জায়গা খালি করতে দিনমজুরের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
জায়গা খালি করতে দিনমজুরের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে
ছবি : কালের কণ্ঠ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে জায়গা খালি করতে সামেলা বেগম (৪৫) নামের এক হতদরিদ্রের ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম সুভাষ সাহা। তিনি উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের সাতৈর বাজারসংলগ্ন বড়নগর গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য।

এ বিষয়ে আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে হতদরিদ্র সামেলা বেগম বাদি হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সুভাষ সাহা (৬৮) ও তার ম্যানেজার গোবিন্দ্রের (৫৫) নাম উল্লেখ করে আরো ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বোয়ালমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

ভুক্তভোগী সামেলা বেগম (৪৫) উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শেলাহাটি গ্রামে রেলের জায়গায় বসবাস করেন এবং সাতৈর বাজারের একটি বেসরকারি ব্যাংকে রান্নার কাজ করেন বলে জানা গেছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সামেলা বেগম স্বামী সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর শেলাহাটি গ্রামের রেলওয়ের একটি জমিতে টিনের একটি ছাপরা ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলেন। পাশেই আওয়ামী লীগ নেতা সুভাষ সাহার জমি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি রয়েছে।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, হতদরিদ্র সামেলা বেগম যেখানে বসত করেন সেই জমি পাওয়ার জন্য সুভাষ সাহা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। বেশ কিছুদিন ধরে সুভাষ সাহা ও তার লোকজন বিভিন্ন সময় বসতবাড়ি ভেঙে দেওয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে তার বসতঘরটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের শেলাহাটি গ্রামে ঘোষপুর মৌজায় আওয়ামী লীগ নেতা সুবাষ সাহার নিজস্ব ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লীজ নেওয়া জমি রয়েছে।

সেই জমির দক্ষিণ পাশের চন্দনা-বারাশিয়া নদের পাড়ে সুবাষ সাহার কাছ থেকে কিনে ৬-৭টি পরিবার ঘর তুলে বসবাস করছে। আর উত্তরে রেলওয়ের জায়গায় সামেলা বেগমসহ তিনটি পরিবার বসবাস করেন। সবমিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও রেলওয়ের জমিতে ভূমিহীনসহ ওই এলাকায় ২৯-৩৫টি পরিবার বসবাস করছে।

ভুক্তভোগী সামেলা বেগম বলেন, আমি তো বাড়ি দুইদিন যাবত রান্না করি না, তাহলে আগুন লাগবে কীভাবে? তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। 

তিনি বলেন, সুবাষ সাহার জায়গার সামনে আমরা রেলের জায়গা থাকি।

আমি একটি ব্যাংকে পাহারা দেওয়ার কাজ করার জন্য বাড়ি থেকে চলে আসি। রাতে মানুষের মাধ্যমে জানতে পারি আমার বাড়ি আগুন লেগেছে। 

তিনি আরো বলেন, ঈদের সময় মানুষের কাছ থেকে আনা যাকাতের টাকা, মানুষের কাছ থেকে চেয়ে আনা চাল সব পুড়ে গেছে। আগুনে ঘরে থাকা যাবতীয় জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। এখন আমি সর্ব হারিয়ে পথে বসে গেলাম।

রেলের জায়গায় বসবাসকারী সামেলা বেগমের মেয়ে সেলিনা বেগম বলেন, সুভাষ সাহার লোকজন বিভিন্ন সময় এসে বসত বাড়ি ভেঙে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। তারা জায়গা খালি করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। হঠাৎ আগুনে আমাদের ঘর পুড়ে গেছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় বসবাসকারী হাবিল বিশ্বাস বলেন, সুভাষ সাহার লোকজন বিভিন্ন সময় তার ঘর বাড়ি ভেঙে নেওয়ার হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সুভাষ সাহা বলেন, আমার ব্যক্তিগত জায়গার সামনে আমার লিজ নেওয়া রেলের জায়গায় ওই মহিলা থাকে। তিনি স্থানীয় জিয়া মেম্বারের ভাইয়ের স্ত্রী। ওই মেম্বারের মাধ্যমে কিছু টাকা দিয়ে আমি তাকে (সামেলা বেগম) ঘর করার জন্য সহযোগিতা করেছি। তিনি সেখানে ঘর উঠিয়ে বসবাস করেন। 

দিনমজুর সামেলা বেগমের বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সুবাষ সাহা বলেন, আমি টাকা দিয়ে তাকে সহযোগিতা করলাম, তাহলে আমি ঘর পুড়াবো কেন? আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য কিছু লোকজন ঘর পুড়িয়ে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি ওসি সাহেবকে বলেছি, আসল ঘটনা বের করার জন্য।

ঘোষপুর ইউনিয়নের শেলাহাটি সাবেক ইউপি সদস্য খরিলুর রহমান বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে সহায়তা করি। সামেলা বেগম কারো ব্যক্তিগত জায়গায় নয়, রেলের মালিকানাধীন জায়গায় বসবাস করে আসছিলেন।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালমারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, বাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মিছিলে না আসায় কারখানা ভাঙচুর, ছুটি ঘোষণা

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
শেয়ার
মিছিলে না আসায় কারখানা ভাঙচুর, ছুটি ঘোষণা
সংগৃহীত ছবি

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে না আসায় প্রায় ৩০টি কারখানা ভাঙচুর করেছেন শ্রমিকরা। এই ঘটনায় শনিবার (১২ এপ্রিল) মহাসড়কের দুই পাশের অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

শনিবার বিকেল ৪টার দিকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস থেকে মিছিল শুরু হয়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে টঙ্গীর মিলগেট এলাকা হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুনরায় গাজীপুরের দিকে ফিরে যায় মিছিলটি।

 

আরো পড়ুন
গরমে দীর্ঘক্ষণ দুধ ভালো রাখার উপায়

গরমে দীর্ঘক্ষণ দুধ ভালো রাখার উপায়

স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর থেকে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে একটি মিছিল হয়। যাতে অংশ নেয় বিভিন্ন কারখানার সাধারণ শ্রমিকরা। মিছিলটি ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন কারখানার সামনে অবস্থান নিলে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ সময় বেশকিছু কারখানা ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা।

 

গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, মহাসড়কের দুই পাশের শতাধিক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ৩০টি কারখানায় ইট পাটকেল ছুঁড়ে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা।

আরো পড়ুন
‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের দণ্ডাদেশ সরকারের জন্য লজ্জার’

‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের দণ্ডাদেশ সরকারের জন্য লজ্জার’

মন্তব্য

সখীপুরে যুবলীগের ২ কর্মী গ্রেপ্তার

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
শেয়ার
সখীপুরে যুবলীগের ২ কর্মী গ্রেপ্তার
সংগৃহীত ছবি

সখীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার অভিযোগে যুবলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১২ এপ্রিল) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার হলেন টাঙ্গাইল জেলা যুবলীগের কর্মী ও টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের মেয়ের জামাতা শেখ ফরিদ (৩০) এবং সখীপুর উপজেলা যুবলীগের সদস্য আতিক (৩৫)। 

আরো পড়ুন
চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় মামলা

চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় মামলা

পুলিশ জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র মিছিলে হামলা মামলার আসামি আতিককে শনিবার সকালে এবং টাঙ্গাইল সদর থানায় করা মামলার আসামি শেখ ফরিদকে বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলা মামলায় দুই আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে আতিককে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি শেখ ফরিদকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে রবিবার সকালে আদালতে পাঠানো হবে।

আরো পড়ুন
রমনা লেকে ফুল ভাসিয়ে ‘ফুল বিঝু’ উৎসব পালন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা

রমনা লেকে ফুল ভাসিয়ে ‘ফুল বিজু’ উৎসব পালন করলেন পার্বত্য উপদেষ্টা

মন্তব্য

নাঙ্গলকোটে চিকিৎসাধীন রোগীর ওপর হামলা, আটক ২

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
নাঙ্গলকোটে চিকিৎসাধীন রোগীর ওপর হামলা, আটক ২
ছবি : কালের কণ্ঠ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে চিকিৎসাধীন দুই রোগীসহ ৪ জনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পাটোয়ার গ্রামের ইমরান হোসেন ও ফরিদের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

হামলার ঘটনায় ওই গ্রামের কাজী মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে শুক্রবার রাতেই থানায় ২৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ পাটোয়ার গ্রামের ফরিদ ও শাকিলকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

আসামিরা হলেন, উপজেলা হেসাখাল ইউপির পাটোয়ার গ্রামের ইমরান হোসেন (২৫), ফরিদ আহমেদ (৪০), কাজী রোটন (৩৬), কাজী সাকিব (২৫), সিয়াম (১৯), কাজী আনোয়ার (৪৫), কাজী জয়নাল আবেদীন (৫৫), কাজী আব্দুল মান্নান (৬২), শাকিল (২২), হাসান (২৭), হাসিব (২০), সাব্বির (১৯), সানিম (২০), কাজী আনিসুল হক (৫২), পলাশ (২৩), কাজী সোহাগসহ (২৮) অজ্ঞাত ১২ জন।

হামলায় আহতরা হলেন, হেসাখাল ইউনিয়নের পাটোয়ার কাজী বাড়ির নাছির উদ্দিনের ছেলে কাজী আশিক (১৬), কাজী মানিক মিয়ার ছেলে কাজী মেহেদী (২১) এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডাক্তারের সহকারী জাকির ও সুজন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার সালাউদ্দিন আজগর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার বিকেলে কয়েকজন যুবক জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা দুই রোগীর ওপর হামলা ও মারধর করে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যায়। তাদের বাধা দিলে আমার দুই সহকারীকেও মারধর করে তারা।

বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নাঙ্গলকোট থানার ওসিকে অবহিত করি। হাসপাতালে ঢুকে এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাটোয়ার কাজী বাড়ির ফরিদ ও জুলফিকারের সহযোগীরা পুকুর থেকে মাটি বিক্রি করে ওই মাটি আনিছ মিয়ার বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ায় তিনি বাধা দেন। এ নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হন।

এর জের ধরে পুনরায় হাসপাতালে এসে হামলা করে তারা।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে ফজলুল হক বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। দুই আসামিকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
 

মন্তব্য

মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লোকসানের মুখে কৃষকরা

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লোকসানের মুখে কৃষকরা
মিষ্টি কুমড়া। ছবি : কালের কণ্ঠ

জালিয়ার হাওরের তিন একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের চারিতলা গ্রামের কৃষকরা। বাজার মূল্য কম থাকায় এবং ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় চরম হতাশায় আছেন তারা । এ বছর উৎপাদন খরচ তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা।

গত বছর লাভ হওয়ায় স্থানীয় সোনাতন মিয়া (৫৫) নামের এক কৃষক তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন।

কিন্তু এবার ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। তার মতো অন্তত অর্ধশতাধিক কৃষক মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন।

আরো পড়ুন
পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হবে ‘মেগা প্রকল্প’

পাগলা মসজিদে দানের টাকায় হবে ‘মেগা প্রকল্প’

কৃষকদের অভিযোগ, লোকসানে পড়ার প্রধান কারণ হল হাওরাঞ্চলের অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা। তারা বলেন, হাওরাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হলেই কেবল কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে এবং বদলে যাবে হাওরাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র।

উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, উপজেলায় এ বছর শীত মৌসুমে ৭৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি জাতীয় ফসলের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। তবে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, মিষ্টি কুমড়ার চাষ আরো বেশি পরিমাণ জমিতে হয়েছে।

আরো পড়ুন
ইনকোর্স ও ভাইভা নিয়ে ভয়াবহ অবস্থা চলছে : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য

ইনকোর্স ও ভাইভা নিয়ে ভয়াবহ অবস্থা চলছে : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য

স্থানীয় হারুলিয়া গ্রামের মিষ্টি কুমড়া চাষি মাসুদ আলী বলেন, 'এ বছর আমি ১৫ কাঠা (দেড় একর) জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে ছিলাম।

সময়, সার ও ঔষধ সবই দিয়েছি। তবুও গতবারের তুলনায় ফলন কম হয়েছে। দামও কম। গত বছর এই মিষ্টি কুমড়া ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। কিন্তু এবার তা বিক্রি হচ্ছে ৬-৭ টাকা কেজিতে।
তাও আবার পাইকার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এবার আমরা আমাদের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া নিয়ে খুব বেকায়দায় আছি।'

স্থানীয় চারিতলা গ্রামের কৃষক আবু তাহের বলেন, 'আমি জালিয়ার হাওরের সত্তর শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় মাথায় করে এবং বাইসাইকেলে বা হ্যান্ডট্রলির মাধ্যমে কুমড়া পরিবহন করে সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে রাখতে হচ্ছে। কৃষি পণ্য পরিবহনে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয় এবং ন্যায্য দাম পাচ্ছি না।'

আরো পড়ুন
জাবিতে ফ্রি ‘হেপাটাইটিস বি’ ভ্যাকসিনেশনের আয়োজন ছাত্রদলের

জাবিতে ফ্রি ‘হেপাটাইটিস বি’ ভ্যাকসিনেশনের আয়োজন ছাত্রদলের

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, হাওর এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নতকরণের পাশাপাশি এ বছর উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়ার বাজারজাতকরণে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করে স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল মিল্কী বলেন, 'আমাদের হাওরাঞ্চল শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত। তাই এখানকার কৃষকদের স্বার্থে হাওর এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা জরুরি। কারণ কৃষক বাঁচলেই আমরা বাঁচব।'

আরো পড়ুন
যে ৫ অভ্যাসে ওজন বাড়ে

যে ৫ অভ্যাসে ওজন বাড়ে

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ূন দিলদার বলেন, 'মিষ্টি কুমড়ার আবাদ দিন দিনই বাড়ছে। তবে এ বছর পরাগায়নের সময় মৌমাছি কম থাকায় মিষ্টি কুমড়ার ফলন কিছুটা হয়েছে। কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারেন এবং তারা যাতে লোকসানে না পড়েন, সেই জন্য আমরা পাইকারদের সঙ্গে কৃষকদের একটা সম্পর্ক সৃষ্টি করে দেওয়ার চেষ্টা করব।'

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ