নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল
সংগৃহীত ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা কখনো বলিনি, আগে নির্বাচন পরে সংস্কার। এটি মিথ্যা ও ভ্রান্ত ধারণা। এটাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।’

বুধবার (২ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুলের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো :

‘ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলে এসেছি আমরা। নির্বাচনব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থার সংস্কার করেই আমরা নির্বাচনের কথা বলে আসছি। আমরা কখনো বলিনি আগে নির্বাচন পরে সংস্কার। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করার জন্য ন্যূনতম যে সংস্কার, তা করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলো স্বৈরাচারী হয়ে উঠলে তাদের অবস্থা আওয়ামী লীগের মতোই হবে। স্বৈরাচারী হলে জনগণই তাদের ক্ষমতা থেকে বের করে দেয়। গণতন্ত্রই সর্বোত্তম ব্যবস্থা।’

গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হলো ভিন্নমত থাকবে।

প্রতিটি রাজনৈতিক দলের যদি একই মত থাকে, তাহলে তো একই হয়ে গেল। একেক  দলের একেক মত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে। জনগণ বেছে নেবে কোনটি তাদের জন্য উপযোগী। এ কারণেই তো নির্বাচন। নির্বাচন কেন? আমি আমার ম্যানুফ্যাকচার নিয়ে জনগণের কাছে যাব, আমি যে কাজগুলো করতে চাই, আমার বিভিন্ন পলিসি নিয়ে আমি জনগণের কাছে যাব, দিস ইজ মাই পলিসি, আপনারা আমাকে ভোট দিয়েন।
অন্য দলগুলো তাদের পলিসি নিয়ে যাবে। যেখানে জনগণ যাদের ভোট দেবে, তারাই সরকার গঠন করবে, তারাই পার্লামেন্ট গঠন করবে। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্র।

আমরা বলছি যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য যে ন্যূনতম সংস্কারগুলো করা দরকার, সেগুলো করতে হবে। যেমন নির্বাচনব্যবস্থা-কেন্দ্রিক যে সংস্কার। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা, এটা করতে হবে। দুই নম্বরে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা, তিন নম্বরে জুডিশিয়াল রিফর্ম (বিচার বিভাগীয় সংস্কার)। এই তিনটি একেবারে মাস্ট করতে হবে। সরকার ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। সেই ছয়টি কমিশনের মধ্যে বেসিক ইম্পরট্যান্ট এই তিনটি। এই তিনটি তো আমরা করতে বলেছি। এবং ইতোমধ্যে আপনারা জানেন, সরকারের প্রত্যেকটা সংস্কারের প্রস্তাবের বিষয়ে আমরা কিন্তু প্রত্যেকটাই ক্লোজবাই ক্লোজ জবাব দিয়েছি এবং উত্তর দিয়েছি এবং তাদেরকে (সংস্কার কমিশনকে) অনুরোধ করেছি, এ বিষয়ে আমরা কথা বলতে চাই। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা এই বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলবে। 

আমরা যে বিষয়ে জোর দিচ্ছি, যে জিনিসটা বুঝতে অনেকে অক্ষম হচ্ছে। বিএনপি কখনোই এ কথা বলেনি যে আগে নির্বাচন, আর তারপরে সংস্কার। এটা যদি কেউ বলে থাকে, তাহলে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

আমরা বলছি, নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম যে সংস্কারগুলো করা দরকার, সেটা করতে হবে। আপনারা একটা জিনিস ভুলে যাচ্ছেন কেন? 

সংস্কারের দাবি তো আমাদের। বিএনপির দেওয়া ৩১ দফার একটি হলো নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কার। ২০১৬ সালে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন প্রথম। সেই ভিশন ২০৩০-এ আমরা আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার যে পরিবর্তনগুলো করা দরকার, সে কথাগুলো আমরা তখনই বলেছি।

এই আজকের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের কথা উঠছে এবং সংস্কার কমিশনও বলছে, এটাই করতে হবে। এ কথা তো আমরা তখনই বলেছি। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের অধীনে ৯ মাসের মধ্যে নির্বাচন, এ কথা আমরা তখনই বলেছি। তাহলে কী বোঝা যাচ্ছে? আমরা যা বলেছি, সেগুলোই তো আসছে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী লীগের ধামাধারা পুলিশ প্রশাসন ছিল। তারা যা বলত, তা-ই করত। যার ফলে প্রশাসনিক যে কনফিডেন্স, এটি তাদের কমে গিয়েছে। যার ফলে তারা যে বিভিন্ন জায়গায় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তারা সেভাবে নিতে পারছে না। যেটা তাদের নেওয়া উচিত।
আমাদের দলের যেটা দায়িত্ব, আমরা দল হিসেবে ইতোমধ্যে দলের কিছু কিছু ব্যক্তি, তারা কিছু কাজ করেছিলেন, যেগুলো আমরা প্রশ্রয় দিই না। সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আপনারা খুব ভালো করে জানেন, কোন কোন সংগঠনকে ভেঙে দিয়েছি, কোন কোন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা দল থেকে বহিষ্কারও করেছি। আমাদের যেটা রাজনৈতিক দায়িত্ব, আমার দল অত্যন্ত সুচারুরূপে পালন করছে। কোনো কোনো জায়গায় ব্যর্থই ঘটছে, তার বিরুদ্ধে আমরা রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিচ্ছি, শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

যে কথাটা আমরা বলতে চেষ্টা করি, হয়তো বোঝাতে পারি না অথবা কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বোঝেন না। বিএনপিকে টার্গেট করে একটা জিনিস সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশি করে প্রচারণা করা হচ্ছে যে বিএনপি আগে নির্বাচন চায়, তারপরে সংস্কার চায় অথবা সংস্কার চায় না, নির্বাচন চায়। আমি আপনাদের সামনে পরিষ্কার করে বলছি, এটা একটা ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি করা হচ্ছে জনগণের মধ্যে। আমরা বারবার করে এ কথাটাই বলছি, আমরাই তো সংস্কারের প্রবক্তা। আমরাই সংস্কার চেয়েছি। আমরা আমাদের ৩১ দফা যেটি দিয়েছি, একটাও দেখবেন না গভমেন্টের যে সংস্কার, তার সঙ্গে কোনো অমিল আছে। হ্যাঁ, কতগুলো বিষয় আছে, সংবিধানের সংস্কারের ব্যাপার। সেখানে আমরা সুস্পষ্টভাবে আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। 

কতগুলো বিষয় আছে মীমাংসিত, সে বিষয়গুলোতে আমরা হাত দিতে চাই না। এখন বলুন তো দেখি, গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে বহুত্ববাদ আমাদের দেশের কয়টা লোকে বোঝে? এ দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক কাদের? রাজনৈতিক দলগুলোর। জামায়াত, বিএনপি বা আওয়ামী লীগ হোক, জাতীয় পার্টি হোক, জাকের পার্টি হোক বা ছাত্রদের সংগঠনটাই হোক, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক হচ্ছে জনগণের। আর যারা এসেছেন সংস্কারের খুব জ্ঞানী মানুষ, পণ্ডিত লোক, বিশাল বিশাল ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রি নিয়ে এসেছেন। তাদের আমরা সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। তারা যদি জনগণের বাইরে গিয়ে কিছু করেন পলিটিক্সে, আমরা তাদের সমর্থন করতে পারব না। জনগণ যেটা চাইবে, আমরা সেটাই সমর্থন করব! রাজনৈতিক দল নিজস্ব ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে কাজ করে। রাজনৈতিক দল তো আকাশ থেকে উড়ে আসে না। এটা তো জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করতে হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কেউ যদি ফলো করে, তাহলে সেখানে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠা যায় না। আজকে গোটা পৃথিবীতে ডানপন্থীদের একটা উত্থান ঘটেছে এবং তারাই বলছেন যে, গণতন্ত্র ইজ গইং ডাউন। 

জাতিসংঘের মহাসচিব এসেছিলেন দেশে, ওনার সঙ্গে আমাদের একটা এক্সক্লুসিভ মিটিং হয়েছিল। কয়েকটা রাজনৈতিক দল এবং সংস্কার প্রধানদের। সেখানে তিনি নিজেই বলেছিলেন, গণতন্ত্র এখন খুব বিপদের সম্মুখীন। গণতন্ত্র বিভিন্ন দেশে ডানপন্থীদের উত্থান হচ্ছে, কর্তৃত্ববাদের উত্থান হচ্ছে, গণতন্ত্রের নিচে নামছে। কিন্তু তারপরেও গণতন্ত্রই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা, সুশাসনের জন্য, রাষ্ট্র পরিচালানার জন্য।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিএনপির সঙ্গে দ্রুত নির্বাচন চায় হেফাজতও

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিএনপির সঙ্গে দ্রুত নির্বাচন চায় হেফাজতও
বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ দেবেন, এটা বিএনপির জোরালো দাবি। তাদের সেই দাবির সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একমত হয়েছে।

রাজধানীর গুলশানে শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে বৈঠক করেছে হেফাজতে ইসলাম। পরে হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পাশাপাশি হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান, নায়েবে আমির আহমেদ আব্দুল কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম ও তার অন্তর্ভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে যথাযথ কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে কি না, এটা তারা (হেফাজত) চিন্তা করে দেখবে।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি সংস্কার চায়, বিচার চায়।

কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়টি বিএনপি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে চায়। ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছিলেন। জাতির সামনে অনেকবার বলেছেন। কিন্তু প্রায় সময় ডিসেম্বর থেকে জুনে, জুন থেকে ডিসেম্বরে—এ রকম একটা শিফটিং দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বিলম্বিত করারও পাঁয়তারা লক্ষ করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনাসহ তার এমপি ও দোসরদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। সমগ্র জাতি উদ্‌গ্রীব যে মামলাগুলো যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। সে জন্য বিএনপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধি করা হোক।

প্রসিকিউশন টিম, তদন্ত টিম এবং অন্যান্য সাপোর্ট বৃদ্ধি করা হোক। প্রয়োজনে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা যায় কি না, এটা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। এই প্রস্তাব বিএনপি রেখেছে, হেফাজতে ইসলামও তাতে একমত বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হেফাজতে ইসলামও দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বিএনপিও এই দাবি প্রকাশ্যে করেছে, লিখিতভাবে করেছে, সরকারকে জানিয়েছে, জনগণের সামনে প্রস্তাব আকারে তুলে ধরেছে। হেফাজতে ইসলাম সেই দাবি বিএনপির কাছে পুনরায় উত্থাপন করেছে।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি চায় আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনা হোক। সে জন্য প্রয়োজনে সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন করা যায়, আইন সংশোধন করা যায়। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যদি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারিত হয়, সেটা দেশের জনগণ মেনে নেবে।

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে এবং শহীদদের সঠিক সংখ্যাও এখনো নিরূপণ করা হয়নি। একইভাবে ২০২১ সালে বাংলাদেশে আলেম সমাজের ওপরে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। তাতে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ জন আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিলেন। দুই ঘটনাতেই মামলা করেছে হেফাজতে ইসলাম। তারা এসব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও দ্রুত নিষ্পত্তি চান। বিএনপিও হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে তাতে একমত প্রকাশ করেছে বলেও জানান সালাহ উদ্দিন আহমদ।

আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া সব ‘মিথ্যা’ মামলার প্রত্যাহার চেয়েছে হেফাজতে ইসলাম। বিএনপিও তাতে একমত প্রকাশ করেছে বলেও জানান দলটির এই নেতা।

হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপি নির্বাচনী জোটের চিন্তা করছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচন আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’

মন্তব্য

গণহত্যার দায়ে আ. লীগকে বিচারের আওতায় আনা হোক : সালাউদ্দিন আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
গণহত্যার দায়ে আ. লীগকে বিচারের আওতায় আনা হোক : সালাউদ্দিন আহমেদ
ফাইল ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জুলাই আন্দোলনে যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে—সেই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা হোক। প্রয়োজনে দেশের প্রচলিত আইন সংশোধন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের লোকবল বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন
আলোচিত-১০ (৫ এপ্রিল)

আলোচিত-১০ (৫ এপ্রিল)

 

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি আমরা প্রকাশ্যে করেছি, লিখিতভাবে করেছি, সরকারকে জানিয়েছি।

জনগণের সামনে প্রস্তাব আকারে আমরা তুলে ধরেছি। 
আমরা চাই আওয়ামী লীগকে গণহত্যার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনা হোক। এজন্য সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন করা যায় এবং আইন সংশোধন করা যায়। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যদি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারিত হয় তাহলে এদেশের জনগণ তা মেনে নেবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতার বিরোধী অপরাধে মামলা করা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রী-এমপি ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে; সেই মামলাগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি আমাদের সামনে নেই। জাতি অত্যন্ত প্রত্যাশা করে এই মামলাগুলো যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। সেজন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা ও লোকবল বৃদ্ধি করা হোক। প্রয়োজনে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইবুনাল স্থাপন করা যায় কিনা, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।

আরো পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই : হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই : হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ

 

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা যেমন সংস্কার চাই, বিচার চাই আওয়ামী লীগের তেমনি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে চাই। ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন। জাতির সামনে অনেকবার তিনি বলেছেন। কিন্তু প্রায় সময় দেখা যাচ্ছে কিছুদিন পরপর বলা হচ্ছে নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনে; আবার জুনে থেকে ডিসেম্বরে এরকম একটা শিফটিং দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বিলম্বিত করারও বিভিন্ন রকম পায়তারা আমরা লক্ষ্য করছি।

আমাদের জোরালো দাবি প্রধান উপদেষ্টা অতি অবশ্যই খুব দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ দেবেন, যাতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা যায়। ‌এই দাবির সাথে হেফাজত ইসলামও একমত হয়েছে।

বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের উপর যে নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার, তার সঠিক সংখ্যা এখন পর্যন্ত নিরূপণ করা হয়নি। সেই হত্যাযজ্ঞের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি ও বিচার চাওয়া হয়েছে। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আলেম-ওলামাদের উপরে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলে ভরা হয়েছে এবং সীমাহীন নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দায়ীকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই। 

বৈঠকটি শনিবার রাত সোয়া আটটার দিকে শুরু হয় এবং শেষ হয় রাত পৌনে দশটায়। বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

আরো পড়ুন
চৌদ্দগ্রামে সাবেক রেলমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর

চৌদ্দগ্রামে সাবেক রেলমন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর

 

হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, তিনি ছাড়াও হেফাজতের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মূফতি মনির হোসাইন কাসেমী।

মন্তব্য

বিএনপির সঙ্গে হেফাজতের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিএনপির সঙ্গে হেফাজতের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক

দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের লিয়াজোঁ কমিটি। 

শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত ৮টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত আছেন।

অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মানব না : আখতার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মানব না : আখতার
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দিয়েছে, তাতে করে কোনোভাবেই এই দলের পুনর্বাসনকে তারা মেনে নেবেন না।’

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাতে রংপুর চেম্বার ভবনে এনসিপির সংগঠকদের নিয়ে আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের কেউ যদি অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন, তাদের আইনের কাছে সোপর্দ করার কথাও বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন
ভারতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাসে জামায়াতের নিন্দা

ভারতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাসে জামায়াতের নিন্দা

 

আখতার বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির কোনো প্রগ্রামে কোনোভাবেই যদি আওয়ামী লীগের কেউ যুক্ত হওয়ার মতো সাহসও দেখান, আমরা তাদের প্রতিহত করব।

আমরা তাদের (অনুপ্রবেশকারীদের) আইনের কাছে সোপর্দ করব। আমরা মনে করি, যারা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দিয়েছেন, তারা কোনোভাবে বাংলাদেশে রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার রাখেন না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এনসিপির বর্তমানে সম্পর্ক কী, এ বিষয়ে জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি—প্রতিটি আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র সংগঠন।

জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের যে কার্যক্রম আছে, সেগুলো পরিচালনা করবে। একটি পলিটিক্যাল প্ল্যাটফরম এবং সিভিল সোসাইটির প্ল্যাটফরম হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা আছে, সেগুলো বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে।

আরো পড়ুন
তাড়াইলে নারীর মাথা ফাটানোর ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি

তাড়াইলে নারীর মাথা ফাটানোর ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি

 

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক প্রসঙ্গে কথা বলেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সঠিকভাবে কথা বলেছেন।

তবে আমরা মনে করি, শুধু কথার মাধ্যমে কিছু হবে না। আন্তর্জাতিকভাবে যে ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন, শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সেই পথে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূসের মতো যোগ্য ও দক্ষ মানুষই এখন বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য। তার যোগ্যতা ও দক্ষতা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রশংসিত।’

এ সময় এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ফারজানা দিনা, রংপুরের সংগঠক আলমগীর নয়নসহ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ