<p>মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কাঁকড়াছড়া পুঞ্জিতে বসবাসকারী গারো ও খাসিয়াদের চলাচলের রাস্তায় আবারও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাদের চলাচলে বাধা দিয়েছে রেহানা চা-বাগান কর্তৃপক্ষ। </p> <p>এর আগে গত বছরের মার্চ মাসে ঠিক একইভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল পুঞ্জির লোকদের। সম্প্রতি আবারও বাগানের নিয়োগকৃত পাহারাদাররা পুঞ্জির লোকদের চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। </p> <p>উপজেলার সদর ইউনিয়নে রেহেনা চা-বাগান ও কাঁকড়াছড়া পুঞ্জি অবস্থিত। পুঞ্জিতে খাসিয়া ও গারো সম্প্রদায়ের ২১টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। ওই পরিবারের সদস্যরা পান চাষ ও তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। পুঞ্জির পাশ ঘেঁষে রয়েছে চা-বাগান। পুঞ্জির বাসিন্দারা বাগানের ইজারাভুক্ত টিলাভূমির ১৪ ও ১৩ নম্বর সেকশনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলাচল করে। পুঞ্জির লোকজন তাদের চলাচলের সুবিধার্থে গত বছরের মার্চ মাসে কাঁচা রাস্তাটি সংস্কার করে। কিন্তু বাগানের লোকজন ওই রাস্তায় চা গাছের চারা রোপণ করে। ওই সময় রাস্তা দিয়ে প্রবেশের সময় তাদের বাধা দেয় বাগানের লোকজন। </p> <p>এক পর্যায়ে উত্তেজনা দেখা দিলে দুই পক্ষের লোকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে জড়ো হতে থাকে। পরবর্তীতে তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান সরেজমিনে পুঞ্জি ও বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠক করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে দুই পক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এর পর থেকে পুঞ্জির লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করছে। কিন্তু সম্প্রতি আবারও বাগানের পক্ষ থেকে ওই রাস্তায় চলাচল করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।</p> <p>পুঞ্জির হেডম্যান জনপল চিশিম বলেন, ‘গত বছরও ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর নিয়মিত যাতায়াত করি। বাগান কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, বাগানের অভ্যন্তরে কারখানার পাশের রাস্তা দিয়ে যেন আমরা চলাচল করি। বাগানের ভেতরে কয়েকটি ফটক রয়েছে। অনেক সময় রাতে অসুস্থ রোগী নিয়ে সেই ফটক অতিক্রম করে যেতে হলে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।’ </p> <p>অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে পুঞ্জির বাসিন্দা মিল্টন রকো বলেন, ‘২৬ আগস্ট থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাগানের পাহারাদার কাদির মিয়া, মানিক মিয়া, সহিত আলী, আলিম, সাজিদ আমাদের চলাচলে বাধা দেন। পুঞ্জির ১০২ বছরের বৃদ্ধাসহ অসুস্থ রোগীরা হাসপাতালে যেতে পারছে না। পুঞ্জির প্রায় ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীও এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।’ </p> <p>রেহানা চা-বাগান ব্যবস্থাপক এ কে আজাদ বলেন, ১৪ নম্বর সেকশনের রাস্তাটি বাগানের নিজস্ব রাস্তা। ওই রাস্তা দিয়ে শুধু বাগানের শ্রমিকরা চা পাতা সংগ্রহ করে। পুঞ্জির লোকজনকে আগেই বলা হয়েছে, তারা আগে যেভাবে বাগানের কারখানার পেছনের রাস্তা ব্যবহার করে আসছিল এখন যেন সেই রাস্তা ব্যবহার করে। বাগানের পক্ষ থেকে ওই রাস্তাটি মেরামতও করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেটি না করে ১৪ নম্বর সেকশনের রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। তা ছাড়া চা-গাছের অনেক চারাও তারা নষ্ট করেছে। তাই আমরা সেখানে চা গাছের নতুন চারা লাগিয়েছি।’ </p> <p>উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, বাধা প্রদানের বিষয়টি শুনেছি। সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছি। দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যার সমাধান করা হবে।</p>