<p>ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠছে পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়ক। উচ্ছৃঙ্খল বাইকারসহ যানবাহনের বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা আর প্রাণহানি ঘটছে। বছরখানেক আগে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কারণে বাইকের রেস খেলা ও দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিল। অভিযান বন্ধ হওয়ার পর আবারও শুরু হয়েছে বেপরোয়া গতিতে বাইক চলাচল। পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কজুড়ে পুলিশের বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট থাকলেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না উচ্চগতির কারণে দুর্ঘটনা।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে ৩০০ ফুট সড়কে দুর্ঘটনায় ৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। শুধু ২০২৪ সালে নিহত হয়েছে ১২ জন। অন্যদিকে গত তিন দিনে নিহত হয়েছে পাঁচজন। ৩০০ ফুট এলাকায় অবৈধ গাড়ি পার্কিং, লাইসেন্সবিহীন গাড়িচালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো ও হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।</p> <p>রূপগঞ্জ থানা পুলিশ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে পূর্বাচলের ৩০০ ফুট সড়কে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১১৯টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এ ছাড়া জরিমানা আদায় করা হয়েছিল দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা। সূত্রটি আরো জানায়, গত বছর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০০ গাড়িকে অতিরিক্ত গতির জন্য সতর্ক করে দিয়েছিল। ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে ১৩টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। পাশাপাশি ১৪টিকে রেকার দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া এবং পাঁচটিকে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়েছিল। অভিযান বন্ধ থাকার কারণে মোটরসাইকেল ও যানবাহনের বেপরোয়া গতি আবার বেড়ে গেছে।</p> <p>রূপগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ সড়কে গত ১৭ ডিসেম্বর সুজনা ও তার বন্ধু কাব্য মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন। ১৮ ডিসেম্বর ভূঁইয়া বাড়ি সেতুর সামনে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিপন ও রউফ নামে দুজন নিহত হন। সর্বশেষ ১৯ ডিসেম্বর রাতে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী বুয়েটের ছাত্র মুহতাসিম মাসুদ নিহত হয়েছেন। সব দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এই সড়কে সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯০ শতাংশই মোটরসাইকেলের।</p> <p>রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, ‘চেকপোস্টের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যথেষ্ট পরিমাণে নেই। ফলে একসঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন বাইকার আসছে, তাদের থামানোও সম্ভব হচ্ছে না। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা যানবাহনের চাপ কমে যাওয়ায় উচ্চ গতি ও স্টান্টবাজিতে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে।’</p> <p>নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘সড়কটা অনেক বড়। সড়কটার একটা অংশ দেখে ডিএমপি। আরেকটা অংশ রূপগঞ্জ থানা। সড়কে চেকপোস্ট রয়েছে। তার পরও সম্ভব হচ্ছে না। বেশির ভাগ দুর্ঘটনাগুলো বাইকারদের। শিগগিরই সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।’</p>