<p style="text-align:justify">পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হাসান আরিফ ওরফে আরিফুল ইসলাম গত এক যুগে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিম্নমানের ঠিকাদারি কাজ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফ এই টাকার মালিক হয়েছেন বলে জানা যায়। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে নজর রাখছে গোয়েন্দারা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/26/1729917816-6c562e4808493714cb13b0ce9d0ae441.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে নজর রাখছেন গোয়েন্দারা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/10/26/1439288" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">বর্তমানে আরিফের অন্তত ২০টি ঠিকাদারি প্রকল্পের কাজ চলছে। যাতে ব্যয় হবে ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা। আরিফের রয়েছে বিটুমিন ও পাথর মিক্সিং মেশিন এবং রুলারসহ ঠিকাদারি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আরিফ ১০ বছর ছাত্রলীগের সভাপতি থাকা অবস্থায় আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ায় হতবাক রাজনীতিবিদসহ সব স্তরের মানুষ। এ নিয়ে ভাঙ্গুড়ায় চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। আরিফ উপজেলার রাঙ্গালিয়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম সরদারের ছেলে। </p> <p style="text-align:justify">কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা যায়, আরিফের পিতা নুরুল ইসলাম সরকারি খাদ্য গুদামের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি শ্রমিকদের সরদার হন। বসতভিটা ছাড়া কোনো সম্পদ ছিল না নুরুল ইসলামের। নুরুল ইসলামের তিন ছেলের মধ্যে আরিফ সবার বড়। পরিবারের অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হন আরিফ। ছাত্রজীবনে তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। </p> <p style="text-align:justify">পরিবারের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি নেন আরিফ। গ্রামীণ ব্যাংকে দুই বছর চাকরি করার পর ভাঙ্গুড়া পৌরসভার অফিস সহকারীর চাকরি পান আরিফ। ওই বছর উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে আরিফ সভাপতি প্রার্থী হন। চাকরির নীতিমালা লঙ্ঘন করে ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পরেই ভাগ্য খুলতে থাকে আরিফের। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিশ্ব তারকাদের কাতারে মেহজাবীনের নাম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/26/1729917174-5136f63d87dd9bffb10ff9788a651af1.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিশ্বতারকাদের কাতারে মেহজাবীনের নাম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/10/26/1439286" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">পৌরসভার চাকরির নীতিমালার তোয়াক্কা না করে শুরু করেন ঠিকাদারি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পৌরসভার অধিকাংশ কাজ বাগিয়ে নেন তিনি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভার কোনো কর্মচারী অথবা মেয়রের নিকটতম আত্মীয়-স্বজন ঠিকাদারি কাজ করতে পারবেন না। আরিফের এসব কাজের সহযোগী ছিলেন স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের কনিষ্ঠ পুত্র ইবনুল হাসান শাকিল।</p> <p style="text-align:justify">পৌরসভার মতো উপজেলা প্রকৌশল অফিসের কাজের ঠিকাদারিতেও আরিফ ও শাকিলের প্রচণ্ড প্রভাব ছিল। উপজেলা প্রকৌশলী আফরোজা পারভীনের যোগসাজশে এডিপি প্রকল্পের পিআইসি হয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আরিফ ও শাকিল। কখনো কাজ না করে, কখনো নামমাত্র কাজ করে কোটি টাকা বিল হাতিয়ে নেন তারা দুজন। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইরানের ২০ স্থানে হামলা চালায় ১৪০টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/26/1729916915-ea2c33f007e33bf09ca81a920a60e7f7.gif" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইরানের ২০ স্থানে হামলা চালায় ১৪০টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/10/26/1439285" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এ ছাড়া উপজেলা প্রকৌশল অফিসের আওতাধীন বিভিন্ন স্কুলের ভবন ও ওয়াশ ব্লক নির্মাণ, সড়ক সংস্কার ও নির্মাণকাজে অত্যন্ত নিম্নমানের কাজ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আরিফ ও শাকিলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইবনুল অ্যান্ড বিশ্বাস ট্রেডার্স। আরিফ ও শাকিলের টেন্ডার ড্রপের বিপরীতে কেউ টেন্ডার ড্রপ করলে তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগও আছে। এ নিয়ে আরিফ ও শাকিলের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার।</p> <p style="text-align:justify">সরজমিনে দেখা যায়, ছয় বছর আগে ভাঙ্গুড়া বাজারের বকুলতলা চত্বর থেকে শহীদ মিনার চত্বর পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মাণের কাজ না করেই বিল তুলে নেন আরিফ। শরৎনগর বাজারের বড়াল ব্রিজ রেলস্টেশন থেকে ভদ্রপাড়া পর্যন্ত একটি সড়কে নিম্নমানের কাজ করায় ছয় মাসও টেকসই হয়নি সেটি। শরৎনগর বাজার থেকে অষ্টমনিশা সড়কে দুই কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সড়ক সংস্কার করার পর সেটি টেকেনি তিন মাসও। ফলে বছর না পেরোতেই আবারও সড়ক সংস্কারকাজ করতে হয় উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে। </p> <p style="text-align:justify">সদর ইউনিয়নের নৌবারিয়া চৌরাস্তা মোড় থেকে পুঁইবিল সেতু পর্যন্ত কোটি টাকা ব্যয়ে আরসিসি সড়ক নির্মাণের বছর না পেরোতেই ভেঙে যায় সেটি। এই সড়কটিও পুনরায় মেরামত করতে হয় উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে। এ ছাড়া উপজেলা প্রকৌশল অফিসের আওতাধীন কোটেশনের মাধ্যমে কাগজে-কলমে কয়েকটি প্রকল্পের নাম থাকলেও বাস্তবে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইরানের সামরিক ক্ষেপণাস্ত্র সাইটে হামলা সম্পন্ন : ইসরায়েল" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/26/1729915198-fee4e47f3e4c529b1f2c751035a4492c.gif" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইরানের সামরিক ক্ষেপণাস্ত্র সাইটে হামলা সম্পন্ন : ইসরায়েল</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/10/26/1439282" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ ও স্টেশনারি সামগ্রী ক্রয়ের দরপত্রেও গত ছয় বছর ধরে আরিফ ও শাকিলের একচ্ছত্র অধিপত্য ছিল।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, আরিফ হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ার পরেও ঠিকাদারি কাজে বিনিয়োগ করার এত টাকা পেল কোথা থেকে? একাধিক সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আরিফ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঠিকাদারির কাজ শুরু করেন। নামমাত্র কাজ করে রাতারাতি তিনি কোটিপতি বনে যান। ঠিকাদারি কাজ ছাড়াও আরিফের আরো একাধিক ব্যবসা রয়েছে বলে জানা যায়। ভাঙ্গুড়া বাজারে রেলের জমিতে কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ করেছেন আরিফ। ভবনের নিচতলায় তিনি টাইলসের ব্যবসা করেন এবং দোতলায় বসবাস করেন।</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরিফের একজন কর্মচারী বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকে আরিফের ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার লেনদেন রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আরিফ আত্মগোপনে রয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বলেন, ‘আরিফ এমপির ছোট পুত্রের ব্যাবসায়িক পার্টনার ছিল। সেই সুবাদে আরিফ কোটিপতি হয়েছে।’</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফ অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। কিন্তু সে সাবেক এমপি পরিবারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে অবৈধভাবে ঠিকাদারির নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে। তার অবৈধ আয়ের বিষয়ে তদন্তের জন্য দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।</p>