ঈদ যাত্রায় বাসের আগাম টিকিট ১৪ মার্চ থেকে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদ যাত্রায় বাসের আগাম টিকিট ১৪ মার্চ থেকে
সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৪ মার্চ থেকে বাসের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে। আগাম হিসেবে ২৫ মার্চ থেকে ঈদের আগে মোট ৭ দিনের টিকিট বিক্রি করা হবে। 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ঈদ সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানান, ১৪ মার্চ থেকে আগাম টিকিট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিন একযোগে অনলাইনে ও কাউন্টার থেকে বাসের টিকিট পাবেন যাত্রীরা। তবে অনেক পরিবহন এবার অনলাইনে পুরোপুরি টিকিট দেবে। ফলে দুই জায়গায় টিকিট পাবেন যাত্রীরা।

নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না জানিয়ে শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নেওয়া হবে।

সব মালিককে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ঈদের সময় স্বাভাবিক নিয়মেই বাস চলাচল করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় আমাদের মালিক সমিতির মনিটরিং টিম থাকবে টার্মিনালে, তারা কাজ করবে। নাইট কোচগুলোতে নিরাপত্তার স্বার্থে ভিডিও করে রেখে তারপরে গাড়ি ছাড়ার একটা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

ট্রেনের আগাম টিকিটও বিক্রি আগামী ১৪ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে, যা চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত।

এ সময় যাত্রীরা ২৪ থেকে ৩০ মার্চের টিকিট পাবেন। রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম এ কথা জানান।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

একনজরে আজকের কালের কণ্ঠ (১৩ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটির জীবন সংকটাপন্ন, দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা
ঢাকাস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)। ছবি : সংগৃহীত

মাগুরায় নির্যাতনের শিকার শিশুটির সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বুধবার (১২ মার্চ) রাতে শিশুটির জন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া চেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে।

এতে জানানো হয়েছে, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ), ঢাকায় শিশু বিভাগের পিআইসিইউ’তে (Pediatric Intensive Care Unit) চিকিৎসাধীন। প্রতিদিন স্ট্যান্ডার্ড আইসিইউ প্রটোকল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং তদানুযায়ী সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

এতে আরো জানানো হয়, শিশুটি বুধবার চারবার Cardiac Arrest-এর শিকার হয়েছে এবং CPR প্রদানের মাধ্যমে স্থিতিশীল করা হয়েছে। তার রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতার কারণে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি শিশুটির রক্তচাপ ৬০/৪০ যা আরো নিম্নমুখী।  

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসা পর্ষদ  সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে শিশুটির জীবন রক্ষার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ সন্ধ্যা ছয়টায় শিশুটি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় সংকটাপন্ন অবস্থায় ভর্তি হয়। শিশুটির সুস্থতার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশবাসীর কাছে দোয়াপ্রার্থী।

মন্তব্য

আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব, যাবেন রোহিঙ্গা শিবিরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব, যাবেন রোহিঙ্গা শিবিরে
সংগৃহীত ছবি

চার দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আগামীকাল শুক্রবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনের সময় তিনি এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা জানানো জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরের লক্ষ্য। একই সঙ্গে এই সফরের মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বিশ্বসম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাবেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস প্রতিবছর রমজানে শরণার্থীশিবির ও শরণার্থী পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। এবার তিনি বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে আগামীকাল দিনে তাঁর পানাহার থেকে বিরত থাকারও কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বুধবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বড় পরিসরে আলোচনা হবে।

প্রেস সচিব জানান, জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরে রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহায়তাসহ বড় ধরনের অগ্রগতি আসতে পারে। একই সঙ্গে মহাসচিব রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন। রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমে গেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরে রোহিঙ্গা সমস্যা বিশ্বনেতাদের নজরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাঁরা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে একসঙ্গে কক্সবাজার যাবেন। আগামীকাল কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দিনভর নানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। সন্ধ্যায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রধান উপদেষ্টার সম্মানে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে এক ইফতার মাহফিলে যোগ দেবেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ সফরকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির (ভিআইপি) মর্যাদা পাবেন।

তিনি পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরুর আগে ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ছিলেন। তাই রোহিঙ্গা সংকট এবং এর জটিলতার বিষয়ে আগে থেকেই তিনি অবগত। পরিবর্তিত বিশ্বপরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রতি বৈশ্বিক সাহায্য-সহযোগিতা কমছে। তাই এ সংকটের সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে এ বিষয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের দৃষ্টি অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

কর্মকর্তারা বলেছেন, রাখাইনে খাদ্য ও মানবিক সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘ বাংলাদেশের সহযোগিতা চাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ এ বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হতে চাচ্ছে।

গত জুলাই-আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘন তদন্তে জাতিসংঘের তদন্তদল গত মাসে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর বাংলাদেশে মানবাধিকার ইস্যুতে গুরুত্ব দিতে গুতেরেসের প্রতি বিভিন্ন সংস্থা আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আগামী শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক করার কথা রয়েছে। সফর শেষে আগামী রবিবার তিনি ঢাকা ছাড়বেন।

মন্তব্য

‘শাহবাগী’ ট্যাগ দেওয়া নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘শাহবাগী’ ট্যাগ দেওয়া নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘শাহবাগের ছাত্র-তরুণ যারা মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, শাহবাগী ট্যাগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মব উস্কে দেয়া বা বিভেদ তৈরি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

আজ বুধবার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। 

উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের ফেসবুক পোস্ট পাঠকের জন্য হুবহু নিচে তুলে দেওয়া হলো—

জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল। কিন্তু, নাহিদ ইসলাম যেভাবে বলেছেন এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তারা কাফফারা দিয়েছেন।

আমিও বলেছি, জামায়াতের যারা বাংলাদেশপন্থী, তারা এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখেন। জামায়াতের নতুন প্রজন্মের অল্প কিছু ব্যতিক্রম বাদে কেউই পাকিস্তানপন্থী নন। ফলে, স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। রাজনৈতিক ও আদর্শিক লড়াই করেই তাদের বিরুদ্ধে জিততে হবে।
তাদের প্রোপাগান্ডা ওয়ারের জবাব দিতে হবে সত্য দিয়ে।  

শাহবাগে যারা গিয়েছিল একটা বড় অংশ 'চেতনা'র অন্ধতায় পড়ে গিয়েছিল। অনেক ছাত্র-তরুণ ইসলামবিদ্বেষ থেকে না, বরং নিছক যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবিতে গিয়ে উপস্থিত ছিল। তরুণ প্রজন্মের আবেগকে আওয়ামীলীগ ও বামপন্থীদের মুজিববাদী অংশ কাজে লাগিয়ে এদেশে মবোক্রেসি কায়েম করেছিল।

যার ফসল ছিক দীর্ঘ এক দশকের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন-বিরোধীদলীয় কর্মীদের গুম, খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়ন। 

কিন্তু, শাহবাগে অংশ নেয়া অনেক ছাত্র-তরুণই তাদের ভুল বুঝতে পেরে মুজিববাদী বয়ানের বাইরে যেতে চেয়েছেন। গত কয়েক বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা অংশীজন ছিলেন। আহতও নিহত হয়েছেন। তারা আমাদের সহযোদ্ধা।

তারা আমাদের কমরেডস বটেন! এ অভ্যুত্থানে শক্তিশালী ভূমিকা রেখে তারা লীগ ও মুজিববাদের পরাজয় নিশ্চিত করেছেন। তারা ইতোমধ্যে তাদের রাজনৈতিক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তথা কাফফারা আদায় করেছেন। 

আমি নিজে শাপলায় এসেছিলাম লংমার্চে নবীজির প্রতি ভালোবাসায়। ৫ই মে তে আমি আসতে পারিনি। কিন্তু, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও জামায়াত নেতাদের ভূমিকা নিয়ে আমাদের আগ্রহ ছিল না। আমরা মূলত নবীজির সম্মান ও ভালোবাসা সামনে রেখে ঢাকায় এসেছিলাম। আমি শর্ষিণাপন্থী যে মাদ্রাসায় পড়েছি, সেখানে জামায়াত নেতাদের ভ্রান্ত আকিদার অনুসারী হিসাবে গণ্য করা হত। আর, জামায়াত নেতাদের ফাঁসিকে দেখা হত তাদের আলেম ও সহি ' ইসলাম' বিরোধিতার ফসল হিসাবে। জামায়াতকে আমরা ছোটবেলা থেকে আলেম- ওলামা বিরোধী হিসাবেই জেনে এসেছি। 

অনেকেই হয়ত খেয়াল করেন না,  অধিকাংশ শাপলার কর্মীরাই আসলে জামায়াতের আকিদা ( বিশ্বাস ও কর্মপন্থা) ও নেতৃত্ব বিরোধী। শাপলার অনেক নেতৃত্বই জামায়াতের আলেম ও পীরপন্থা বিরোধিতার শিকার। এমনকি অনেকেই জামায়াত ও শিবির নেতাদের কর্তৃক নিগৃহীত ও নিপীড়িত হয়েছেন। কিন্তু, জামায়াত সফলভাবেই  তাদেরকে প্রক্সি হিসাবে ব্যবহার করতে পেরেছে। যেমন লীগ ' শাহবাগী'দের ব্যবহার করেছে। 

আমরা অভ্যুত্থান- উত্তর সময়ে উপনীত হয়েছি। এখানে জামায়াতকে বা শিবিরের কর্মীদের ' রাজাকার',  'স্বাধীনতাবিরোধী' বলে বধযোগ্য করার যে বয়ান সেটার বিরোধী আমরা। তেমনি, শাহবাগের ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান। এ ইসলামফোবিয়ার শিকার আমি নিজে হয়েছি। পাঞ্জাবি টুপি পরলেই জঙ্গীবাদী বলা থেকে শুরু করে মাদ্রাসাছাত্রদের ও আলেমদের বিমানবিকীকরণের জন্য শাহবাগ দায়ী। শাহবাগের সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত বিএনপি- জামায়াতসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ঊন-মানুষে পরিণত করেছিল। 

কিন্তু, অভ্যুত্থান- উত্তর সময়ে একটি সংলাপমুখর সময় এসে উপস্থিত হয়েছে। শাপলা- শাহবাগের বাইনারির বাইরে এসে শাহবাগের প্রাণভোমরা - মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে পুরাতন শাপলা ও শাহবাগের কর্মীদের 'কমরেডস' হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। আসলে, শাপলা- শাহবাগের কর্মীরা কমরেডস হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনার পতন ঘটেছিল।  এদিকে, শাপলার নেতৃত্বের জন্যও  কারো প্রক্সি না হয়ে রাষ্ট্রে ইজ্জত ও শরিকানা দাবির সুন্দর সুযোগ উপস্থিত হয়েছিল। 

আমি আমার আগের দুটি পোস্টে আলেম- ওলামাদের ধন্যবাদ দিয়েছিলাম তাদের শক্তিশালী ভূমিকার জন্য ( ছবি সংযুক্ত)। তৌহিদবাদী জনতার নেতৃত্ব যেন ফ্রিঞ্জ এলেমেন্টের হাতে না গিয়ে  মূলধারার হকপন্থী আলেমদের হাতে থাকে, এ আশা রাখি। মূলধারার আলেমরা আশা করি গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে, দেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে শাহবাগের মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। নিজেরা সে সংস্কৃতির অনুকরণ করবেন না। এক্ষেত্রে আমরা মজলুম ও গণতান্ত্রিক মূলধারার আলেমদের পক্ষেই থাকব।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শাপলার গণহত্যার বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা শাপলার হত্যাযজ্ঞ ডকুমেন্টেশনের কথা বলেছেন। আশা করি, শাপলায় শহিদ মাদ্রাসাছাত্র ও আলেমদের বিরুদ্ধে যে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বর্বর শেখ হাসিনা, তার সুষ্ঠু তদন্ত, ডকুমেন্টেশন ও বিচার নিশ্চিত হবে।  

সাবেক 'শাহবাগী' যারা অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নিজেদের ন্যায্য অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, লড়াই করেছেন- তাদেরকে কোনভাবেই বধযোগ্য করে তোলা যাবে না। যাকে তাকে 'শাহবাগী' ট্যাগ দিয়ে অভ্যুত্থান- উত্তর সময়ে বৃহত্তর সংহতির সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করা যাবে না। শাপলাপন্থী কেউ যদি ভাবেন, লীগ বিরোধী ও অভ্যুত্থানের পক্ষের সাবেক 'শাহবাগী'দের শত্রু ও বধযোগ্য বানিয়ে তারা সফল হবেন, তা কিন্তু হবে না। আপনি শাপলার হয়ে মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার দাবি করলে আপনিও তো 'শাহবাগী' হয়ে উঠবেন,  নাকি? বামপন্থীদের মধ্যে যারা মুজিববাদ বিরোধী, তারা কিন্তু অনেক আগে থেকেই শাপলার হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে উচ্চকন্ঠ ছিলেন (ছবি সংযুক্ত)।  ফলে,শত্রু- মিত্র ফারাক করা আমাদের জন্য খুবই জরুরি। 

তবে, পুরাতন 'শাহবাগী', যারা এখনো  শাহবাগের প্রাণভোমরা- মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের প্রতি আনুগত্যকে নিজেদের আদর্শ বলে মনে করেন, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া উচিত হবেনা। এরাই গুম ও গণহত্যার উস্কানি দিয়েছিল ও ন্যায্যতা তৈরি করেছিল। জুলাই গণহত্যার সময়ও এরা চুপ ছিল, কেউ কেউ বৈধতা উৎপাদনে ব্যস্ত ছিল। বিদেশ থেকে এখনো যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে সাফাই গাইছে, এদের একটা বড় অংশ শাহবাগের ফ্যাসিবাদী। এরা জনগণের শত্রু, ন্যায়বিচার ও  গণতন্ত্রের শত্রু, গণ- অভ্যুত্থানের শত্রু। এদের বিচার শুরু হয়েছে, শেষ ও হবে। 

অভ্যুত্থান- উত্তর বাংলাদেশে শাহবাগে বেড়ে ওঠা মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি সব পক্ষকেই বাদ দিতে হবে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও সহ-নাগরিকদের সাথে মর্যাদাপূর্ণ সংলাপ ও সংহতির দিকে সবাইকে এগুতে হবে। শাহবাগের ছাত্র-তরুণ যারা মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, ‘শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মব উস্কে দেয়া বা বিভেদ তৈরি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। রাজনৈতিক ভেন্ডেটা (Vendetta) থেকে হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই থাকবেই। কিন্তু, গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাদেরকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও  মৈত্রী বাড়াতে হবে, শত্রু কমাতে হবে এবং  চিহ্নিত শত্রুর দীর্ঘমেয়াদে পরাজয় নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ