<p>বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কানাইপুকুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জলিলের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (২১)। তার পেটে ও দুই পায়ে চারটি গুলি লাগে। এ অবস্থায় তাকে সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তির পর গুলি বের করে ব্লাডার ইনজুরির অপারেশন করে ব্যর্থ হন চিকিৎসকরা। তখন তাকে অন্য ওয়ার্ডে শিফট করা হয়। ১৫ দিন পর পাঠানো হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসিইউতে। সেখানে থাকেন চার দিন। </p> <p>পরে ২২ আগস্ট সিএমএইচে ব্লাডার ইনজুরির অপারেশন সম্পন্ন হয়। এ জন্য ১৪ দিন তাকে আবারও আইসিইউতে থাকতে হয়। এক মাস ১৭ দিন উন্নত চিকিৎসা দিয়ে জাহেদুলকে বাড়ি পাঠানো হয়। এর পর থেকেই বাড়তে থাকে জটিলতা। ঠিকমতো খেতে ও প্রস্রাব করতে পারছেন না। সব সময় ব্যথা হয়। রাতে ঘুম হয় না। শরীর ক্রমান্বয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। গুরুতর আহত জাহেদুলের চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই পরিবারের। ফলে ছেলের চিকিৎসা ও পরিবারের খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন বাবা আব্দুল জলিল।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সেই রিয়াদের পাশে দাঁড়াল বিএনপি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/22/1729599001-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সেই রিয়াদের পাশে দাঁড়াল বিএনপি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/22/1437950" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জাহেদুলের পরিবার জানায়, তিন ছেলের মধ্যে জাহেদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে ছোটবেলা থেকে নিজের খরচ নিজেই চালিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে জাহেদুল বগুড়ার দুপচাঁচিয়া জে কে কারিগরি কলেজে ম্যানেজমেন্টে অনার্সে ভর্তি হন। এখন তিনি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কিন্তু সংসারের অভাব দূর করতে নারায়ণগঞ্জের একটি প্রিন্ট অ্যান্ড প্যাকেজিং প্রতিষ্ঠানে সুপারভাইজার পদে যোগ দেন এক বন্ধুর সঙ্গে। সেই চাকরির বেতনে ভালোই চলছিল পরিবার। কিন্তু ৫ আগস্ট আন্দোলনে যোগ দিয়ে মিছিলের সঙ্গে যাত্রাবাড়ী যান জাহেদুল। পুলিশ মিছিল লক্ষ্য করে গুলি করলে সামনে থাকায় জাহেদুলের দুই পা ও পেটে চারটি গুলি লাগে। তখন প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয় তার।</p> <p>জাহেদুল জানান, ‘হাসপাতালেই ভালো ছিলাম। বাড়ি আসার পর কিছু খেতে পারছি না। প্রস্রাব করতেও পারছি না। কখনো কখনো কাপড় ভিজে যাচ্ছে। কিছু খেলেই শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া নল দিয়ে খাবারের থলিতে জমা হচ্ছে। যেগুলো মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার করতে হচ্ছে। শরীর খুবই দুর্বল। কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। সংসারে আমিই ছিলাম একমাত্র ভরসা। কিন্তু অসুস্থতার কারণে আমিই এখন সংসারের বোঝা হয়ে গেলাম। সমন্বয়ক সারজিস আলম ভাই হাসপাতালে দেখতে এসে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গেছেন। এরপর আর কোনো সহযোগিতা মেলেনি। দরিদ্র বাবার পক্ষে আমার চিকিৎসা মেটানো সম্ভব নয়। ঢাকায় যে আবার চিকিৎসা নিতে যাব, অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার মতো সামর্থ্যও আমাদের নেই।’ </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খরচ দেবে সরকার: নাহিদ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/20/1729440049-b5c21c41d62fb66b3cbe96b4a381c078.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খরচ দেবে সরকার : নাহিদ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/20/1437251" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জাহেদুলের বাবা আব্দুল জলিল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। ছেলেটা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমি ঢাকায় তার সঙ্গে ছিলাম। তখন আমার পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে। টাকার অভাবে ছেলেটাকে বোধ হয় আর বাঁচাতে পারব না। দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার ভালো খাবারের কথা বলেছেন। কিন্তু টাকা অভাবে ছেলেটাকে ভালো খাবার দিতে পারি না। আমি এখন কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’ </p>