিপণ্য একটা গতিশীল জিনিস। তবে সব পণ্যতে আমরা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে যে ব্যবস্থাপনা করা যায়, সেটাই করছি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

গুলশানে ফ্ল্যাট দখল : টিউলিপ সিদ্দিকের নামে মামলা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গুলশানে ফ্ল্যাট দখল : টিউলিপ সিদ্দিকের নামে মামলা
টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের অভিনব প্লট জালিয়াতির ঘটনায় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এই মামলায় টিউলিপ সিদ্দিকি ছাড়া আরো দুজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা-১ সরদার মোশারফ হোসেন।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

দুদকের দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক কোনো টাকা পরিশোধ না করেই ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে অবৈধ পারিতোষিক হিসেবে গুলশান-২ এর একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেন। ফ্ল্যাটটির ঠিকানা—বি/২০১, বাড়ি নং ৫এ ও ৫বি (পুরাতন), বর্তমানে ১১এ ও ১১বি (নতুন), রোড নং ৭১, গুলশান-২, ঢাকা-১২১২।

আরও বলা হয়, এ ঘটনায় টিউলিপ ছাড়াও রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সহকারী আইন উপদেষ্টা-১ সরদার মোশাররফ হোসেনকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

নির্বাচনী সামগ্রী ছাপাতে দরকার ৩৬ কোটি টাকার কাগজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নির্বাচনী সামগ্রী ছাপাতে দরকার ৩৬ কোটি টাকার কাগজ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপানোসহ অন্যান্য মুদ্রণ কাজে কাগজ লাগবে লাখ লাখ ৩০ হাজার রিম। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩৫ কোটি টাকার বেশি।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) থেকে এই চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

পরবর্তীতে আরও কয়েকটি বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, বিজি প্রেসের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে, ব্যালট পেপারসহ সকল মুদ্রণ কাজ সম্পন্ন করতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। আমরা বলেছি চার মাস সময় নেন।

এক্ষেত্রে তারা সবকিছু হিসাব করে পরবর্তী বৈঠকে জানাবে বলেও জানান তিনি।  

কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত ডিসেম্বরকে টার্গেট করেই কাগজ কেনা হবে। এক্ষেত্রে তফসিলের আগেই কাগজ কেনা সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।

কেননা, তফসিলের আগেই বেশ কিছু মুদ্রণ সম্পন্ন করতে হয়।

আলোচনার পর ইসি সচিব তাদের চার মাস সময় দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আগামী মে মাস থেকেই কাগজ কেনার কার্যক্রম শুরু হতে পারে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নির্বাচন উপলক্ষে এক লাখ ৬১ হাজার ৭৪ রিম কাগজ ক্রয় করা হয়েছিল। আগামীতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে দুই লাখ ৩০ হাজার রিম কাগজের প্রয়োজন হবে।

বর্তমানে এক লাখ ৬৯ হাজার রিম কাগজ মজুদ রয়েছে। বাকিগুলো কিনতে হবে। এজন্য ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫২৩ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ