<p style="text-align: justify;">পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে। রবিবার ৯ (জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর জেলা আদালতের পার্শ্ববর্তী পুলিশ ফাঁড়িতে এ ঘটনা ঘটে।</p> <p style="text-align: justify;">সোমবার (১০ জুন) যশোর জেলা আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ করেছেন পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোর্তজা ছোট্ট।</p> <p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল সাংবাদিকদের জানান, আইনজীবী সমিতির (২য় ভবন) সামনের ফুটপথে কিছু ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী টেবিল পেতে কাপড় বিক্রি করেন। সেখান থেকে একজন ব্যবসায়ীকে জোর করে উঠিয়ে দিয়ে অন্য একজনকে বসান শাহীন নামের এক ব্যক্তি। এ সময় শাহীন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নির্দেশে তিনি এ টেবিল বসিয়েছেন। এটা কেউ উঠালে তার হাত কেটে নেওয়া হবে।’</p> <p style="text-align: justify;">এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ পার্শ্ববর্তী পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেয়। এরপর এসআই হেলাল মীমাংসার জন্য শাহীনসহ অন্য ব্যবসায়ীদের ডেকে পাঠান। একই সাথে তাকেও (আওয়ামী লীগ নেতা ও পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল) ফাঁড়িতে ডেকে নেন। কিন্তু হঠাৎ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন একদল যুবক নিয়ে ফাঁড়িতে আসেন। তিনি ‘ধান্দাবাজি করিস’ বলে তাকে মারপিট শুরু করেন।</p> <p style="text-align: justify;">মুকুল আরো জানান, এরপর লজ্জা-ঘৃণায় তিনি কাউকে কিছু না বলে বাড়ি চলে যান। কিন্তু মানুষজন ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে যায়। এরপর সোমবার তিনি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতাদের অবহিত করেন।</p> <p style="text-align: justify;">এ ব্যাপারে জানতে যশোর কসবা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রেজাউল করিমের কাছে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।</p> <p style="text-align: justify;">যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোছাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফাঁড়িতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি গোলযোগ মীমাংসা হচ্ছিল। ফুটপাতে দোকান দেওয়া অবৈধ ফল ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।’</p> <p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল একজন পাবলিক প্রসিকিউটর। তাকে কী কারণে মারব? ব্যাপার হয়েছে কি অ্যাডভোকেট মুকুল ও বাচ্চু সাহেব ফুটপাত ইজারা দিয়ে খান। আমাদের একটা ছেলে (শাহীন) গেছে সেখানে দোকান বসানোর জন্য। মুকুল সাহেব ফাঁড়িতে অভিযোগ দিলে দারোগা সাহেব সেই ছেলেটিকে ডেকে পাঠান। আমি তাকে ফাঁড়িতে যেতে বলি। কিন্তু মুকুল সাহেব দারোগাকে দিয়ে ছেলেটাকে ভালো মতো পিটিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর ওসি এসপিকে জানিয়ে আমি ফাঁড়িতে যাই। পরে ওসি ও অ্যাডিশনাল এসপি ফোন দিয়ে আমাকে জানান, যা হওয়ার হয়ে গেছে, আপনি ছেলেটাকে নিয়ে যান, আমরা ওই দারোগার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল ব্যবস্থা নেব। এরপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল একজন আইনজীবী। আমি ওনাকে কেন মারতে যাব?’</p> <p style="text-align: justify;">যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোর্তজা ছোট্ট বলেন, ‘মুস্তাফিজুর রহমান মুকুল মারপিটের বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। রাতে সমিতির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’</p>