কুমিল্লার বিভিন্ন বাজারে সয়াবিন তেল নিয়ে নানামুখী কারসাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। রমজানের আগে বেশি মুনাফার আশায় বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। এদিকে ডিলারদের বিরুদ্ধে চাল-ডাল,আটা-ময়দা ছাড়া শুধু বোতলজাত সয়াবিন তেল খুচরা বাজারে বিক্রি না করার অভিযোগ রয়েছে।
শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ খুচরা দোকানে সয়াবিন তেলের সংকট।
বিশেষ করে ৫ লিটার ও ৮ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজার থেকে নাই হয়ে গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, রমজানের শুরুতে সয়াবিন তেল নিয়ে বাজারে নানামুখী কারসাজি শুরু হয়েছে। অনেক ক্রেতা তেল কিনতে এসে ফেরত যাচ্ছেন। ডিলাররা বাজারে তেল ছাড়ছে না।
তাই খুচরা বাজারে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। কবে এ সমস্যার সমাধান হবে বলতে পারছি না।
আরো পড়ুন
দুই ইন্টারনেট ব্যবসায়ীর দ্বন্দ্ব : ভোগান্তিতে গ্রাহকরা
নগরীর বাদশা মিয়া নামক বাজারে গিয়েও দেখা গেছে এমন চিত্র। বেশির ভাগ মুদি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি।
তবে অনেকেই খোলা তেল বিক্রি করছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে।
রাজগঞ্জ বাজারের তেল কিনতে আসা স্কুল শিক্ষক সফিকুল বলেন, রমজানের অন্তত ৩ মাস আগে বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করার পাঁয়তারা করছে বাজার সিন্ডিকেট। কয়েক দিন ধরে ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে নেই। আমি নিজে কয়েকটি দোকান ঘুরে তেল পায়নি। পরে বাজার থেকে খোলা তেল নিয়েছি তাও ১৯০ টাকা কেজি ধরে।
বিষয়টি যাচাই করতে রাজগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে একই চিত্র। এই বাজারের ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডিলাররা আমাদের ৫ লিটারের বোতল দেন না। ২ লিটার ও এক লিটারের বোতল এনেছি। তবে এগুলোর সঙ্গে বাড়তি কিনতে হয়েছে চাল-ডাল, আটা-ময়দা। কী করব আমাদের বাধ্য করা হয় কিনতে। এখন তেলের চাহিদার জন্য বাধ্য হয়ে এসব কিনতে হয়। ডিলাররা শুধু বোতলজাত তেল বিক্রি করেন না।
আরো পড়ুন
দায়িত্ব পেয়েই ৪ বিভাগের জন্য যে বার্তা দিলেন হাসনাত
রাজগঞ্জ বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. হাসান বলেন, আমি নিজে গিয়ে দেখেছি ডিলারের গুদামে কম্পানি থেকে তেলের গাড়ি এসে তেল দিয়ে গেছে। কিন্তু ডিলার আমাদের কাছে তেল বিক্রি করছে না। কারণ জিজ্ঞাসা করলেও তারা কোনো উত্তর দেন না। বাজারের একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে।
কুমিল্লার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রেজা শাহবাজ হাদী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের খবর জানতে পেরে আমরা বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তেলের কম্পানিগুলো মার্কেটে তেলে ছাড়ছে কিন্তু বাজারে আসার পর কেউ না কেউ তেল গুদামে স্টক করছে। আমি ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাথে কথা বলেছি। দু-এক দিনের মধ্যে বাজারে অভিযানে নামব।’