ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘটিত বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে ‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে আগামীকাল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচি ঘিরে ইতোমধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চ বানানোর কাজ চলছে।
এদিকে গতকালের কর্মসূচি নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে আয়োজক কমিটি। আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যার পরে এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় অবৈধ দখলদার ইসরাইলের পক্ষ থেকে চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে আজ বিশ্বের বিবেকবান মানুষ সোচ্চার।
ছয় শত কোটি মানুষের চোখের সামনে একটি ভূখণ্ডে প্রতিনিয়ত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো হচ্ছে অবর্ণনীয় সহিংসতা—যেখানে নারী ও শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। বিমান হামলায় ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ মৌলিক অবকাঠামো। অথচ ৫৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, ওআইসি এবং তাদের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক শক্তিও এ মানবিক সংকট মোকাবেলায় এখনো সক্রিয় কোনো উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থ।
এই প্রেক্ষাপটে, ইউরোপ-আমেরিকা সহ বিশ্বজুড়ে শান্তিপ্রিয় মানুষেরা রাজপথে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
বাংলাদেশেও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে গাজায় চলমান নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে "প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ"-এর উদ্যোগে আগামীকাল শনিবার বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে “মার্চ ফর গাজা” অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন
আগামীকালের কর্মসূচি নিয়ে আহমাদুল্লাহর ৫ নির্দেশনা
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম সকল রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সর্বস্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করবেন। এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মাওলানা খতিব আব্দুল মালেক ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে মার্চ ফর গাজায় আগতদের জন্য গেট ও রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে আয়োজক কমিটি। কর্মসূচি দুপুর ২টায় ৫ টি পয়েন্ট থেকে মার্চ শুরু করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েতের সময় বিকাল ৩টা।
মার্চের পথ নির্দেশনা :
প্রথম প্রবেশপথ হবে বাংলামোটর। এই পথে আসা মানুষদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা গেইট (শাহবাগ হয়ে) ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রবেশপথ কাকরাইল মোড়।
এই পথে আসাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেইট (মৎস ভবন হয়ে) ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। তৃতীয় প্রবেশপথ হবে জিরো পয়েন্ট। এই পথে আগতদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি গেট (দোয়েল চত্বর হয়ে) প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। চতুর্থ প্রবেশপথ বখশীবাজার মোড়। এই পথে আগতদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি গেইট (শহীদ মিনার হয়ে) প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া শেষ প্রবেশপথ হিসেবে নীলক্ষেত মোড় দিয়ে আগতদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টি এস সি গেইট (ভিসি চত্বর হয়ে) প্রবেশ করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া বিশেষ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, টিএসসি মেট্রো স্টেশন এদিন বন্ধ থাকবে। সকল পরীক্ষার্থীদের জন্য সকল রাস্তা বিশেষভাবে উন্মুক্ত থাকবে। পরীক্ষার্থীদেরকে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়া এবং যেকোনো প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নেয়ার অনুরোধ রইলো।
সাধারণ দিক নির্দেশনা:
অংশগ্রহণকারীরা নিজ দায়িত্বে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন পানি, ছাতা, মাস্ক সঙ্গে রাখবেন এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখবেন; যেকোনো পরিস্থিতিতে ধৈর্য ও শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন; আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন; রাজনৈতিক প্রতীকবিহীন, সৃজনশীল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করুন; শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা বহনের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে; দুষ্কৃতিকারীদের অপতৎপরতা প্রতিহত করতে সক্রিয় থাকুন। প্রতিরোধ গঠনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা গ্রহণ করুন।
আসুন, আমরা সবাই একত্রিত হই—মানবতার পক্ষে, মজলুমের পাশে। পরিবার, বন্ধু ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করুন। আগামী প্রজন্মকে জানান ফিলিস্তিনের মানুষের যন্ত্রণার কথা, যাতে তারা শিখে কীভাবে মানবতা ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে হয়।