ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

বগুড়ার শেরপুরে মাদরাসা শিক্ষিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেয়ার
বগুড়ার শেরপুরে মাদরাসা শিক্ষিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার শেরপুরে এক মাদরাসা শিক্ষিকার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে শহরের রামচন্দ্রপুর পাড়ার নিজ বাসার বারান্দায় গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। 

ওই শিক্ষিকার নাম মোছা. মাহমুদা খাতুন (৩৫)।

তার বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার উছলবাড়ীয়া গ্রামে। তবে তিনি স্বামী সোহেল রানার সঙ্গে শেরপুর শহরের রামচন্দ্রপুর পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

ফজরের নামাজের সময় স্বামী সোহেল রানার ঘুম থেকে উঠে দেখেন স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পাশে নেই। শয়নকক্ষ থেকে বের হয়েই বারান্দার তীরের সঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে লাশ নামান।

শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) জয়নাল আবেদীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং নিহতের লাশ উদ্ধার করেন।

পাশাপাশি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে নিহতের লাশ বগুড়ার শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই তার মৃত্যুর কারণ জানা ও বলা সম্ভব হবে। 

এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
শেয়ার
শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল গ্রেপ্তার
ফাইল ছবি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে ডিবি পুলিশের সহায়তায় কমলগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরো পড়ুন
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুলশাখার শিক্ষক

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুলশাখার শিক্ষক

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমলগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আজ বুধবার দুপুরে তাকে মৌলভীবাজার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’

মন্তব্য

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে পুলিশসহ ৩ মাদক কারবারি আটক

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও রামু প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও রামু প্রতিনিধি
শেয়ার
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে পুলিশসহ ৩ মাদক কারবারি আটক
ছবি: কালের কণ্ঠ

কক্সবাজারের রামুতে ইয়াবাসহ এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।

কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ার একটি বাসায় এই অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্যসহ তিনজন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুলশাখার শিক্ষক

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুলশাখার শিক্ষক

 

অভিযানে আটককৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার পাঙ্গাস গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ খানের ছেলে রামু থানার ওয়ারলেস অপারেটর জাহিদুল ইসলাম (৩৩), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কচুয়াই থানার কমল মুন্সির হাট এলাকার বাবুল চৌধুরীর ছেলে অভিজিৎ চৌধুরী (৩৫) ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার বাইন্যারহাট, ডাবুয়া এলাকার নান্টু চৌধুরীর ছেলে পূষন চৌধুরী (৩৭)।

কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘পুলিশ সদস্য জাহিদুল ইসলাম মন্ডলপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় ইয়াবা কারবার চালিয়ে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বাড়িতে সামনে পার্কিং করা প্রাইভেট কার থেকে ৭ হাজার ৫০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’

মন্তব্য

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

    প্রত্যাবাসন নিয়ে বিভ্রান্তির শংকা স্থানীয় রাজনীতিবিদরাও উদ্বিগ্ন
তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার
তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার
শেয়ার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
ছবি: কালের কণ্ঠ

যে মুহূর্তে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের একটি সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে চলেছে, এমন সময়েই ক্যাম্পে নতুন করে ঘর ( রোহিঙ্গা শেড) নির্মাণের কাজও চলছে। ক্যাম্পে নতুন ঘর নির্মাণের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে আবারও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। নতুন আবাসনের ব্যবস্থায় একদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী যেমন ক্ষোভে ফুঁসছে, তেমনি প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

নতুন ঘর নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে উদ্বিগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দারা।

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত সীমান্তবর্তী উপজেলা দুটির সাত লক্ষাধিক বাসিন্দা এমনিতেই সেখানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংখ্যালঘু হিসেবে নানা দুর্ভোগে বসবাস করে আসছেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দাবি নিয়ে প্রায়ই স্থানীয়রা নানা কর্মসূচি নিয়ে রয়েছেন সোচ্চার। এমন সময়ে নতুন ঘরের ব্যাপারটি লোকেমুখে চাওর হয়ে পড়েছে।

নতুন ঘর নির্মাণের বিষয়টি আরো বেশি আলোচনায় এসেছে এর সুনির্দিষ্ট কারণ না জানানোর জন্য।

এমনকি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে রয়েছেন।

'সওয়ার' নামের যে এনজিওটি ক্যাম্পে নতুন ঘর নির্মাণের কাজ করছে তারা বলছে, পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য এগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এদিকে রোহিঙ্গা শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার- আরআরআরসি সংবাদকর্মীদের বলেছেন, 'নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্যই নতুন ঘর।'

আবার গতকাল সকালে অতিরিক্ত আরআরআরসি মো শামসুদ দৌজা কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন ভিন্ন কথা।

তিনি বলেন, 'যা করা হচ্ছে তা কাঁটাতার দেওয়া বনভুমি ক্যাম্প এরিয়ায়। তাও সম্ভবত অনেক আগের টেন্ডারের কাজ এগুলো।' তবে কি জন্য ঘরগুলো করা হচ্ছে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

এদিকে স্থানীয় লোকজন বলছেন, 'গত কয়েক মাসে প্রচুর রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছেন। তাদের জন্য এসব করা হচ্ছে।

'

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ক্যাম্পে নতুন করে আবাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আবার পিছুটান পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এমনকি প্রত্যাবাসনের পুরো ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি হতে পারে বিভ্রান্তি।' 

তিনি বলেন, 'যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন এবং মায়ানমার সরকারও এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরানোর বিষয়ে ইতিবাচক, সেখানে নতুন করে শেড নির্মাণের আর কোনো দরকার থাকার কথা নয়।'

উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরোয়ার জাহান চৌধুরী ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণের ঘটনাটিকে 'প্রত্যাবাসন বিরোধি' কাজ কিনা তা সরকারি ভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'কোনো কোনো মহল সরকারের প্রত্যাবাসন ভণ্ডুল করতে নানা কৌশল এঁটে চলেছে।'

অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর কক্সবাজার জেলা শাখার আমির মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এ মুহূর্তে ক্যাম্পে নতুন ঘর নির্মাণের ফলে প্রত্যাবাসনের দিকে এগিয়ে যাওয়াকে ব্যহত করবে। সেই সাথে আমরা শঙ্কিত, মায়ানমার থেকে নতুন করে আরো রোহিঙ্গা এপারে পাড়ি দিতেও উৎসাহিত হতে পারে।' 

তিনি বলেন, 'আর কোনো ভাবেই বিলম্ব নয়, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেই হবে।'

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের সঙ্গে লাগোয়া বন বিভাগের পাহাড়ে চলছে এই নতুন করে ১২২টির অধিক শেড নির্মাণের কাজ। শেডগুলো নির্মাণ ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন বনবিভাগের সঙ্গে শেয়ারের ভিত্তিতে সেখানে সামাজিক বনায়ন করেছিল। রোহিঙ্গা ঢলের সময় (২০১৭) কিছু বনভূমিতে শেড নির্মিত হয়েছিল। বাদবাকি বনভূমিতে গাছপালা ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল আবসার নামের সামাজিক বনায়নের একজন উপকারভোগি কালের কণ্ঠকে জানান, 'যেখানে এখন শেডগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে সেটি ২০০৮ সালের সৃজিত বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের জায়গা। সেখানে জলাধারও ছিল। উক্ত জলাধার ভরাট করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। শেডগুলো তৈরি করছে ' সাওয়াব' নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। দেড়শ রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য এগুলো নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।' এসব বিষয় নিয়ে লিখিতভাবে উপকারভোগিরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
 
স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী আকস্মিক রোহিঙ্গা শেড নির্মাণের বিষয়টিকে 'সন্দেহের' চোখে দেখছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি এলাকার একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। অথচ আমাকেও না জানিয়ে রাতারাতি পাহাড় ও শত শত গাছ কেটে এনজিওটি শেডগুলো নির্মাণ করছে।'

তিনি বলেন, 'সরকারি পাহাড়ে এনজিওটি গাছপালা ও পাহাড় কেটে শেড তৈরির পাশাপাশি সেখানে 'আমিনা ভিলেজ' লিখে একটি সাইনবোর্ডও টাঙ্গিয়েছে। জমির মালিক বন বিভাগ আর সেখানে নামকরণ হচ্ছে 'আমিনা ভিলেজ' নামে- এ টনাটি রিতীমত রহস্যময় বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

সওয়াব নামের এনজিওটির কো-অর্ডিনেটর আতাউল্লাহ বলেন, 'যথারীতি রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শেডগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। পাহাড় ও গাছ কাটার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি সাইনবোর্ড প্রসঙ্গে বলেন, কোনো একজনের দানের টাকায় কাজ করার কারণেই এটি লাগানো হয়েছে। তবে অনুমতি রয়েছে কিনা তা জানাননি তিনি।'

মন্তব্য
মাউশির বিধি লঙ্ঘন

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুলশাখার শিক্ষক

তামজিদ হাসান তুরাগ, উত্তরাঞ্চল
তামজিদ হাসান তুরাগ, উত্তরাঞ্চল
শেয়ার
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুলশাখার শিক্ষক
ছবি: কালের কণ্ঠ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (মাউশি) পরিপত্র লঙ্ঘন করে স্কুল শাখার সহকারী শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে। এমন ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজে।

সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যোগ্য কলেজ শাখার প্রভাষক থাকা স্বত্বেও প্রতিষ্ঠানটিতে ক্ষমতার বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মনিরুজ্জামান সরকার। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে।

তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দুনীতির নানা অভিযোগ দিলেও মেলেনি সাড়া। তদন্ত কিমিটি হলেও অভিযোগকারীরা জানেন না তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে।

আরো পড়ুন
কফি হাউজের সামনে পিটুনির শিকার সেই নারীকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

কফি হাউজের সামনে পিটুনির শিকার সেই নারীকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

 

২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলেমান খান সাক্ষরিত এক পরিপত্রে বলা হয়, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় হয় তাহলে সহকারী প্রধান শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ/ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার অর্পণ করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত জ্যেষ্ঠ প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপকদের মধ্যে থেকে জোষ্ঠ্য প্রভাষক বা সহকারী অধ্যাপকদের দায়িত্ব প্রদান করবেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।

এই পরিপত্র জারি হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন মনিরুজ্জামান সরকার। তিনি ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে স্কুল শাখার সহকারী শিক্ষক হয়েও প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সব মিলিয়ে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় ৬ বছর ৮ মাস ধরে।

জানতে চাইলে বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি ২০১৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছি।

পরিপত্রের খ নম্বর ক্লোজে বলা আছে যে গ্রেড ৬-এর জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানে গ্রেড–৬ এর শিক্ষক না থাকায় আমি দায়িত্ব পালন করছি। প্রতিষ্ঠানের কমিটি নেই। আমরা কমিটি করার জন্য আবেদন করেছি।’

আরো পড়ুন
দেশজুড়ে বৃষ্টি, কোথাও শিলাবৃষ্টির আভাস

দেশজুড়ে বৃষ্টি, কোথাও শিলাবৃষ্টির আভাস

 

প্রতিষ্ঠানটির অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাউসির পরিপত্রের বিধি লঙ্ঘন করে বেআইনিভাবে মনিরুজ্জামান সরকার দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তার প্রতিবাদ করে আসছি। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করে আসছি কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্কুল শাখার শিক্ষক হয়েও তিনি কীভাবে প্রায় ৭ বছর ধরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন তা আমাদের বোধগম্য হয় না। যেখানে পরিপত্রে বলা আছে- কলেজ শাখার সিনিয়র প্রভাষক এই দায়িত্ব পালন করবেন।’

তদন্ত কমিটি হয়েছে কিন্তু প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম নিয়ে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখে তদন্ত কার্যক্রর্মের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানের হল রুমে ৪ শিক্ষার্থীর নেওয়া হয় সাক্ষাৎকার। তদন্ত প্রক্রিয়া ঠিক শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত দেওয়া হয়নি কোনো তদন্ত প্রতিবেদন। ওই তদন্ত কমিটিতে আরো ছিলেন ফুলবাড়ি উপজেলা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।

আরো পড়ুন
ফটিকছড়িতে ব্যবসায়ীর পরিবারের ওপর হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ

ফটিকছড়িতে ব্যবসায়ীর পরিবারের ওপর হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ

 

তদন্তে সাক্ষাৎকার দেওয়া শিক্ষার্থী সফিউল হায়দায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা চার জন শিক্ষার্থী ওই তদন্ত কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে কিছুই জানতে পারিনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে কনক (ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা) ভাইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে কিন্তু তিনি কোনো সদউত্তর দেননি। বলেছেন আবার তদন্ত হবে।’

জানতে চাইলে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হ্যাঁ, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা একটি তদন্ত কমেটি করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছি উপজেলা নির্বাহী স্যারের কাছে। কোনো কারণে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়নি।’

আরো পড়ুন
পহেলা বৈশাখের মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পীর বাড়িতে আগুন

পহেলা বৈশাখের মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পীর বাড়িতে আগুন

 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা একটি তদন্ত কমিটি করেছি, সেই কমিটি তদন্তও করেছে। তারা প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনিয়মের প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি। তবে তিনি যে স্কুল শাখার শিক্ষক হয়েও দীর্ঘদিন ধরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন সেটি সম্পর্কে আমরা অবগত। তবে বিষয়টি নিয়ে একটি মামলাও চলমান। আর স্কুলের কোনো কমিটিও নেই যে তারা নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ করবে। কমিটি গঠন নিয়ে বারবার তাগাদাও দেওয়া হয়েছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ