গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর এলাকার শাহীন ক্যাডেট স্কুলের বিরুদ্ধে এসএসসি-২০২৫ পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত পরীক্ষার ফি ২৫০০ টাকা হলেও এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে জন প্রতি ৮০০০-১০০০০ টাকা আদায় করছে শাহিন ক্যাডেট স্কুল। যা কোচিং ও পরীক্ষার ফি বাবদ দেখানো হচ্ছে।
এ ছাড়া টেস্ট পরীক্ষার জন্য পুনরায় ৭০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী না দিতে পারলে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে না।
প্র্যাকটিক্যাল খাতার জন্যও ১০০০ টাকা করে নির্ধারিত করেছে তারা। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের বেতন না দিলে প্রবেশ পত্র দেওয়া হবে না বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
অপরদিকে শাহীন ক্যাডেট স্কুলের সফিপুর শাখার নিজস্ব কোনো ইন নম্বর না থাকায় অন্য স্কুলের নামে পরীক্ষা দেওয়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে কোনো কিন্ডারগার্টেন ও কেজি স্কুল স্থাপন করা সরকারি নিয়ম বহির্ভূত থাকলেও নিয়ম নীতির কোনো তোয়াক্কা না করে সফিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সফিপুর মালেক চৌধুরী মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ১০০ ফিট পাশেই এই শাহীন ক্যাডেট স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এতে সরকারি স্কুল শিক্ষার্থী সংকটে পড়েছে।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, 'ফরম পূরণের জন্য অতিরিক্ত ফি, কোচিং বাণিজ্য, প্রাকটিক্যাল খাতা, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বেতন, অবৈধভাবে নামে-বেনামে বাড়তি টাকা আদায় করছে শাহীন ক্যাডেট স্কুল।
যা আমাদের জন্য কষ্টকর। এ ছাড়া আমাদের কোনো খেলার মাঠ নেই। বিনোদনের কোনো জায়গায়ও নেই।'
শাহীন ক্যাডেট স্কুল সফিপুর শাখার পরিচালক আওলাদ হোসেন ও ইকবাল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং ফি, এসএসসির ফরম ফিসহ অন্যান্য ফি বাবদ ৮০০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। যা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে।
আমাদের স্কুলের ইন নম্বর না থাকায় অন্য স্কুলের নামে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অংশগ্রহণ করানো হয়।
সরজমিনে বুধবার (১৯ মার্চ) ওই স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, বাসা-বাড়ির জন্য নির্মাণ করা একটি ভবনে স্কুলের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ছোট ছোট শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হচ্ছে। নেই বিনোদনের কোনো জায়গা বা খেলার মাঠ। নিয়মনীতির কোনো কিছুই নেই সেখানে। একটি জাতীয় পতাকা টানানো রয়েছে যা খুবই নোংরা ও পুরাতন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আকবর খান বলেন, কোচিং বাণিজ্যের কোনো বিধান নেই। ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের কোনো নিয়ম নেই। এ ছাড়া কোনো কোচিং বাণিজ্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।