<p>আলমডাঙ্গার হারদী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের নেতা আনোয়ারুল ইসলাম সাগর সম্প্রতি আলমডাঙ্গা উপজেলা জাসাসের কমিটি ঘোষণা করেছেন। গত ২৬ ডিসেম্বর তিনি নিজেকে আলমডাঙ্গা উপজেলা জাসাসের সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করে একটি ফেসবুক গ্রুপে নতুন কমিটির পরিচিতিমূলক পোস্ট দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিএনপি এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসাসের নেতাদের মধ্যে বিস্ময় দেখা দিয়েছে। কারণ, এ কমিটি গঠনে স্থানীয় বিএনপি কিংবা জেলা জাসাসের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি।</p> <p>জানা গেছে, আনোয়ারুল ইসলাম রাজনৈতিকভাবে বারবার অবস্থান পরিবর্তনের জন্য পরিচিত। একসময় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে স্থানীয়দের বিরোধিতার মুখে নিজ এলাকা ছেড়ে আলমডাঙ্গায় চলে আসেন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দেন। এ সময় তার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন লাড্ডুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে কিছু সরকারি প্রকল্প থেকে চাল আত্মসাৎ করেন।</p> <p>পরবর্তী সময়ে আলমডাঙ্গায় কোর্টপাড়ায় বাড়ি তৈরি করার পর যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় তিনি স্থানীয় এক জামায়াত নেতার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ধর্মপরায়ণতার ভান করে ওই নেতার সহায়তায় রাস্তা আদায় করেন। কিন্তু রাস্তা পাওয়ার পর তিনি জামায়াত থেকে দূরে সরে আবার আগের মতো আচরণ শুরু করেন।</p> <p>২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হন এবং নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী হিসেবে পরিচিত করতে থাকেন। হাই স্কুল পড়ুয়া ছেলের নামে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ করেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মন জুগিয়ে হারদী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে আসীন হন। তবে এ সময় তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।</p> <p>সম্প্রতি আনোয়ারুল ইসলাম সাগর ফেসবুকে নিজেকে আলমডাঙ্গা উপজেলা জাসাসের সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দেন। স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো কমিটি গঠনের বিষয়ে তারা অবগত নন।</p> <p>ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন লাড্ডু বলেন, ‘সাগর একসময় বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তবে তিনি কোন দলে আছেন, তা বোঝা মুশকিল।’</p> <p>বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের আহ্বায়ক কাজী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাগর জাসাসের সভাপতি হয়েছেন, এটা ফেসবুকে দেখে আমি বিস্মিত। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা এবং আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আছেন।’</p> <p>চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসাসের সভাপতি সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে জেলা জাসাসের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের কমিটি গঠনের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।’</p> <p>আনোয়ারুল ইসলাম সাগর বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে দাবি করেন, ‘আমি জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী।’</p>