কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন করে শেড নির্মাণের কাজ চলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনা চলাকালে এই নির্মাণকাজ তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
পালংখালী ইউনিয়নের ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া ক্যাম্পের লাগোয়া বনভূমিতে ‘সওয়াব’ নামের একটি এনজিও ১২২টি শেড নির্মাণ করছে। স্থানীয়রা জানান, সামাজিক বনায়নের জায়গা ও একটি জলাধার ভরাট করে এই কাজ চলছে।
এনজিওটির দাবি, পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য এই শেড তৈরি করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করেন, তাকে না জানিয়েই গাছ কেটে ও পাহাড় ভেঙে এই নির্মাণকাজ করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) দপ্তর থেকে একাধিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এক কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের জন্য এই শেড, অন্যজন দাবি করেছেন এটি আগের টেন্ডারের কাজ।
তবে স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন, গত কয়েক মাসে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জন্যই এই ব্যবস্থা।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিএনপির কক্সবাজার জেলা সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
জামায়াতের মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নতুন শেড দেখে আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসতে উৎসাহিত হতে পারেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল আবসার বলেন, জলাধার ভরাট করে শেড বানানো হচ্ছে, কিন্তু আমাদের অভিযোগের কোনো প্রতিকার হয়নি। এনজিওটির কো-অর্ডিনেটর আতাউল্লাহ দাবি করেন, সরকারি অনুমতি নিয়েই কাজ চলছে। তবে ‘আমিনা ভিলেজ’ নামে সাইনবোর্ড টানানোর যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, এটি একজন দাতার নামে করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা জোরেশোরে চললেও ক্যাম্পে নতুন নির্মাণের এই ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে নতুন প্রশ্ন ও উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।