বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি সাতদিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বগুড়ার পর্যটন মোটেলে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। সেখানে কথা-কাটাকাটি ও তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
পরে ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
শেষে কমিটি স্থগিতের সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি শান্ত হয়। গতকাল (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে বগুড়া পর্যটন মোটেলে জাতীয় নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বগুড়া জেলা শাখার ৩৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে চাঁদাবাজ, অছাত্র, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লেজুড়বৃত্তিতে জড়িত ব্যক্তিরা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।
গত শনিবার তারা সংবাদ সম্মেলন করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই কমিটি বাতিলের সময় বেঁধে দেন।
এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় বগুড়া পর্যটন মোটেলে জাতীয় নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় নেতা সাকিব মাহাদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধিদল সেখানে যান। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা গাজী সালাউদ্দীন তানভীর ও বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে আসেন। তাদের তোপের মুখে পড়েন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে কমিটি বাতিল করার দাবি জানান এবং ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন। সেখানে কথা-কাটাকাটি ও তুমুল হট্টগোল হয়। পরে ওই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (সাহেদ) বলেন, পর্যটন মোটেলে গতকাল সন্ধ্যায় পূর্বনির্ধারিত নাগরিক কমিটির মতবিনিময় সভা ছিল। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিতর্কিত কমিটির সদস্যদের ডাকা হয়েছিল। প্রতিবাদে জুলাই আন্দোলনে যুক্ত বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে বিতর্কিতদের নিয়ে সভা করার প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সদ্যঘোষিত বগুড়া জেলা কমিটি সাত দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তারা সাকিব হাসানকে বাদ দিয়ে সংশোধিত কমিটি ঘোষণা করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন।
তবে বগুড়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির কোনো সদস্য এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের অনুমোদন দেওয়া বগুড়া জেলা কমিটিতে সরকারি আজিজুল হক কলেজের মাহমুদুল হাসানকে আহ্বায়ক ও সরকারি শাহ সুলতান কলেজের সাকিব খানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। গাবতলীর সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের আজিম উদ্দিনকে মুখ্য সংগঠক ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের মো. আইয়ুবকে মুখপাত্র পদ দেওয়া হয়। ছয় মাস মেয়াদি কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সদস্যসচিব রাখা হয়েছে ২৬ জন করে। ২৫ জনকে সংগঠক ও ২৫৪ জনকে সদস্য করা হয়।