ঢাকা, সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫
১৭ চৈত্র ১৪৩১

প্রভাবশালীদের কবল থেকে ৩ জলমহাল দখলমুক্ত, রাজস্ব পাবে সরকার

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
শেয়ার
প্রভাবশালীদের কবল থেকে ৩ জলমহাল দখলমুক্ত, রাজস্ব পাবে সরকার
ছবি : কালের কণ্ঠ

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় দীর্ঘদিন থেকে প্রভাবশালী মহলের কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্র সরকারি তিনটি জলমহালে মাছ লুট করে খেয়েছিল। এতে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছিল সরকার। গত ৫ আগস্টের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিন্দারাণির দিঘি, হ্যালিপ্যাড পুকুর ও কাটুয়া বিল প্রভাবশালীদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করেন। যার ফলে অনেক রাজস্ব পাবে সরকার।

বিন্দারাণির দিঘি : 

উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নে ৭ একরের পুকুরটি গত ২০১৪ সাল থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি পক্ষ বিভিন্ন মামলা মোকাদ্দমার নামে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ভোগ করে আসছিল। এমনকি বিগত সময়ে বিন্দারাণির দিঘি নিয়ে দুই পক্ষের মামলা থাকলেও রাতের আধারে মিলেমিশে দুই পক্ষই মাছ লুট করেছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এই দিঘিতে রাতের আধারে মাছ চুরি করতো। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত ছিল।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন দিঘিটি সরকারের দখলে এনে পুনরায় ইজারা দেওয়ার কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিনের মামলার বিষয়টি নিষ্পত্তি করে ডিসেম্বর মাসে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে ২ লাখ ৫ শত টাকা মূল্যে বছরের বাকি ৩ মাসের জন্য খাস আদায়ের ইজারা দেওয়া হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১ বৈশাখ ১৪৩২ বাংলা থেকে পুনরায় ইজারা দেওয়ার কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে এই পুকুরটি দীর্ঘ ১১ বছর পর আবার সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসলো।

হ্যালিপ্যাড পুকুর :

উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের ঢুলিপাড়া এলাকায় অবস্থিত হ্যালিপ্যাড পুকুরটি ২ একর আয়তনের।

ফানাই নদীর একটি মুখ এই পুকুরের সীমানা ঘিরে বয়ে যাওয়ায় সারাবছর বিপুল পরিমাণ মাছের আনাগোনা হয়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক একটা মহলের যোগসাজশে এই পুকুরটিকে কখনোই সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এই পুকুরটি মাছ আহরণের বিপুল সম্ভাবনাময় হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন পুকুরটিকে সায়রাত রেজিস্ট্রারভুক্ত করার জন্যে পদক্ষেপ নেন। গত ৫ মার্চ কাদিপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুস শহীদ ওই হ্যালিপ্যাডে সরকারি একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রাখেন। প্রথমে অবৈধ দখলের কবল হতে উদ্ধার করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাছ ধরে নিলাম-বিক্রির মাধ্যমে সরকারের দখল ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে সরকারের সায়রাত রেজিস্ট্রারভুক্ত করা হয়েছে এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় ইজারার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

কাটুয়া বিল : 

উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের শশারকান্দি মৌজায় অবস্থিত কাটুয়া বিলের আয়তন ২৬ একর। বিলটি হাকালুকি হাওরের চকিয়া বিলের পার্শ্ববর্তী একটি বিল। সরকারের অগোচরে এই বিলটি স্থানীয় প্রভাবশালী মৎস্যজীবী মহল প্রতিবছর মাছ ধরার হরিলুটে ব্যস্ত থাকেন। চকিয়া বিলের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় প্রতিবছর ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা হতো কাটুয়া বিল থেকে। কিন্তু নিয়মিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত ছিল সরকার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিনের নজরে আসলে তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসক কার্যালয়কে অবগত করেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনা আক্তার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন ও ভূকশিমইল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সরেজমিনে পরিদর্শন, রেকর্ডপত্র যাচাই করে কাটুয়া বিলটিকে সরকারের ৬ নম্বর রেজিস্ট্রারভুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কয়েক দফা নথি আদান প্রদান, সংশোধনের পর গত ২৫ মার্চ সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে উক্ত বিলটি সরকারি জলমহাল হিসেবে অনুমোদন করা হয়। বর্তমানে বিলটি ইজারার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন স্যারের স্পষ্ট নির্দেশনা ছিল, সরকারি পুকুর, বিল, জলাশয়সহ বিভিন্ন সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে যেকোনো উপায়ে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করতে হবে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সরকারি কাজটি বাস্তবায়ন করেছি। 

তিনি আরো বলেন, বিন্দারাণি দিঘি ও হ্যালিপেড পুকুর ইজারার কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং কাটুয়া বিল ইজারার কার্যক্রম জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু করা হবে। অবৈধ দখলমুক্ত করায় এখন থেকে সরকারের কোষাগারে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব জমা হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঠাকুরগাঁওয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
শেয়ার
ঠাকুরগাঁওয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত
ছবি: কালের কণ্ঠ

মুসলিম বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করে ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ উল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৯টায় ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠ কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জেলার সবচেয়ে বড় ও প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এ জামাতে ইমামতি করেন ঠাকুরগাঁও বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. খলিলুর রহমান।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক, সামাজিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন এবং নামাজ শেষে ছোট বড় সবার মাঝে কুশল বিনিময় করেন।

আরো পড়ুন
মাগুরায় নোমানী মায়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত

মাগুরায় নোমানী মায়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত

 

এ ছাড়াও জেলা আনসার ও ভিডিপি মাঠ, পুলিশ লাইন মাঠ, বিজিবি ক্যাম্প মাঠসহ সদর উপজেলায় ১০টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার অন্যান্য ৪ উপজেলায় উৎসব মুখর পরিবেশে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে।

মন্তব্য

মাগুরায় নোমানী মায়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত

    ৬২৮ ইদগাহ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরা প্রতিনিধি
শেয়ার
মাগুরায় নোমানী মায়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত
ছবি: কালের কণ্ঠ

মাগুরায় যথাযথ ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে জেলার ৪ উপজেলার ৩৬ ইউনিয়নের ৬২৮টি স্থানে ঈদ-উল-ফিতরের পবিত্র জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৮টায় শহরের নোমানী ময়দান মাঠে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জেলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা হাবিবুর রহমান সেখানে ঈদের নামাজ  পড়ান। এ সময় দেশ ও বিশ্বের শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।

আরো পড়ুন
ঈদে কারাবন্দিদের জন্য থাকছে যেসব খাবার

ঈদে কারাবন্দিদের জন্য থাকছে যেসব খাবার

 

প্রধান এ জামাতে জেলা প্রশাসক মোহম্মদ অহিদুল ইসলাম, পৌর প্রশাসক ও মাগুরার অতিরিক্ত জেলা জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদিরসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।

এ ছাড়া শহরের হাজি আব্দুল হামিদ মাদরাসার মাঠ, শহরের পি টি আই, পারনান্দুয়ালী, নিজনান্দুয়ালী, মোল্লা পাড়া, পৌর কবরস্থান মাঠ, স্টেডিয়াম পাড়া, সদর উপজেলার ইছাখাদা দরগাহ মাঠসহ অন্য ৩ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

খুবির কেন্দ্রীয় মাঠে প্রথমবারের মতো ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত

খুলনা অফিস
খুলনা অফিস
শেয়ার
খুবির কেন্দ্রীয় মাঠে প্রথমবারের মতো ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
খুবির কেন্দ্রীয় মাঠে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের জামাত শেষে দেশ, জাতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধি কামনা এবং ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ছবি : কালের কণ্ঠ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে প্রথমবারের মতো পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের জামাত সোমবার(৩১ মার্চ) সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর ঈদের জামাত কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হলেও এবারই প্রথম ব্যাপক সংখ্যক মুসল্লির অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে কেন্দ্রীয় মাঠে ঈদ জামাত আয়োজন করা হয়।

জামাত শেষে দোয়ার পূর্বে সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান এবং ঈদ জামাত উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান।

জামাতে ইমামতি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি আব্দুল কুদ্দুস।

খুতবা শেষে দেশ, জাতি ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমৃদ্ধি কামনা এবং ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য জামাতে অংশ নেওয়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মুসল্লিদের সাথে ঈদের কুশল বিনিময় করেন।

ঈদের জামাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, প্রভোস্ট, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্র, পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসী এবং দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিগণ অংশগ্রহণ করেন।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং নির্দিষ্ট স্থানে গাড়ি/যানবাহন পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি মুসল্লিদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের খানজাহান আলী হল ও খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ হলের প্রবেশদ্বার খোলা রাখা হয়।

ফলে ব্যাপক সংখ্যক লোকের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

ঐতিহ্যবাহী ময়দান গোর-এ-শহীদ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঐতিহ্যবাহী ময়দান গোর-এ-শহীদ
ফাইল ছবি

দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৯টায় সাড়ে ২২ একর জমির এই ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়তে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মুসল্লি এসেছেন। 

ঈদ জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মাহফুজুর রহমান। সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে এই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে, ২০১৫ সালে মিনারটি নির্মাণ করা হয় মোগল স্থাপত্য শৈলীতে। মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট, ৫২টি গম্বুজ এবং ৩২টি খিলান রয়েছে।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ