পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বগুড়া নন্দীগ্রামে জামাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের পাঠান গ্রামে আনুমানিক ৩০০ বছর ধরে এ মেলা বসছে। প্রাচীন এ মেলায় লোকসমাগম বেড়ে যাওয়ায় পাশের গ্রাম নিমাইদীঘিতেও আরেকটি মেলা বসছে এক দশক ধরে। গ্রামীণ জনপদজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ।
নাইওর এসেছেন ৪০-৫০ গ্রামের নববধূ ও মেয়েরা। শ্বশুরবাড়িতে নিমন্ত্রণে এসেছেন জামাইরা।
মেলা উপলক্ষে শ্বশুরবাড়িতে জামাইদের নিমন্ত্রণের রেওয়াজ চালু আছে বলে স্থানীয়ভাবে এই দুটি মেলা ‘জামাই মেলা’ নামে পরিচিত। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ওই গ্রামের লোকজন আয়োজন করে ব্যতিক্রমধর্মী এই জামাই মেলা।
হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করে। মেলাটির নাম যেহেতু জামাই মেলা, সেহেতু এই মেলার মূল আকর্ষণ বাহারি রকমের মিষ্টি। অন্যান্য দোকানের চেয়ে মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। এ ছাড়া ছোট ছেলে য়েদের জন্য নাগরদোলা, চরকি, ট্রেনসহ বড়দের আনন্দ উপভোগের জন্য রয়েছে মোটরসাইকেল খেলা। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের কাঠের আসবাবপত্র, তালপাখা, মেয়েদের কসমেটিকস বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে।
মেলায় ঘুরতে আসা রাব্বি হাসান জানান, তার বাড়ি উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে। পহেলা বৈশাখ ও জামাই মেলা উপলক্ষে তিনি শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খেতে এসেছেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জামাই আদর করে। তার পরও জামাই হিসেবে তিনি বিভিন্ন ধরনের এক মণ মিষ্টি কিনেছেন।
রেজেনা খাতুন নামের আরেকজন বলেন, পহেলা বৈশাখ এলে তার খুব ভালো লাগে। এদিন মেলা হয় তাই ঈদের দিনের মতো বাবার বাড়িতে অনেকেই বেড়াতে আসে। ভাই-বোন ও বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা হয়। খুব ভালো লাগে।
মেলার মিষ্টি ব্যবসায়ী আলম হোসেন বলেন, ‘আমি ১০ মণ মিষ্টি নিয়ে এসেছি। বিক্রিও ভালো। চাহিদামতো দামে মিষ্টি বিক্রি করতে পেরে খুশি লাগছে।’
নিমাইদিঘী বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি কুদ্দুস হাসান জানান, মেয়ের জামাইদের সম্মান প্রদর্শন করতেই শত বছর ধরে মেলাটির আয়োজন করা হয়। পহেলা বৈশাখের আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দেয় এই মেলাটি। এই মেলা দুই দিনের জন্য হলেও এর আমেজ চলতে থাকে সপ্তাহব্যাপী। এই মেলার শেষের দিন উপস্থিত হয় শুধু নারীরা। মেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।