<p>ঢাকা মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদের গুলশান জোনের উদ্যোগে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এবং আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয। </p> <p>শুক্রবার (২০ ‍ডিসেম্বর) বিকালে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিপরীতে হাতিরঝিলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। </p> <p>আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ডাকসু সাবেক ভিপি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সভার  শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে স্মৃতিচারণ করেন।</p> <p>নুরুল হক নুর বলেন, সেদিন তার মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলাম, সেখানে জুলাই বিপ্লবে হাত-পা হারানো কয়েকজনের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমাদের অফিসে অনেকে আসে, যাকে জিজ্ঞেস করি কেউ চিকিৎসা ও সহযোগিতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে না। যাদের রক্ত, হাত-পা, চোখ হারানোসহ ত্যাগের কারণে আজকের এই পরিবর্তন, অন্তর্বর্তী সরকার উপদেষ্টা পরিষদ সেই বিপ্লবীদের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে না ,সহযোগিতা করা হচ্ছে না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য ও দুঃখজনক। বার বার আহত, নিহতদের সহযোগিতা ও ক্ষতিপূরণের কথা বললেও সরকারের কানে পানি যাচ্ছে না। সরকারকে স্থিতিশীল করার জন্য শুরুতে দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপকে আন্দোলন না করতে আমরা নিষেধ করেছি, অনেকেই থামিয়েছি। কিন্তু সরকার এখন আমাদের কথা শুনছে না। তাই আমরা পরিস্কার বলতে চাই ডিসেম্বরের মধ্যে আহতদের অর্ধ কোটি ও নিহতদের ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া না হলে জানুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করা হবে। উপদেষ্টাদের মন্ত্রণালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আমরা বার বার বলেছি বিপ্লবের পরে প্রতি বিপ্লবের ঝুঁকি থাকে, বিপ্লব নস্যাৎ করতে অনেকে ষড়যন্ত্র করে, জাতীয় সরকার গঠন করে এ সংকট মোকাবেলা  করুন। তারা পরিচিত সার্কেল, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছে। যা গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজনদের হতাশ করেছে। ৪ মাসেও দেশে স্থিতিশীলতা আসেনি। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে সরকার, রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে বিভাজন শুরু হয়ে গেছে। জাতীয় সরকার ছাড়া এ সরকার ৬ মাসও টিকবে না।</p> <p>গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে উপদেষ্টা পরিষদে সকল বিপ্লবীদের প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মরে যাওয়া আন্দোলনকে জীবিত করেছে। যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলন না হলে হাসিনার পতন হতো না। </p> <p>জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে সর্বপ্রথম হল ছাড়া করেছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় মূল্যায়িত হলো না। এটা কখনো বিপ্লবের চেতনা হতে পারে না। উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের শুরুতেই ইনক্লুসিভ সমাজব্যবস্থা হোঁচট খেয়েছে। আন্দোলন কি ২-১টি সংগঠন করেছে? বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ, জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলো, সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতা করে নাই? কিন্তু আজকে সবার অবদান অস্বীকার করে একটি গোষ্ঠী নিজেদের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার ধারক বাহক দাবি করে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরদের সহযোগিতা নিয়ে কিংস পার্টি গঠনের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু সরকারের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে একটি পার্টি গঠন জনগণ গ্রহণ করবে না। এখন পার্টি গঠনে সময় ব্যায়ের চেয়ে রাষ্ট্র সংস্কার বেশি জরুরি।</p> <p>ওবায়দুল পালিয়ে গেল, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারের একজনও আটক হয়নি। এখনো শহীদ পরিবার ক্ষতিপূরণ পায়নি, শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা তৈরি হয়নি। তাহলে একাত্তরের মতো ২৪-এর সঠিক ইতিহাসও জাতি জানবে না? দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক নাই, চাঁদাবাজি, মারামারি, খুনোখুনি চলছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাক চেয়ে আছে।</p> <p>আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মিজানুর রহমান ভূইয়া সভাপতি গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর, বক্তব্য রাখেন মাহফুজুর রহমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, মামুন সভাপতি যুব অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর, গুলশান থানার আহবায়ক রফিকুল ইসলাম, গুলশান থানার সদস্য সচিব আমিনুর ইসলাম, বাড্ডা থানার সভাপতি রাসেল ফকির প্রমুখ।</p>