কালের কণ্ঠ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজে মেধাতালিকায় ভর্তির সুযোগ পাওয়া সেই মেধাবী ইমন কাজীর পাশে দাঁড়ালেন এ্যাডভোকেট ড. মোবারক হোসেন। অর্থনৈতিক কারণে শঙ্কায় থাকা ইমনের যাবতীয় দায়িত্ব তিনি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন। এ্যাডভোকেট ড. মোবারক হোসেন বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) কুমিল্লা-৫ আসনের মনোনীত প্রার্থী।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইমন কাজী ও তার পরিবার।
এর আগে (৩০ জানুয়ারি) ‘অর্থের অভাবে মেডিক্যাল অনিশ্চিত ইমনের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কলের কণ্ঠ। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার উপজেলার সিদলাই ইউনিয়নের বেড়াখলা গ্রামের দিনমজুর কাজী মনিরুলের ছেলে ইমন কাজী। চলতি বছর মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ইমন কাজী।
তবে পরিবারের সবার চোখমুখে আনন্দ থাকলেও আড়ালে দেখা দেয় দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তা।
এমন খবর পেয়ে কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি সরেজমিনে গিয়ে ইমন ও তার দরিদ্র পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদটি প্রচারিত হলে 'আমরা এলাকাবাসী সংগঠনসহ অনেকেই ইমনের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াত নেতা এড. ড. মোবারক হোসেন ভর্তির দায়িত্ব নিয়েছেন।
জামায়াত নেতা এড. ড. মোবারক হোসেন বলেন, 'ইমন কাজী নামে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী মেডিক্যালে ভর্তি অনিশ্চিত এমন সংবাদ পত্রিকায় দেখে পরিবারটির সাথে যোগাযোগ করেছি।
সে আমার এলাকার সন্তান, মেধাবী ছাত্র। সে শুধু আমার এলাকার গর্ব না পুরো বাংলাদেশের গর্ব। তার পাশে থাকতে পেরে সত্যিই আমার খুব ভালো লাগছে। এই মেধাবী ছেলে এগিয়ে নিতে সবাই পাশে থাকার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।'
ইমন কাজী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এ্যাড. ড. মোবারক হোসেন ভাই আমার সঙ্গে ও আম্মুর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, মেডিক্যালে ভর্তি টাকা দিবেন এবং আমার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এসময় তার পরিবার দৈনিক কালের কণ্ঠসহ সকল গণমাধ্যমকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
ইমনের প্রতিবেশীরা জানায়, ইমন কাজীর ভর্তির পর বই প্রয়োজন, খুলনা থাকা-খাওয়াসহ খরচ ব্যয়বহুল। যা ইমনের পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব না এই দিকেও সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, মেধাবী এই শিক্ষার্থী ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পোমকাড়া সিদ্দিকুর রহমান অ্যান্ড হাকিম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন গোল্ডেন জিপিএ-৫। ২০২৪ সালে বুড়িচং উপজেলার পারুরায়া আব্দুল মতিন খসরু কলেজ থেকে একমাত্র ইমন কাজীই গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
চলতি বছরে সে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পায়। ইমনের বাবা কাজী মনির (৫৫) একজন দিনমজুর। তিনি এলাকায় অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালান। মা মাহমুদা বেগম (৫০) গৃহিণী। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে ইমন কাজী দ্বিতীয়। তার বড় বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত। তার ছোট বোন অনার্স ১ম বর্ষে অধ্যায়নরত, ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে।