বগুড়ায় জামায়াতকর্মী কাবিল উদ্দিনকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বুধবার (৯ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের গোসাইবাড়ী গ্রামের জামায়াতকর্মী কাবিল উদ্দিনকে দুর্বৃত্তরা মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘নিহত জামায়াতকর্মী কাবিল উদ্দিনের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন যে তাদের এলাকার দুর্বৃত্তদের অন্যায় ও অসৎ কাজে বাধা দেওয়ার কারণেই দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
জামায়াতকর্মী কাবিল উদ্দিনের হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।’
আরো পড়ুন
দু-এক বছরের মধ্যে ১৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে : বিডা চেয়ারম্যান
তিনি আরো বলেন, নিহত কাবিল উদ্দিনকে শহীদ হিসেবে কবুল করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে দোয়া করছি আল্লাহ তাদের এ শোক সহ্য করার তাওফিক দান করুন, আমিন।
এদিকে কাবিল উদ্দিন নামের ওই জামায়াতকর্মীকে হত্যার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের গোসাইবাড়ী বটতলা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার নাম গোলাম আজম (২৮)। তিনি কুসুম্বী ইউনিয়নের গোসাইবাড়ী কলোনি গ্রামের সহিদুল ইসলাম প্রামাণিকের ছেলে এবং একই ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
এর আগে নিহতের বাবা শাহজাহান আলী বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
খুনের শিকার কাবিল উদ্দিন পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। স্থানীয়দের দাবি, প্রতিবেশী সজিবের পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়া এবং বাধা দেওয়ার জের ধরেই কাবিল উদ্দিনকে খুন করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আফছার আলী, আব্দুল হাইসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, কাবিল উদ্দিন সাধারণ নিরীহ একজন মানুষ। তার কোনো শক্র ছিল না। তিনি সব সময় মানুষকে ভালো কাজের জন্য আহ্বান জানাতেন।
সেটিই তার কাল হলো। বেশ কিছুদিন আগে তার প্রতিবেশী বেল্লাল হোসেন বিদেশে যান। আর এই সুযোগ নেন বেল্লালের ছোট ভাই সজিব। সে তার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। ঘটনাটি জানার পর তাদের দুজনকেই ভালো হওয়ার উপদেশ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সজিব ও তার লোকজন। এমনকি পরিকল্পনা অনুযায়ী মোবাইলে ডেকে নিয়ে তাকে হত্যা করা হলো বলে জানান তারা।
নিহত কাবিল উদ্দিনের স্ত্রী শাপলা খাতুন জানান, তার স্বামীর কোনো দোষ ছিল না। তাই যারাই তার স্বামীকে খুন করেছে, তাদের বিচার ও ফাঁসি দেওয়ার দাবি করেন তিনি।
শেরপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত গোলাম আজম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনা সম্পর্কে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এ জন্য সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে বুধবার আসামিকে বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।