পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। যেখানে চারপাশ বরফ দিয়ে ঢাকা। কিন্তু কল্পনা করুন, হঠাৎ বরফের মাঝখান দিয়ে গাঢ় লাল রঙের পানি গড়িয়ে পড়ছে। এই বিস্ময়কর প্রাকৃতিক ঘটনাকে বলা হয় ব্লাড ফলস।
পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। যেখানে চারপাশ বরফ দিয়ে ঢাকা। কিন্তু কল্পনা করুন, হঠাৎ বরফের মাঝখান দিয়ে গাঢ় লাল রঙের পানি গড়িয়ে পড়ছে। এই বিস্ময়কর প্রাকৃতিক ঘটনাকে বলা হয় ব্লাড ফলস।
কেন পানির রং লাল?
প্রথম দেখায় মনে হতে পারে, হয়তো কোনো বিশাল দুর্ঘটনা ঘটেছে বা কোনো প্রাণীর রক্ত ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু আসলে এটি একটি বিশেষ রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফলাফল। প্রায় ২০ লাখ বছর আগে বরফের নিচে একটি লবণাক্ত হ্রদ তৈরি হয়। হ্রদটি সম্পূর্ণভাবে সূর্যের আলো ও বাতাস থেকে বিচ্ছিন্ন।
ব্লাড ফলসের বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্য :
১। এটি বরফের নিচের লুকানো একটি হ্রদ থেকে আসে, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না।
২। হ্রদটিতে জীবাণু (মাইক্রো অর্গানিজম) রয়েছে। যারা অক্সিজেন ছাড়াই টিকে থাকতে পারে।
৩। হ্রদের পানি অত্যন্ত লবণাক্ত। অতিরিক্ত লবণ হ্রদটিকে বরফ হওয়া থেকে রক্ষা করে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বর্তমানে অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলছে। বিজ্ঞানীদের মতে, ভবিষ্যতে হয়তো ব্লাড ফলসের গোপন হ্রদটি প্রকাশিত হয়ে যাবে। তখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই বিস্ময় হারিয়ে যেতে পারে।
সূত্র : আর্থ ডট কম
সম্পর্কিত খবর
বাংলাদেশি ভাস্কর শামীম সিকদারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২৩ সালের ২১ মার্চ (আজকের দিনে) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। ঢাবির চারুকলা ইনস্টিটিউটের ভাস্কর্য বিভাগের একজন অধ্যাপক ছিলেন শামীম সিকদার। তিনি সিমেন্ট, ব্রোঞ্জ, কাঠ, প্লাস্টার অব প্যারিস, কাদা, কাগজ, স্টিল ও গ্লাস ফাইবার মাধ্যমে কাজ করতেন।
শামীম সিকদার ভাস্কর্যের ওপরে ঢাকার বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ৩ বছরের একটি কোর্স সম্পন্ন করেন। এই কোর্সটির শিক্ষক ছিলেন মিস্টার সিভিস্কি, যিনি একজন বিখ্যাত ফরাসি ভাস্কর। লন্ডনের স্যার জন স্কুল অব কাস থেকে তিনি একটি সনদ অর্জন করেন ১৯৭৬ সালে।
শামীম সিকদার ১৯৮০ সালে শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে সহকারী অধ্যাপকের দায়িত্ব লাভ করেন। সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পান ১৯৯৩ সালে।
১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থিত স্বোপার্জিত স্বাধীনতা শিরোনামের ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। তার সহকারী ছিলেন শিল্পী হিমাংশু রায়। ভাস্কর্যটির মূল বেদিতে আছে একাত্তরের বিভিন্ন ঘটনার চিত্র।
স্বামী বিবেকানন্দের ভাস্কর্য নির্মাণ করেন ১৯৯৪ সালে যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে অবস্থিত। ২০০০ সালে স্বাধীনতার সংগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য উদ্যানে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদের ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। ইস্কাটনে অবস্থিত জাতীয় ভাস্কর্য গ্যালারিতে নির্মাণ করেন তিনি যেখানে আছে বিশ্বের অন্যান্য ব্যক্তিদের ভাস্কর্য।
১৯৭৫ সালে চারুকলা ইনন্সটিটিউটে শামীম সিকদারের একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৬ সালে লন্ডনের কমনওয়েলথ ইনস্টিটিউটে, ১৯৮২ সালে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে এবং ঐ বছরই শিল্পকলা একাডেমিতে তার ভাস্কর্যের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও তার অনেক একক প্রদর্শনী হয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক শিল্প গ্যালারিতে। তার ভাস্কর্যের দলগত প্রদর্শনী হয়েছে বিভিন্ন স্থানে নানা সময়ে।
শামীম সিকদারের স্বামীর নাম কবি জাকারিয়া চৌধুরী। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি ভাস্কর্যের পাশাপাশি ছবি আঁকা, জুডো, কারাতে, শ্যুটিং, বাগান করা ও গাড়ি চালাতে পারতেন। শামীম সিকদার কবিতা, সংগীত ও নাটকের ব্যাপারে আগ্রহ বোধ করেন। তিনি ইংল্যান্ড, ইতালি এবং চীন সফর করেছেন বিভিন্ন সময়ে।
ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস পুরস্কার অর্জন করেন ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৭৩ এবং ১৯৭৪ সালে। ১৯৭৩ সালে অর্জন করেন সিলভার জুবলি অ্যাডওয়ার্ড অব ফাইন আর্ট পুরস্কার। ১৯৭৪ সালে ভাস্কর্যের ওপর প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার জিতে নেন। ২০০০ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
২০২৩ সালের ২১ মার্চ বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ক্লিওপেট্রা, নামটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে একজন রহস্যময়, বুদ্ধিমতী ও শক্তিশালী নারীর প্রতিচ্ছবি। তিনি শুধু মিশরের রানি ছিলেন না, ছিলেন এক কৌশলী কূটনীতিক, দক্ষ শাসক ও ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী নারী।
উত্থান ও ক্ষমতা
ক্লিওপেট্রার জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৬৯ সালে। তখন মিশরে টলেমিক রাজবংশের শাসন চলছিল।
জুলিয়াস সিজার ও ক্ষমতা পুনরুদ্ধার
ক্লিওপেট্রা বুঝতে পারেন, রোমান সাম্রাজ্যের সহায়তা ছাড়া তিনি তার সিংহাসন ফিরে পাবেন না। তাই তিনি কৌশল অবলম্বন করেন। একজন দাসীর মতো নিজেকে গুটিয়ে একটি কার্পেটে মুড়ে রোমান সেনাপতি জুলিয়াস সিজারের সামনে হাজির হন। তাঁর বুদ্ধিমত্তা, সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে সিজার তাকে সাহায্য করেন।
মার্ক অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রার প্রেমকাহিনি
সিজারের মৃত্যুর পর ক্লিওপেট্রা মার্ক অ্যান্টনির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। অ্যান্টনি ছিলেন একজন প্রভাবশালী রোমান সেনাপতি। তাঁরা প্রেমে পড়েন এবং একসঙ্গে রোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে শক্তি গঠনের চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সম্পর্ক রোমের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে।
শেষ পরিণতি
খ্রিস্টপূর্ব ৩১ সালে অক্টাভিয়ান ও অ্যান্টনির মধ্যে সংঘটিত অ্যাক্টিয়ামের যুদ্ধে অ্যান্টনি পরাজিত হন। পরবর্তীতে অ্যান্টনি আত্মহত্যা করেন। ক্লিওপেট্রা পরাজয়ের শোক ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা সহ্য করতে না পেরে কিংবদন্তি মতে বিষধর সাপের কামড়ে আত্মহত্যা করেন। কথিত আছে এই সাপ তার কাছে ডুমুরের ঝুড়িতে লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেকের মতে, তিনি আত্মহত্যা করেননি বরং খুন হয়েছিলেন। ইতিহাসবিদদের মতামত ভিন্ন হলেও তাঁর যে করুণ পরিণতি হয়েছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার মৃত্যু দিয়ে মিশরের স্বাধীন রাজত্বেরও সমাপ্তি ঘটে এবং এটি রোমান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে যায়।
কেন তিনি আজো গুরুত্বপূর্ণ?
ক্লিওপেট্রা শুধু তার সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত নন। তিনি ছিলেন একাধারে একজন বুদ্ধিমান কৌশলী, বহু ভাষাবিদ এবং দক্ষ শাসক। তার জীবন ও প্রেমকাহিনি যুগে যুগে সাহিত্য, নাটক ও সিনেমায় স্থান পেয়েছে। শেক্সপিয়রের নাটক ‘অ্যান্টনি ও ক্লিওপেট্রা’ থেকে শুরু করে আধুনিক হলিউডের সিনেমা সব জায়গায় তিনি এক রহস্যময় ও শক্তিশালী নারী হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন।
সূত্র : হিস্টোরি হিট
প্রতিবছর প্রতিমাসের নির্দিষ্ট কিছুদিনে বিভিন্ন দেশেই কিছু দিবস পালিত হয়ে থাকে। এই নির্দিষ্ট দিনে অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সমস্ত দিবস পালিত হয়ে থাকে। বিশ্বে পালনীয় সেই সমস্ত দিবসগুলির মধ্যে একটি হল বিশ্ব চড়ুই পাখি দিবস। প্রতি বছর ২০ মার্চ সারা পৃথিবী জুড়ে বিশ্ব চড়ুই পাখি দিবস পালিত হয়।
ভারতে নেচার ফরএভার সোসাইটি (এনএফএস) বিশ্ব চড়ুই দিবস উদযাপনের জন্য একটি উদ্যোগ নেয়। তারপর এই সোসাইটি ফ্রান্সের ইকো-সিস অ্যাকশন ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সহযোগিতায় ২০১০ সালে ২০ মার্চ দিনটিকে বিশ্ব চড়ুই পাখি দিবস হিসেবে পালন করে। তারপর থেকে প্রতি বছর ২০ মার্চ বিশ্বজুড়ে ক্রমশঃ কমতে থাকা চড়ুইপাখিদের প্রতি মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্বে চড়ুই একসময় বাড়ির কাছাকাছি সবচেয়ে বেশি দেখতে পাওয়া যেত, কিন্তু বিগত কয়েক বছরে, এই পাখিটির সংখ্যা শহর ও গ্রাম উভয় জায়গা থেকেই অনেকাংশে হ্রাস পাচ্ছে।
চড়ুইয়ের সংখ্যা কমে যাওয়া আমাদের জন্যও সতর্কতা। পরিবেশের কী মাত্রায় পরিবর্তন হলে একটা প্রজাতি ধীরে ধীরে কমে যায়, চড়ুইয়ের কমে যাওয়া সেদিকেই নির্দেশ করে। তাই বিশ্ব চড়ুই পাখি দিবস-এর উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলে এই পাখিগুলিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো।
বিভিন্ন শিক্ষামূলক এবং প্রচারমূলক কাজের মাধ্যমে দিনটিকে পালন করা হয়। ছোটদের এই দিবস এবং চড়ুইপাখির গুরুত্ব বোঝানো হয় যাতে তারা আগামী দিনে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকে। পাশাপাশি সারাবছর ধরেই যেন পাখিদের জন্য কিছু করা হয় সেই শিক্ষা দেওয়া। যেমন প্রবল গ্রীষ্মে জলকষ্টে যাতে চড়ুই ও অন্যান্য পাখি মারা না যায় সে জন্যে ঘরের ছাদে বা বারান্দায় বাটিতে করে জল রাখলে পাখিদের কিছু সুরাহা হতে পারে, সঙ্গে পাখিদের উপযুক্ত কিছু খাবার রাখা। এই দিবসের একটি নির্দিষ্ট থিম বা প্রতিপাদ্য আছে।
প্রতিবছর সেই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে এই দিনটি উদযাপন করা হয়। প্রতিপাদ্যটি হলো- ‘আমি চড়ুই ভালোবাসি’ (I LOVE Sparrows)। প্রতিপাদ্যটি মানুষ এবং চড়ুইয়ের মধ্যেকার সম্পর্ককে মনে করে বানানো হয়েছে।
মানুষ এবং প্রাণী উভয়ই এই প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাই একে অপরকে ভালবাসতে হবে।
বিশ্ব শিশু ও যুব থিয়েটার দিবস আজ ২০ মার্চ। প্রতি বছর এই দিনে বিশ্বের প্রতিটি দেশে শিশুদের নিয়ে পালিত হয় দিবসটি। ২০০১ সালে আন্তর্জাতিকভাবে এ দিনটিকে বিশ্ব শিশু-কিশোর ও যুব নাট্য দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এরপর থেকেই বাংলাদেশে পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনের (পিটিএ) উদ্যোগে সারা দেশে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় বর্ণিল অনুষ্ঠানে দিবসটি উদ্যাপিত হয়ে আসছে।