অপরাধ

দুই মাসে ঢাকা বিভাগে ১৪২ খুন

  • সারা দেশে ২ মাসে ৫১১ খুন
রেজোয়ান বিশ্বাস
রেজোয়ান বিশ্বাস
শেয়ার
দুই মাসে ঢাকা বিভাগে ১৪২ খুন

সারা দেশে চলতি বছর প্রথম দুই মাসে ৫১১ জন খুন হয়েছে। সেই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯ জন করে খুন হয়। গত বছর একই সময় খুন হয়েছিল ৪৭১ জন। পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য জানা গেছে।

সে অনুযায়ী এই দুই মাসে গত বছরের চেয়ে চলতি বছর ৪০ জন বেশি খুন হয়েছে।

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা, অস্থিরতা ও প্রতিহিংসা বেড়েছে। আইনের কঠোর প্রয়োগ না হওয়ায় তুচ্ছ ঘটনায় মানুষ খুনের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে। 

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তাঁদের সর্বাত্মক চেষ্টা রয়েছে।

হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। 

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য মতে, নিহতদের মধ্যে শিশু, নারীসহ সব বয়সী মানুষ রয়েছে। হত্যাকাণ্ডে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা ব্যবহার করা হচ্ছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ৫১১ জন খুন হয়েছে।

এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯ জন করে খুন হয়। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে খুন হয় ২৪০ জন। ফেব্রুয়ারিতে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭১। গত বছর একই সময়ে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) দেশে খুন হয় ৪৭১ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ২৩১ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৪০ জন।
 

অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে দেশে খুনের ঘটনা ৪০টি বেশি। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের মাসিক অপরাধ প্রতিবেদনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ঘরে ৩০০ জন খুন হওয়ার তথ্য রয়েছে। জানুয়ারিতে খুন হয়েছে ২৯৪ জন। গত দুই মাসে ৫৯৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটে দেশে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের (এআইজি মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর কালের কণ্ঠকে বলেন, ৫৯৪টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে মামলা সূত্রে আগের ৮৩টি হত্যাকাণ্ড যোগ হয়েছে। এই ৮৩টি হত্যাকাণ্ড বাদ দিলে দুই মাসে হত্যার মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫১১।   

পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিবেদনে জানা গেছে, চলতি বছর প্রথম দুই মাসে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি, ১৪২ জন খুন হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৭৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৬৬ জন। এতে এই দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে দুজনের বেশি খুন হয়েছে।

চট্টগ্রামে গত দুই মাসে খুন হয়েছে ১০১ জন; জানুয়ারিতে ৫১ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ৫০ জন। সিলেটে খুন হয় ৩৪ জন; জানুয়ারিতে ২১ জন এবং ফ্রেব্রুয়ারিতে ১৩ জন। খুলনায় খুন হয় ৫০ জন; জানুয়ারিতে ২৮ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন। রাজশাহীতে খুন হয় ৫২ জন; জানুয়ারিতে ৩০ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ২২ জন। রংপুরে খুন হয় ৪২ জন; জানুয়ারিতে ১৯ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৩ জন। ময়মনসিংহে খুন হয়েছে ৩২ জন; জানুয়ারিতে ১৩ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ১৯ জন। বরিশালে খুন হয়েছে ২৮ জন; জানুয়ারিতে ১২ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে ১৬ জন।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে দেশে ৭৪৩ জন খুন হয়। এর মধ্যে নভেম্বরে ২১১ জন, অক্টোবরে ২৪৯ জন এবং সেপ্টেম্বরে ২৮৩ জন।

হত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের (এআইজি মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নানা কারণে হত্যার ঘটনা বেড়েছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’

সাম্প্রতিক চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড : ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে গাড়িচালক রবিনের সঙ্গে পরিচয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর। দেড় মাসের পরিচয়ের সূত্রে সাক্ষাতের জন্য তাকে গত ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর মহাখালী এলাকায় ডেকে নেন রবিন। সেখান থেকে হাজারীবাগে বন্ধুর ভাড়া করা বাসায় নিয়ে হাত-পা বেঁধে পাঁচজন মিলে ধর্ষণের পর মেয়েটিকে হত্যা করা হয়। ১৭ দিন পর হাতিরঝিল থেকে মেয়েটির বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান দক্ষিণখান থানার ওসি মোহাম্মদ তায়েফুর রহমান।

গত ২৫ জানুয়ারি রাতে খুলনা নগরীর তেঁতুলতলা মোড়ে গুলি ছুড়ে হত্যা করা হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অর্ণব কুমার সরকারকে। অর্ণবের বাবা নীতীশ কুমার সরকার বলেন, ‘কারো সঙ্গে কোনো দিন দুর্ব্যবহার করেনি আমার বাবা। আমিও কোনো দিন কারো ক্ষতি করিনি। তাহলে আমার ছেলেকে ওরা কেন এভাবে হত্যা করল?’

গত ৩১ জানুয়ারি ফরিদপুরে ফরহাদ প্রামাণিক নামে এক রিকশাচালককে হত্যা করা হয়। তাঁর রিকশাটিও নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, রিকশাটি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যই ফরহাদকে হত্যা করা হয়।

গত ২৯ জানুয়ারি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এলাকায় মিনহাজুর রহমান নামের এক তরুণ প্রকৌশলীকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়। নিহতের ভগ্নিপতি খালিদ মাহফুজ বলেন, বেসরকারি একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়া শেষ করে সফটওয়্যার ফার্মে চাকরি করতেন মিনহাজ।

একই দিন নগরের কাশিপুর ইছাকাঠিসংলগ্ন একটি দীঘি ও আশপাশের এলাকা থেকে এক নারীর দেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়। গত ৯ জানুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি গোলাম রব্বানী টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গুলি করে রাজু নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মো. রিফাত নামের এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি বরগুনার কচুপাতা পুরাতন বাজার এলাকার আমতলিতে আরাফাত খান নামের এক যুবককে টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়।

চলতি মাসেও বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভুঁইয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরের দিন বুধবার রাতে রাজধানীর বাড্ডায় মো. তানভীর (২২) নামের এক যুবক খুন হন। পুলিশ ও নিহত তানভীরের পরিবারের সদস্যরা জানায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসার কাছে স্থানীয় কিশোর সন্ত্রাসী গ্রুপের ছয়-সাতজন মিলে তানভীরকে কুপিয়ে হত্যা করে।

গত ৮ মার্চ মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর উপজেলায় মসজিদে ঢুকে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত ১২ মার্চ ঢাকার ধামরাইয়ে হাত-পা বাঁধা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তৎপর রয়েছে। অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, হত্যার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার। উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মারা গেলে পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আলোচিত-১০ (২১ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে রাজধানীতে নোফেল সোসাইটি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের আগে হত্যাকারীদের বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হবে। ’৭২ ও ’৭৫-এ দিল্লি থেকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয় এবং সেখান থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে অন্তঃকোন্দলে ব্যস্ত না থেকে সবাইকে এক থাকার আহ্বানও জানান তথ্য উপদেষ্টা।

মন্তব্য

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানের দেখা হওয়ার সুযোগ থাকলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। গতকাল বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতার ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংকক সফর করার কথা রয়েছে।

সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকের জন্য দিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে ঢাকা। গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন ব্যক্তি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের জন্য অনুকূল নয়।

তাদের একজন অবশ্য বলেন, ‘সাক্ষাৎ বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কারণ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল নেতা বেশ কয়েকবার একে অপরের সঙ্গে থাকবেন। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না।’

আরেকজন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে যখন ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ কেউ প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

এই পরিস্থিতি বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয়।’

বৃহস্পতিবার এএনআইকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করেছি।’

এদিকে, আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ৮ম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদের বৈঠক হয়।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার

বাসস
বাসস
শেয়ার
ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ঈদ যাত্রা উপলক্ষে নতুন সেতু ও সড়ক খুলে দিয়েছে সরকার। যানজট নিরসন, যাত্রী নিরাপত্তা, টিকিটের অতিরিক্ত দাম ও টিকিট কালোবাজারি বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

এবারের ঈদ যাত্রায় অন্যান্য বারের মতো যেন বিড়ম্বনা তৈরি না হয়, সে জন্য সারাদেশে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশ।

৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে ১০১৮টি চেকপোস্ট ও টহলে থাকবে হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। ঈদ যাত্রাকে বছরের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদ উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ হতে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। ২০ মার্চ হতে বিআরটিসি’র ডিপো থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে এবং আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের বাস চলাচল করবে।

সঙ্গে বাস রিজার্ভের সুবিধাও রেখেছে বিআরটিসি।

সড়কপথে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সারাদেশে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সারাদেশে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করতে সড়ক-মহাসড়কে কাজ করবে জেলা পুলিশ, যা অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। আর ঈদে যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঢাকার মূল সড়কগুলোয় ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখবে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

সারাদেশের ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ ৩৭৭টি চেকপোস্ট এবং জেলা পুলিশ ১১৪টি চেকপোস্ট ও ৫২৭টি টহল দল পরিচালনা করবে।

যানজট নিরসনে সারাদেশে ৬৪টি ‘ব্লাক স্পট’ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য কাজ করবে। এছাড়া যেসব এলাকায় সংস্কার কাজ ও বাজারের জন্য যানজট লেগে যায়, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করা কথা জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এর পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সারাদেশের চেকপোস্টগুলো লাইভ ভিডিও’র মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের ৮টি রেঞ্জের ডিআইজিগণ এসব চেকপোস্ট তদারকি করবেন। ইতোমধ্যে এলেঙ্গা, চট্টগ্রাম হাইওয়ে, মহিপাল ও নোয়াখালীসহ সড়কে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান বাসস’কে বলেছেন, ঢাকা থেকে যেন বাস সহজে বের হতে পারে সেজন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকায় প্রবেশ ও বহির্গমনে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে সড়কে ট্রাক-লরি চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এক টনের পিকআপ ট্রাকগুলোর চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার মিঞা বাসস’কে বলেছেন, এবারের ঈদে আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। একইসাথে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা যেন না থাকে সেজন্য আমরা সারাদেশের মহাসড়কে টহল, চেকপোস্টসহ নিরাপত্তা জোরদার করছি। এবার সুন্দর ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ