ঢাকা, শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২০ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২০ রমজান ১৪৪৬

বাজেটের কর প্রস্তাবে নিত্যপণ্যের তুলনায় সস্তা হবে তামাকপণ্য

  • তামাক কর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাজেটের কর প্রস্তাবে নিত্যপণ্যের তুলনায় সস্তা হবে তামাকপণ্য

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাস হলে নিত্যপণ্যের তুলনায় আরেক দফা সস্তা হবে তামাকপণ্য। তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যু বাড়বে। তামাক কম্পানি লাভবান হবে এবং সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের সুযোগ হাতছাড়া করবে। চূড়ান্ত বাজেটে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে সব ধরনের তামাকপণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদসহ তামাকবিরোধী নেতারা।

 

গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত তামাক করবিষয়ক বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব আলোচনা উঠে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রজ্ঞা ও আত্মার পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্তরভেদে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১.৮ শতাংশ থেকে ১২.৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অথচ সরকারি তথ্য মতে এক বছরের ব্যবধানে খোলা আটা, ব্রয়লার মুরগি, চিনি, ডিম, গুঁড়া দুধ ও মসুর ডালের মতো নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৪.৫ শতাংশ থেকে ৭১.৭ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরো সস্তা হয়ে পড়বে, মানুষ তামাক ব্যবহারে উত্সাহিত হবে এবং জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিড়ির দাম বাড়ানো হয়নি। এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো পণ্যটির দাম এবং সপ্তমবারের মতো করহার অপরিবর্তিত রাখা হলো। প্রতি গ্রাম জর্দার দাম ৫০ পয়সা এবং গুলের দাম ৩০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে এবং সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, করহার না বাড়িয়ে কেবল খুচরা মূল্য বাড়ানোর কারণে তামাক কম্পানিগুলো লাভবান হবে এবং সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের সুযোগ হাতছাড়া করবে।

তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব অনুযায়ী নিম্নস্তরের সিগারেটে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সুনির্দিষ্ট আকারে আরোপ করা হলে সরকার কমপক্ষে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় আহরণ করতে পারত। সম্পূরক শুল্ক ৫৮ শতাংশ নির্ধারণ করায় কম্পানিগুলো শুধু নিম্নস্তরের সিগারেট থেকেই ৪৮৬ কোটি টাকা বাড়তি আয় করবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘তামাক কর কাঠামো সংস্কারের যে প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম, তার বিন্দুমাত্র প্রতিফলন নেই। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় চূড়ান্ত বাজেটে আমাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর মাহফুজ কবীর বলেন, নিম্নস্তরের সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যে অ্যাড ভ্যালোরেমের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তামাকপণ্যেও একই কর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্য উভয়ই উপকৃত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩-২৪ সালের চূড়ান্ত বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য যেসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়, সেগুলো হচ্ছে : নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৩৫.৭৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ, মধ্যম স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ, উচ্চস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১২০ টাকা নির্ধারণ করে ৭৮ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং প্রিমিয়াম বা অতি উচ্চস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী ১৫০ টাকা বহাল রেখে ৯৭.৫০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা; ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১১.২৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৯ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা; প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী ৪৫ টাকা বহাল রেখে ২৭ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে চার লাখ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং চার লাখ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো অংশ নেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত, আত্মার কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন, সিটিএফকে বাংলাদেশের প্রগ্রাম ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা। আত্মার কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ এবং দাবি তুলে ধরেন প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণবিষয়ক প্রকল্পপ্রধান হাসান শাহরিয়ার।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আ. লীগের অনিয়মের কারণে সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আ. লীগের অনিয়মের কারণে সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
ফাইল ছবি

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে সুষ্ঠুভাবে উত্তরণ নিশ্চিত করার জন্য যথাসম্ভব সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা সম্প্রতি সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায় থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের অভিমত সম্পর্কে তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, বেসরকারি খাত কেন বছরের পর বছর ধরে এই বিষয়টি নিয়ে নীরব ছিল এবং জোরালো কোনো আওয়াজ তোলেনি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা সত্য যে, আমি বেসরকারি খাতের দাবির সাথে একমত বা দ্বিমত পোষণ করতে পারছি না।

সুতরাং, এটি একটি দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতি।’

বশিরউদ্দীন আরো বলেন, ‘আমরা যদি তাদের সাথে একমত হই, তাহলে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো আবার ঘুমিয়ে পড়বে। উত্তরণ বিলম্বিত করা মোটেও সরকারের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। তাদের (বেসরকারি খাত) এটি মেনে নিতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের তিনটি মানদণ্ডেই উত্তীর্ণ হয়েছে। যদিও এটি একটি ভিন্ন যুক্তি যে, সেগুলো সঠিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে নাকি ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে। 

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের অনিয়মের কারণে সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আমাদের টিমের সদস্যরা আন্তরিকতা ও দেশপ্রেমের সাথে কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন এবং ইনশাআল্লাহ, আশা করি আমরা দেশের জন্য একটি কল্যাণকর পরিস্থিতিতে পৌঁছাতে সক্ষম হব।


 
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদিও সকল সংস্কার করা সম্ভব নয়, তবে অবশ্যই কিছু বাস্তবায়ন করা হবে। বাকিগুলো গতিশীলভাবে এগিয়ে যাবে।’

এদিকে, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের একটি অংশসহ অনেকেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া কয়েক বছর পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে।

তারা যুক্তি দিচ্ছেন, অর্থনীতির ক্ষেত্রে মহামারীর তীব্র প্রভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গত কয়েক বছর ধরে বিদ্যমান উচ্চ বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবেলার জন্য সময়ের প্রয়োজন।

সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘উত্তরণের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সময়সূচী মেনে জাতিসংঘের মর্যাদা অর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলবে কিনা সে বিষয়ে সরকার বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
 
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব আরো উল্লেখ করেছেন, ‘বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে দেয়া সুবিধাগুলো উত্তরণের পরও তিন বছর ধরে বহাল থাকবে।’

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উত্তরণ লাভের জন্য তিনটি পূর্বশর্তই পূরণ করেছে।

মুক্তিযুদ্ধের পর অর্থনীতির ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে শূন্য-শুল্ক ও কোটা সুবিধার মতো বিভিন্ন সুবিধা পেতে দেশটি ১৯৭৫ সালে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছিল।

এই সুবিধাগুলো বাংলাদেশকে বর্তমানে চীনের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম করেছে।

এলডিসি-পরবর্তী অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশ বার্ষিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যের বাণিজ্য হারাতে পারে। এ পর্যায়ে বাংলাদেশকে পণ্য সরবরাহের উপর কমপক্ষে ১২ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। বর্তমানে, বাংলাদেশের ৭৮ শতাংশ রপ্তানি ৩৮টি দেশে স্বল্পোন্নত বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ইতোমধ্যেই আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা ২০২৯ সাল পর্যন্ত আরও তিন বছর ধরে বাংলাদেশের জন্য এলডিসি বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে, যা একটি মসৃণ উত্তরণের ক্ষেত্রে সক্ষম করার জন্য একটি গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে বিবেচিত হবে। যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া কিছু শর্ত ছাড়া একই রকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মন্তব্য

বসুন্ধরায় আপন ফ্যামিলি মার্টের দ্বিতীয় আউটলেটে ক্রেতাদের দারুণ সাড়া

অনলাইন প্রতিবেদক
অনলাইন প্রতিবেদক
শেয়ার
বসুন্ধরায় আপন ফ্যামিলি মার্টের দ্বিতীয় আউটলেটে ক্রেতাদের দারুণ সাড়া
ছবি: কালের কণ্ঠ

একই ছাদের নিচে সকল সেবা মেলায় দুই সপ্তাহেই ক্রেতাদের নজর কেড়েছে বসুন্ধরায় আপন ফ্যামিলি মার্টের দ্বিতীয় আউটলেটটি। বিশেষ করে ফ্রেশ বড় মাছ থেকে, গরুর মাংস ও জীবিত মুরগি মেলায় খুশি ক্রেতারা । অন্যান্য সুপারশপে জীবিত মুরগি না মিললেও আপন ফ্যামিলি মার্টের এই আউটলেটে ক্রেতারা জীবিত মুরগি কিনতে পারছেন। এই বিষয়টির প্রশংসা করছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (২১ মার্চ) বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ‘সি’ ব্লকের উম্মে কুলসুম রোডের (প্লট: ৫৬/এ) আপন ফ্যামিলি মার্টের দ্বিতীয় আউটলেটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতারা নিজের ইচ্ছেমতো দেশি, ব্রয়লার, পাকিস্তানি জীবিত মুরগি কেনার জন্য ভিড় করছেন। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সুন্দর পরিবেশে তা সরবরাহ করছেন আউটলেটের বিক্রয়কর্মীরা। এ ছাড়াও জীবিত হাঁস, কবুতর ও কোয়েল পাখিও মিলছে। মুরগির পাশাপাশি হাঁসেও আগ্রহ দেখা গেছে ক্রেতাদের।

অনেককেই দেশি হাঁস কিনতে দেখা গেছে।

ছবি: কালের কণ্ঠ

বিষয়টি সম্পর্কে নাজমুল হাসান নামের এক ক্রেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সুপারশপগুলোতে মুরগি মাংস মিললেও জীবিত মুরগি রাখা হয় না। এতে প্রসেস করা মাংস কিনতে হয়। কিন্তু এই আউটলেটে জীবিত মুরগি পাওয়া যাচ্ছে।

এটি আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। কারণ দেখে শুনে দেশি মুরগি কেনার মধ্যে এক ধরনের মানসিক শান্তি কাজ করে। সবকিছু মিলে আমার কাছে এই আউটলেটটি চমৎকার লেগেছে।’

জানা গেছে, এই আউটলেটে আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) উদ্বোধন হচ্ছে একটি ক্যাফে বার। কেনাকাটার পর যেখানে ক্রেতারা বসে কফি, চাসহ বিভিন্ন সেবা উপভোগ করতে পারবেন।

এ ছাড়াও চালু হচ্ছে একটি পোশাকের স্টল। এর পাশাপাশি আগে থেকেই মিলছে মাছ-মাংস, শাক-সবজি, ফল-মূল, চাল-ডালসহ প্রয়োজনীয় সকল নিত্যপণ্য। এ ছাড়া রয়েছে মেডিক্যাল কর্নার, যেখানে মিলছে প্রয়োজনীয় ওষুধ। পাশাপাশি রয়েছে মোবাইল শপ, নারী-পুরুষের ত্বকের যত্ন ও রূপচর্চায় প্রসাধনী, বিভিন্ন ডিনার সেটসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই। দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত এবং ইফতারের পরে ক্রেতাদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

ফ্যামিলি মার্টের দ্বিতীয় আউটলেটে বাজার করার অভিজ্ঞতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নুসরাত বলেন, ‘এখানকার প্রসাধনী সামগ্রীর অনেকগুলো বিদেশ থেকে আনা। যা পেতে আগে দূরে যেতে হত। কিন্তু এখন তা হাতের কাছেই পাচ্ছি। কারণ আমি এই আউটলেটের পাশেই থাকি। সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে, একই সঙ্গে বাজার, ওষুধ, পোশাকসহ সব সেবা পাওয়া যাচ্ছে। এই সেবাগুলো একসঙ্গে পাওয়া যায় না। এ ছাড়াও আউটলেটটি অনেক জায়গাজুড়ে হওয়ায় কেনাকাটা করায় স্বস্তি মিলছে। সবমিলে পরিবেশ খুবই ভালো।’ 

সামগ্রিক বিষয়ে আউটলেটটির ফ্লোর অপারেশন ম্যানেজার এম ডি লোকমান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্রেতাদের কথা বিবেচনা করে জীবিত হাঁস-মুরগি রাখা হচ্ছে। বিষয়টি অনেক চ্যালেঞ্জিং হওয়া সত্ত্বেও ক্রেতাদের সুবিধার্থে আমরা এটি করতেছি। এতে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। এ ছাড়া সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস আমরা নিজেরাই প্রসেসিং করি। গরু কিনে আমাদের তত্ত্বাবধানে জবাই করার পর আমরা তা সরবরাহ করছি। তাই ক্রেতাদের আগ্রহ এখন পর্যন্ত এই প্রোডাক্টগুলোতে বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

এর বাইরে প্রসাধনী সামগ্রী, মেডিক্যাল কর্নার, বিভিন্ন ডিনার সেটে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের। যতই দিন যাচ্ছে ততই ক্রেতা সংখ্যা বাড়ছে, আমরা পজেটিভ সাড়া পাচ্ছি। অনেক জায়গাজুড়ে সুপারশপটি হওয়ায় ক্রেতারা প্রশংসা করছেন। কারণ অনেক স্বস্তি নিয়ে তারা কেনাকাটা করতে পারছেন। আমরা আরো কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি। আমাদের মূল লক্ষ্য ক্রেতাদের মানসম্মত সেবা দেওয়া।’

জানা গেছে, গত ৬ মার্চ আপন ফ্যামিলি মার্টের দ্বিতীয় আউটলেটের উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এবং পরিচালক ইয়াশা সোবহান। এসময় মাশাল্লাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান হাজি জহির রায়হান অতিথিদের স্বাগত জানান।

আপন ফ্যামিলি মার্টের অপারেশন বিভাগের প্রধান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘এই সুপারশপে ৪৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গাজুড়ে ২২ হাজারেরও বেশি পণ্য পাওয়া যাবে।’

মন্তব্য

এলএনজি আনতে ৪২৭০ কোটি ঋণ নিচ্ছে সরকার, গ্যারান্টার বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এলএনজি আনতে ৪২৭০ কোটি ঋণ নিচ্ছে সরকার, গ্যারান্টার বিশ্বব্যাংক
সংগৃহীত ছবি

ধারাবাহিকভাবে কমছে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন। গ্যাসের চাহিদা পূরণে বাড়ানো হচ্চে উচ্চমূল্যে আমদানীকৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহ। কিন্তু ডলারসংকটের কারণে সরকার চাইলেও বাড়তি এলএনজি আমদানি করতে পারছে না। এতে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহে বড় ঘাটতি থাকছে।

এ অবস্থায় সরকার আগামী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) এলএনজি কিনতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ঋণ নিচ্ছে। ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার বা চার হাজার ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

ঋণ দিতে আগ্রহী ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে আগ্রহপত্র আহ্বান করে শিগগিরই বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের কারিগরি সহায়তায় ঋণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এতে গ্যারান্টার (নিশ্চয়তাদানকারী) হিসেবে থাকবে বিশ্বব্যাংক। আগ্রহী ব্যাংকগুলোর প্রস্তাব নিয়ে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করবে জ্বালানি বিভাগ।

ডলারের সংকট থাকায় এলএনজি আমদানি বিল নিয়মিত পরিশোধ করা যাচ্ছে না। এখনো এলএনজি বিল বকেয়া ২০ কোটি ডলারের বেশি।

বিল বকেয়া বাড়তে থাকায় এলএনজি সরবরাহে আগ্রহী হচ্ছে না বিদেশি কম্পানি। ঋণসহায়তা পেলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা। 

২০১৮ সালের পর থেকে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমতে থাকে। ঘাটতি পূরণে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। গত বছরও দিনে গ্যাস উৎপাদিত হতো ২০০ থেকে ২১০ কোটি ঘনফুট।

উৎপাদন কমে এখন ১৯০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। আর আমদানি করা এলএনজি থেকে এখন সরবরাহ করা হচ্ছে প্রায় ৯৫ কোটি ঘনফুট।

এলএনজি আমদানি করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতারের রাস গ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে এলএনজি আনছে আরপিজিসিএল। ২০১৮ সালের এপ্রিলে দেশে প্রথম এলএনজি কার্গো (জাহাজ) আসে কাতার থেকে।

আর ওমান থেকে প্রথম সরবরাহ আসে ২০১৯ সালে। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত এলএনজি আমদানির পেছনে খরচ হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। চড়া দামের এলএনজি কিনতে গিয়ে চাপে পড়েছে জ্বালানি খাত। এর আগে এলএনজি কিনতে বিভিন্ন সময় ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফিন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) থেকে স্বল্প মেয়াদে ঋণ নিয়েছে সরকার।

এদিকে এলএনজি বিলের মতো ডলারসংকটে দেশে সর্বোচ্চ গ্যাস উৎপাদনকারী মার্কিন কম্পানি শেভরনের বিলও নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছে না পেট্রোবাংলা। শেভরন গ্যাস বিল বাবদ পাবে ১৫ কোটি ডলারের বেশি। গ্যাস বিলের মতো ডলারসংকটে বিদ্যুৎ বিলও পরিশোধ করা যাচ্ছে না।

এদিকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চলতি অর্থবছরের বাকি চার মাসের জন্য চাহিদা আছে ৫০০ কোটি ডলারের। এটি এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। বকেয়া পরিশোধে হিমশিম খেয়ে এখন বহুজাতিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বকেয়া থাকার কারণে ভালো কম্পানি এলএনজি সরবরাহে আগ্রহী হচ্ছে না। চাহিদা পূরণে আমদানি বাড়াতে হচ্ছে।

তাই বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ঋণ নেওয়া হচ্ছে। উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঋণ নেওয়ায় সুদের হার বেশি হবে না। এ ছাড়া এলএনজি কেনার খরচ কমাতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বাড়ানো হবে। ব্রুনেই ও সৌদি আরামকোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।

মন্তব্য

ব্যাংক কর্মকর্তাদের চলতি মাসের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চ দেওয়ার নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ব্যাংক কর্মকর্তাদের চলতি মাসের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চ দেওয়ার নির্দেশ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যাংকগুলোর কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত পেনশনধারীদের ভাতা একই দিনে দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে, আগামী ৩১ মার্চ বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর পালিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে ঈদ উপলক্ষে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী (গেজেটেড ও নন-গেজেটেড), সামরিক বাহিনীর কমিশন্ড ও নন-কমিশন্ড কর্মকর্তাদের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। অবসরপ্রাপ্ত পেনশনাররাও একই দিনে তাঁদের অবসরের ভাতা পাবেন।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩ এপ্রিলও ছুটি থাকবে। ফলে এবার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ সময় ব্যাংকও বন্ধ থাকবে, তবে কিছু শাখা বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা রাখা হতে পারে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ