<p>চরকিতে বৃহস্পতিবার রাতে মুক্তি পেয়েছে রবিউল আলম রবির ‘ফরগেট মি নট’। ছবির প্রধান চরিত্রে আছেন মেহজাবীন চৌধুরী ও ইয়াশ রোহান। এই ছবির আগে একটি নাটক ও একটি সিরিজে দেখা গিয়েছিল এই জুটিকে। তাঁদের পর্দা রসায়নের পালাবদল নিয়ে লিখেছেন কামরুল ইসলাম।</p> <p>একটা সময় ছিল, প্রেমিক কিংবা প্রিয়জনের জন্য রুমাল বুনত তরুণীরা। তাতে রঙিন সুতোয় লিখত ‘ভুলো না আমায়’ কিংবা ‘ফরগেট মি নট’। গ্রামাঞ্চলে কারো কারো ঘরের দেয়ালেও এ রকম কথা ফ্রেমে বাঁধাই করা থাকত। প্রযুক্তির উৎকর্ষে সেসব হারিয়ে গেছে। তবে সেখান থেকে ছেঁকে নামটি নিয়েছেন নির্মাতা রবিউল আলম রবি। আর চলমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বানিয়েছেন ছবিটি। ছবিতে ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ফাহিম (ইয়াশ রোহান)। এই ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়েই কিছুদিন আগে দেশে নতুন অভ্যুদয় ঘটেছে। তাই বলে ‘ফরগেট মি নট’ মোটেও রাজনৈতিক গল্পের ছবি নয়। এটি নিরেট ভালোবাসার গল্প। কারণ চরকির ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রকল্পের ছবি এটি। তা ছাড়া প্রকাশিত ট্রেলার কিংবা গানেও ভালোবাসার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যেমন—মেহজাবীনের মুখে শোনা যায়, ‘রিলেশনশিপ শুরু হয় ভালোবাসা দিয়ে, বাট টিকে থাকে রেসপনসিবিলিটি দিয়ে। একজনকে আরেকজনের দায়িত্ব নিতে হয়।’</p> <p>‘ফরগেট মি নট’-এর নির্মাতা রবিউল আলম রবি হলেও গল্পের মূল ভাবনা এসেছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাছ থেকে। এ বিষয়ে রবিউল আলম বলেন, ‘একটা সরল প্রেমের গল্প নিয়ে ছবি বানানোর চিন্তা করছিলাম। তখন ফারুকী ভাইয়ের কাছে এই গল্পের মূল আইডিয়াটা শুনি। ফারুকী ভাই এত সুন্দর করে বললেন, প্রথমবার শুনেই অভিভূত হয়ে যাই। একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুজন মানুষ হারিয়ে ফেলা ভালোবাসা আবারও খুঁজে নেওয়ার অভিযাত্রায় জড়িয়ে পড়ে। উন্মোচিত হয় সম্পর্কের মাঝে লুকিয়ে থাকা কিছু অস্বস্তিকর ও অজানা সত্য।’ ‘ফরগেট মি নট’ একই সঙ্গে স্মৃতিচারণা, অপরাধবোধ ও অনুধাবনের গল্প।</p> <p>মেহজাবীন ও ইয়াশ রোহান এর আগেও নাটক-সিরিজে অভিনয় করেছেন। তবে মোটাদাগে তাঁদের প্রেম-রসায়ন তেমন দেখা যায়নি। এই প্রথম রোমান্টিক জুটি হয়ে দর্শকের সামনে হাজির হলেন তাঁরা। প্রশংসাও মিলছে বেশ। ছবিটি মুক্তির পর থেকে অনেকেই বাহবা দিচ্ছে। নানা অস্থিরতা পেরিয়ে এমন গল্প-নির্মাণ মনকে স্বস্তি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করছে অনেকে।</p> <p>ইয়াশ রোহান ও মেহজাবীন দুজনের আলাদা বলয় ছিল। টিভি পর্দার শীর্ষ অভিনেতাদের সঙ্গে মেহজাবীনের সফল দ্বৈত অধ্যায় রয়েছে। জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও আফরান নিশোর সঙ্গে তিনি বহু নাটকে অভিনয় করেছেন। টিভি-ইউটিউব রীতিমতো শাসন করেছেন। অন্যদিকে ইয়াশ রোহান সমসাময়িক অনেক অভিনেত্রীর সঙ্গেই কাজ করেন। তবে তানজিম সাইয়ারা তটিনীর সঙ্গে তাঁর জুটি অধিক চর্চিত। পর্দার বাইরে ব্যক্তিগত জীবনেও তাঁরা সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে গুঞ্জন শোনা গেছে। জুটির সীমানা পেরিয়ে ইয়াশ-মেহজাবীন দুজনেই নতুনত্বের স্বাদ নিলেন, দর্শককেও দিলেন।</p> <p>প্রথমবার আশফাক নিপুণের ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’য় হাজির হয়েছিলেন দুজন। সেখানে মেহজাবীন  ছিলেন ডাক্তারের ভূমিকায় আর ইয়াশ সাংবাদিকের ভূমিকায়। দুই বছর আগে হইচইয়ে মুক্তি পেয়েছিল সিরিজটি। এরপর একটি নাটকেও দেখা গেছে ইয়াশ-মেহজাবীনকে—শিহাব শাহীনের ‘মিম্মি’তে। মজার বিষয় হলো, এই নাটকে মা-ছেলের ভূমিকায় হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। ইয়াশের সত্মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন মেহজাবীন।</p> <p>‘ফরগেট মি নট’-এ অন্য রকম চরিত্রে হাজির হয়েছেন দুজন। নিজের চরিত্রটি নিয়ে ইয়াশ রোহান বলেন, ‘ফাহিম তার পছন্দের কাজ নিয়ে খুব উৎসাহী। সে তার ভালো লাগাকে গুরুত্ব দিতে চায়। কিন্তু একই সঙ্গে চরিত্রটির উদাসীনতাও আছে। ফলে বন্ধু-স্বজন, মা, পছন্দের মানুষের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। এই দূরত্ব তার জীবনের সমস্যা আরো বাড়িয়ে দেয় এবং এ থেকে সৃষ্ট সমস্যারও মুখোমুখি হতে হয় ফাহিমকে।’</p> <p>ছবিটি নিয়ে মন খুলে কথা বলার সুযোগ পাননি মেহজাবীন। কারণ তিনি রয়েছেন কানাডায়। সেখানকার ‘টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ প্রদর্শিত হবে তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি ‘সাবা’। আপাতত সেখানে উৎসবের আমেজে রয়েছেন অভিনেত্রী।</p> <p>এ ছবিতে আরো আছেন ইরফান সাজ্জাদ ও বিজরী বরকতউল্লাহ। এটি ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রকল্পের চতুর্থ ছবি। যদিও চতুর্থ ছবি হিসেবে জুলাইয়ে রেজাউর রহমানের ‘৩৬-২৪-৩৬’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।</p>