আমনের ভরা মৌসুমেও মিলার বা চালকলের মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সাধারণত এমন সময় চালের দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। গত এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
আমনের ভরা মৌসুমেও মিলার বা চালকলের মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সাধারণত এমন সময় চালের দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। গত এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সিন্ডিকেটের কবজায় চলে গেছে চালের বাজার। এতে আমনের ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। এর প্রভাবে খুচরা ও পাইকারিতে দাম বেড়েছে।
জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মেসার্স লাকসাম ট্রেডার্সের বিক্রেতা মোশারফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নতুন করে বস্তাপ্রতি চালের দাম ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণে এখন ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের বাগবিতণ্ডা হচ্ছে। এবার অন্যান্য বারের তুলনায় ধানের দাম বাড়তি।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চাল ১০ শতাংশ, মাঝারি চাল ব্রি-২৮ ও পাইজম ৪ শতাংশ বেড়েছে।
ঝিনাইদহ : চালের উৎপাদন স্থল ঝিনাইদহের ছয় উপজেলায় ১৬টি অটো রাইস মিলসহ মোট ২৭০টি চালকল রয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে আট টাকা।
চালকল মালিকরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধানের সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে চালের দাম বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে ধানের দাম মণপ্রতি বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এ ছাড়া রয়েছে ধানের সংকট। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ মোটা চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে চালকল মালিক ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজি (সিন্ডিকেট) করে চালের দাম বাড়াচ্ছেন।
জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে ঝিনাইদহের বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা চালের দাম ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। তা এখন ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। কাজললতা ৫৬-৫৮ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫ টাকা হয়েছে। সরু চাল মিনিকেট ৬৮ থেকে বেড়ে এখন ৭৪ টাকা। বাসমতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯২ টাকায়। আগে যা ছিল ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা।
গতকাল সকালে ঝিনাইদহ শহরের নতুন হাটখোলা, হামদহ ও ওয়াপদা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। কাজললতা ৬৫ টাকা, আটাশ ৬৫ টাকা, মিনিকেট ৭৪ টাকা ও বাসমতি চাল আকারভেদে ৯০ থেকে ৯২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ওয়াপদা বাজারে চাল কিনতে আসা চা দোকানি বাবু মিয়া বলেন, ‘গত বছর যে চাল ৪০ টাকায় কিনতাম, এখন তা ৫৫ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। সরকার অনেক জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে টিভিতে দেখি। তবে চাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান চালাতে দেখি না।’
নতুন হাটখোলা বাজারের চাল ব্যবসায়ী আসাদুর রহমান বলেন, ‘মাস দেড়েক আগে হঠাৎ মিনিকেট ও বাসমতি চালের দাম বেড়ে গেছিল। আবার নতুন করে কোনো নির্দেশনা ছাড়াই ১৫ দিন আগে মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৭ থেকে ৯ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন চালকল মালিকরা। তাঁরা সিন্ডিকেট করে যখন যা ইচ্ছা তাই করে। এ জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের বিবাদে জড়াতে হয়।’
সদর উপজেলার শুভ অ্যাগ্রো প্রগতি অটো রাইস মিলের মালিক তপন কুমার বলেন, ‘পরিবহন, শ্রমিক ও বিদ্যুতের দাম যেভাবে বাড়ছে, সে তুলনায় চালের দাম বাড়েনি। হঠাৎ করে ধানের দামও বেড়ে গেছে। তাই কয়েক প্রজাতির চালের দাম কেজিপ্রতি খুবই সামান্য বাড়ানো হয়েছে।’
জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘বাজারে আগের মতো ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা চাল উৎপাদন করতে পারছি না। এ জন্য চালের দাম অল্প কিছু বেড়েছে। আমাদের এখানে অবৈধ মজুদদার ও সিন্ডিকেট নেই।’
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে চালের দাম বেড়ে গতকাল চাক্তাই চালপট্টি ও পাহাড়তলী পাইকারি বাজারে বেতি আতপ ৫০ কেজি বস্তা দুই হাজার ৬০০ থেকে তিন হাজার টাকা, পাইজাম ২৫ কেজির বস্তা এক হাজার ৫০০ টাকা, মিনিকেট সিদ্ধ বস্তা (২৫ কেজি) এক হাজার ৪৫০ থেকে এক হাজার ৮৫০ টাকা, মোটা চাল পাঁচ কেজির বস্তা দুই হাজার ৫৫০ থেকে দুই হাজার ৭২০ টাকা, জিরাশাইল বস্তা (২৫ কেজি) এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৯০০ টাকা, কাটারি আতব (২৫ কেজি) বস্তা এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে ৯০ শতাংশ চাল আসে নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, দিনাজপুর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। ধানের দাম ৪০ কেজি বস্তায় ৬০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন একই পরিমাণ ধান কিনতে হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়। ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দামও বাড়ছে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম অফিস ও ঝিনাইদহ প্রতিনিধি]
সম্পর্কিত খবর
রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর প্রায় ৪২ কোটি টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেনি বাংলালিংক। দেশের বেসরকারি মোবাইল অপারেটরটির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। কম্পানি বলছে, রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট হলো দ্বৈত কর। এই যুক্তি তুলে উচ্চ আদালত পর্যন্ত কম্পানি গেছে।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটরগুলো গ্রস আয়ের ওপর বিটিআরসির সঙ্গে একটা অংশ রেভিনিউ শেয়ারিং করে। বেসরকারি চারটি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে বাংলালিংক অন্যতম।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, এই ভ্যাট কোনোভাবেই দ্বৈত কর নয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে আদেশ জারি করেছে, সেই আদেশের আগেই এই ভ্যাট। ফলে বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতেই হবে।
বছরের পর বছর চিঠি দেওয়ার পরও বিটিআরসির আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না বাংলালিংক। তবে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ বলছে, আইন মেনে তারা বিষয়টি সমাধান করবে।
এনবিআরের ওই বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে যে সেবামূল্য আদায় করেন, তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধের পর প্রাপ্ত নিট অর্থ থেকে রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থ দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স ব্যবহারের শর্তানুযায়ী বিটিআরসিকে প্রদান করতে হয়। যেহেতু রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে পরিশোধযোগ্য রাজস্বের ওপর মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১-এর বিধি ১৮(ঙ) অনুযায়ী বিটিআরসি কর্তৃক ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট উৎসে আদায় বা কর্তনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এক্ষেত্রে দ্বৈতকর আরোপিত হয়। সেহেতু দ্বৈতকর পরিহারের লক্ষ্যে এনবিআর মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১-এর ধারা ১৪-এর উপধারা (২)-এ ক্ষমতাবলে বিটিআরসিকে দ্বিতীয় প্রজন্মের লাইসেন্স ব্যবহারের শর্তানুযায়ী রেভিনিউ শেয়ারিং হিসেবে মোবাইল অপারেটর কর্তৃক প্রদত্ত প্রদেয় রাজস্ব থেকে উৎসে মূসক কর্তন বা আদায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করল।
বিটিআরসি এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৪ সালের ২৫ জুন বাংলালিংককে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ শুনানি শেষে বিটিআরসির পক্ষে রায় দিয়েছেন। অর্থাৎ বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতে হবে। এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৩ সালের ২২ জুন ও ২৪ ডিসেম্বর বাংলালিংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে কর্তন করা ভ্যাট বাংলালিংককে পরিশোধের জন্য ২০২৪ সালের ৫ জুন বিটিআরসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলালিংক ভ্যাট পরিশোধে সাড়া দেয়নি। পরে ১০ জুন এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলালিংক বিটিআরসিতে একটি আবেদন করে। আবেদনে এনবিআরের ২০১২ সালের ১২ আগস্ট জারি করা বিশেষ আদেশ অনুযায়ী দ্বৈত করনীতিতে রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়।
তবে নথিপত্র ও ওই আদেশ বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি বলছে, রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট বা মূসক হিসেবে পাওনা এনবিআরের আদেশ জারির পূর্ববর্তী বা আগের ১৫ মাস সময়ের (২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত)। ফলে বাংলালিংকে আবেদনপত্রে দ্বৈত করের যে দাবি করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে ভ্যাট হিসেবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ১৭১ টাকা পরিশোধ করতেই হবে।
এই ভ্যাট পরিশোধে বাংলালিংককে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে সময় শেষ হলেও বাংলালিংক কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। অর্থাৎ এক যুগ পরও বিটিআরসিকে পাত্তা দিচ্ছে না বাংলালিংক।
বিটিআরসি নিরুপায় হয়ে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে, সর্বশেষ ৩ জানুয়ারি আবার মতামত চেয়ে এনবিআরকে বিটিআরসি চিঠি দিয়েছে।
ব্রিকসের উদ্যোগে গঠিত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) চলতি বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে ঋণ সহায়তা এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার কথা জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) ভ্লাদিমির কাজবেকভ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় ভ্লাদিমির কাজবেকভ জানান, সম্প্রসারিত ঢাকা সিটি ওয়াটার সাপ্লাই রেজিলিয়েন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে এনডিবি। এ বছর বাংলাদেশের উন্নয়নের চাহিদা বিবেচনা করে এই তহবিলের পরিমাণ তিন গুণেরও বেশি করতে চায় তারা।
প্রধান উপদেষ্টা বহুপক্ষীয় ঋণদাতা সংস্থাটির ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘এটি উন্নয়ন অবকাঠামো উন্নীতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।’
কাজবেকভ জানান, এনডিবি বাংলাদেশে গ্যাস খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে বড় ধরনের সহায়তা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যথেষ্ট পরিমাণে ঋণ প্রদানে আগ্রহী তারা।
বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনৈতিক অঞ্চলে হাজার হাজার কর্মীর জন্য আবাসন সুবিধার মতো সামাজিক অবকাঠামোতে ঋণ দেওয়ার ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা।
কাজবেকভ বলেন, ‘ব্যাংকটি বহু-মুদ্রা ঋণ চালু করেছে। যা বাংলাদেশকে উপকৃত করবে।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এনডিবির উচিত বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকারের সাথে অর্থায়নের সমন্বয় সাধনের জন্য বাংলাদেশের ওপর দেশীয় কৌশল কর্মসূচি চালু করার প্রতি মনোনিবেশ করা।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ এবং ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বাজারে কিছুটা কমেছে সোনার দাম। এবার প্রতি ভরিতে ভালো মানের সোনা (২২ ক্যারেট) দাম কমেছে এক হাজার ২৪৮ টাকা। এখন থেকে দেশের বাজারে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হবে এক লাখ ৫৬ হাজার ৬২৪ টাকায়। আগামীকাল বুধবার থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ দাম কমার তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমিয়ে এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অপরিবর্তিত আছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৫৭৮ টাকা।
সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আজ মঙ্গলবার ও গত রবিবার দুই দিন বৈঠক করেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাই আগামীকাল বুধবার সচিবালয়ে এ বিষয়ে আবারও বৈঠক ডেকেছেন তিনি। ওই বৈঠকের পরই জানা যাবে কত দাম বাড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৩ টাকা করে বাড়াতে চায় কম্পানিগুলো। বিষয়টি গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) জানিয়েছে, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। ১ এপ্রিল থেকেই তারা নতুন দর কার্যকর করতে চেয়েছিল।
বাণিজ্য উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খানের পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ও ভোজ্য তেল পরিশোধন কারখানার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রগুলো জানায়, কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়েছে, আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মাসে। দাম বাড়াতে চাওয়ার মূল কারণ এটাই। তবে রেয়াত সুবিধা বজায় থাকলে দাম বাড়াতে চান না তারা।
এদিকে কর রেয়াতের সুবিধা বহাল রাখার বাস্তবতায় এনবিআর নেই বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ধারণা পেয়েছে।
ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস ২৭ মার্চ ট্যারিফ কমিশনে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে ১ এপ্রিল থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৩ টাকা করার প্রস্তাব দেয় পরিশোধন কারখানার মালিকদের সংগঠন। সে হিসেবে লিটারে ১৮ টাকা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৩৫ টাকা।
একইভাবে খোলা সয়াবিন ও খোলা পাম তেলের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে লিটারপ্রতি ১৭০ টাকা। বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দাম লিটারপ্রতি ১৫৭ টাকা। এ হিসাবে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ থেকে ১৭৬ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮৪৫ থেকে ৮৫০ টাকা। আর এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ থেকে ১৬৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেলের দাম ১৪৪ থেকে ১৫০ টাকা।