<p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় মসজিদে আসর নামাজ আদায় করে মিছিলে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন সাব্বির (১৯)। তিনি চাঁদপুরের শহরের রঘুনাথপুর গ্রামের রাজাবাড়ির মো. জসিম উদ্দিন রাজার ছেলে।</p> <p style="text-align:justify">ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর মা শাহনাজ বেগম বলেন, ‘পুলিশ যেন পরিবারের একজনকে না, বরং সবাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। কারণ ছেলেকে হারিয়ে আমাদের পরিবার এখন জিন্দালাশ।’</p> <p style="text-align:justify">সম্প্রতি শহীদ সাব্বিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে পুরো বাড়িতেই নীরবতা। প্রথমে ছেলে শহীদ হওয়ার বর্ণনা দিতে রাজি হননি সাব্বিরের মা। অনেক অনুরোধের পরে এই প্রতিবেদককে ছেলের ছোট থেকে বড় হওয়ার স্বপ্নের কথা জানান তিনি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মুলতান টেস্ট হেরে নতুন নির্বাচক নিয়োগ পিসিবির" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728646222-2918106059e8cfdc5294b2f14760f4b3.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মুলতান টেস্ট হেরে নতুন নির্বাচক নিয়োগ পিসিবির</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2024/10/11/1434094" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, শহীদ হফেজ সাব্বিরের বাবা মো. জসিম উদ্দিন রাজা পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। নিজ এলাকায় বিভিন্ন স্থানে কাজ করে সংসারের খরচ বহন করেন। মা শাহনাজ বেগম গৃহিণী। সাব্বির বড়। তার ছোট ভাই ৮ বছর বসয়ী সাফায়েত হোসেন (সামি) স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়ে।</p> <p style="text-align:justify">সাব্বিরের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার দুই ছেলে। সাব্বিরকে মাদরাসায় পড়ানোর স্বপ্ন ছিল আমাদের। যে কারণে ছোটবেলায় স্থানীয় মাদরাসায় ভর্তি করাই। এরপর হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ফুলছোঁয়া মাদরাসার হিফজখানায় ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করে। এরপর একই মাদরাসায় মিজান শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="এবার শক্তির ব্যবধানের ‘অজুহাত’ দিলেন পোথাস" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728644178-5726a44c33cf6c3fe76494e7fbe84204.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>এবার শক্তির ব্যবধানের ‘অজুহাত’ দিলেন পোথাস</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2024/10/11/1434091" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, “ছেলে মাওলানা হবে, এটা ছিল আমাদের স্বপ্ন। কিন্তু সাংসারিক অভাব-অনটন দেখে ছেলে আমার পড়া শেষ হওয়ার আগেই ঢাকা মিরপুর ইউসুফ খান নামের ব্যাক্তির ‘ঢাকা মটরস’ নামে প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখতে যায়। সংসারের হাল ধরার আগেই আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে গেল। ছেলেকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। আমার পরিবারের মতো অনেক পরিবার সন্তানহারা হয়েছে। আমি এই বিচার আল্লাহর কাছে চাইব।’</p> <p style="text-align:justify">সাব্বিরের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু সম্পর্কে ফুফাতো ভাই জিল্লুর রহমান সিফাত। তিনি চাঁদপুর কারিগরি বিদ্যালয় ও কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। সিফাত বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই সাব্বির আমার সঙ্গে চলাফেরা করত। পুরো শৈশবে আমাদের অনেক স্মৃতি আছে। গত ঈদুল ফিতরের পরে বন্ধুদের নিয়ে আমরা বান্দরবান ভ্রমণে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের সঙ্গে সাব্বিরও ছিল। পরবর্তী ভ্রমণে আমরা কক্সবাজার যাব, এমন পরিকল্পনা ছিল। সাব্বির শহীদ হওয়ার পর আমাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="টিডি কী, তা দিয়ে শেখ হাসিনা যা করতে পারেন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728643587-ea8d09e388125e66f529cc5516b1c668.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>টিডি কী, তা দিয়ে শেখ হাসিনা যা করতে পারেন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/11/1434090" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সিফাত আরো বলেন, ‘গত ১৭ জুলাই আমার সঙ্গে সব শেষ কথা হয় সাব্বিরের। আমাদের বন্ধুদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। ওই গ্রুপেই কথা হয় তার সঙ্গে। আমি সাব্বিরের কাছে জানতে চাই কী অবস্থা ঢাকার। সে পরিস্থিতি জানায়। তাকে কয়েকবার নিষেধ করেছি তুমি আন্দোলনে যাবে না। কিন্তু সে আমাদের কথা শোনেনি। ঘটনার দিন বিকেলে আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়।’</p> <p style="text-align:justify">শহীদ সাব্বিরের মা শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমার দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে আল্লাহ ভালোই রেখেছিল। আমার স্বামী মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে যেতেন। যে কারণে ছেলে পড়া অবস্থায় কাজে যোগ দেয়। আমার বড় ভাই জাহাঙ্গীর ঢাকায় থাকেন। তিনিই সাব্বিরকে ওয়ার্কশপের কাজ নিয়ে দেন। আমাদের স্বপ্ন ছিল ছেলে আলেম হবে এবং ইসলামের খিদমত করবে। সেটি আর হলো না।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আওয়ামী লীগ চালাত ওবায়দুল কাদেরের পঞ্চপাণ্ডব" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728643003-64c1f3e6af6a117cbb2551d488254e3b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আওয়ামী লীগ চালাত ওবায়দুল কাদেরের পঞ্চপাণ্ডব</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/10/11/1434087" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">শহীদ সাজ্জাদের বাবা জসিম রাজা বলেন, ‘চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। আর রাজনৈতিক দলের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নেতারাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দেখা করে সহমর্মিতা জানিয়েছেন। এর মধ্যে প্রশাসনের কর্মকর্তারা যাওয়ার সময় বিভিন্ন আইটেমের ফল দিয়ে যান এবং ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করেন।’</p>