হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বড়ইউড়ি গ্রামে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে নাজমুল হোসেন নামে এক যুবক। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। নাজমুল ওই গ্রামের কাউছার মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী।
প্রথমে প্রেম পরে ধর্ষণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নাজমুলের। শুক্রবার রাতে মেয়েটি বাড়িতে একা থাকার সুবাদে নাজুমল ঘরে প্রবেশ করে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। পরে তিনি পালিয়ে গেলে মেয়েটি ধর্ষণের কথা তার পিতা-মাতাকে জানায়। শনিবার সকালে মেয়ের মা নাজমুলকে আসামি করে বানিয়াচং থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করলে পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে শনিবার দুপুরে ভিকটিমকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আগামীকাল রবিবার তার মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
বানিয়াচং থানার এস আই ফারুক আহমেদ জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেলে পুলিশ আসামি নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ ভিকটিমকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

অপার সম্ভাবনা, পর্যটনে পিছিয়ে কয়রা
ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা, খুলনা

খুলনার কয়রা উপজেলা সুন্দরবনের সবচেয়ে কাছাকাছি জনবসতি হওয়া সত্ত্বেও পর্যটন খাতে এখনো পিছিয়ে। অথচ এখান থেকে হিরণপয়েন্ট, শেকের টেক, কলাগাছিয়া ও বঙ্গোপসাগর খুব সহজেই দেখা যায়। রয়েছে ৯০০ বছরের প্রাচীন মসজিদকুঁড় মসজিদ, রাজা প্রতাপাদিত্যের বাড়ি, খালে খাঁর দিঘির মতো ঐতিহাসিক স্থাপনাও। তবুও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারছে না এলাকাটি।
২০২১ সালে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কয়রার গোলখালীতে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দিলেও বন বিভাগের আপত্তির কারণে কাজ শুরু হয়নি। পরে স্থান পরিবর্তন করে কেওড়াকাটায় কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু চার বছর পার হলেও কাজের গতি মন্থর। অন্যদিকে, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা ও পটুয়াখালীতে সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও খুলনার কয়রা উপজেলায় এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল আলম বলেন, সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক আসেন, কিন্তু মানসম্মত হোটেল, রিসোর্ট ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবের কারণে তারা দ্রুত চলে যান।
খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, কয়রায় পর্যটন সুবিধা বাড়াতে নতুন ওয়াচ টাওয়ার ও জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সড়ক ও হোটেলের সমস্যা দূর করতে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলি বিশ্বাস জানান, মসজিদকুঁড় মসজিদ ও কেওড়াকাটায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুন্দরবনে ২ লাখ ১১ হাজার ৫৭ জন পর্যটক ভ্রমণ করেছেন, যার মধ্যে বিদেশি পর্যটক ছিলেন ২ হাজার ৬২২ জন। রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। তবে কয়রার মতো সম্ভাবনাময় এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে এই আয় কয়েক গুণ বাড়তে পারে বলে মনে করেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা।
সুন্দরবন-নির্ভর জেলেদের জন্য পর্যটন একটি বিকল্প আয়ের উৎস হতে পারে বলে মনে করেন সমাজকর্মী আশিকুজ্জামান।
সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে কয়রাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা গেলে এখানকার অর্থনীতি যেমন চাঙ্গা হবে, তেমনি বিশ্বের দরবারে সুন্দরবনের সৌন্দর্য আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে।

নরসিংদীতে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার পর পালিয়ে গেল স্বামী
নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর শিবপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে রবিবার দুপুরে শিবপুর থানার ভরতেরকান্দি গ্রামের বসত ঘর হতে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাতে স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (৩৫) গলাটিপে হত্যার পর স্বামী তারেক মিয়া (৪০) পালিয়ে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানান, রবিবার সকালে সাড়া না পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে গৃহবধূ খাদিজার মরদেহ দেখতে পায়।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হত্যার পর হতে স্বামী তারেক মিয়া পলাতক রয়েছে। প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সাত সন্তান নিয়ে ক্ষুধার সংসার, এক মায়ের হাহাকার
দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই সুলেমা খাতুনের জীবন যেন অন্ধকারে ঢেকে গেছে। দুই বছর আগে স্বামী সাদত আলী মারা যান। এখন সাত সন্তান ও অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। চন্ডিগড় ইউনিয়নের মউ গ্রামের সেই ছোট্ট ঘরে প্রতিদিনের লড়াই শুধু বেঁচে থাকার।
গত শনিবার বিকেলে সুলেমার ঘরে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানরা ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদছে। ঘরে অল্প চাল আছে, কিন্তু তরকারি নেই। বড় ছেলে রফিক (১৪) আইসক্রিম বিক্রি করে যা আনে, তাতেই কোনোমতে চলে তাদের দিন।
সুলেমা বলেন, আশপাশের বাড়িতে কাজ পেলে কিছু টাকা পাই।
প্রতিবেশী হাসিনা বেগম বলেন, সুলেমার কষ্ট দেখে আমরা যতটা পারি সাহায্য করি।
সুলেমার আকুতি একটাই—সন্তানদের পেট ভরে খাওয়ানো আর অল্পস্বল্প পড়াশোনা করানো। কিন্তু অভাবের কাছে হার মানতে হচ্ছে তাকে।
রফিক বলে, আইসক্রিম বিক্রি করে যা পাই, তাই দিয়ে মাকে সাহায্য করি। কিন্তু এতে সংসার চলে না।
স্থানীয়রা জানান, সুলেমার জামাইও অসুস্থ ছিলেন। তিনিও ভিক্ষা করতেন। এখন সুলেমাই একমাত্র ভরসা। তার সংসারে আলো ফোটার আশা এখনও অধরা।

টঙ্গী
সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর

টঙ্গীর পাগার এলাকায় গাজীপুর সিটিকরপোরেশনের ৪৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য নুরুন্নবীকে (৪৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ বলে জানিয়েছে পুলিশ। রবিবার (১৩ এপ্রিল) টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ এই তথ্য জানায়।
নুরুন্নবী টঙ্গীর পাগার এলাকার আটারকল নামক সাকিনের মিজানুর রহমানের ছেলে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টঙ্গীর পাগার এলাকা থেকে নুরুন্নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে নাশকতার চেষ্টার অভিযোগ থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে মামলা নেই। তাকে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে বৈষম্যবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।