<p>ইংল্যান্ডে ১৮৬২ সালে হেনরি উইলিয়াম ব্র্যাগের জন্ম হয়েছিল। ছাত্র হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। পড়াশোনা করেছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেমব্রিজে থাকাকালীন সময়ে তিনি খ্যাতিমান পদার্থবিজ্ঞানী স্যার জে জে টমসনের অধীনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। </p> <p>পড়াশোনা শেষ করে ১৮৮৬ সালে হেনরি ব্র্যাগ চলে এসেছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। অ্যাডেলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এখানে ছাত্র পড়ানোর পাশাপাশি তিনি এক্স-রে নিয়ে মৌলিক গবেষণার কাজ শুরু করেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল এক্স-রে বিচ্ছুরণ এবং এক্স-রে স্পেকট্রোস্কোপি। </p> <p>অ্যাডেলেইডে তার পুত্র লরেন্স উইলিয়াম ব্র্যাগের জন্ম হয়েছিল ১৮৯০ সালে। লরেন্স ব্র্যাগ ছিলেন তার পিতার মতোই তুখোড় মেধাবী। ছোটবেলা থেকেই তিনি বিজ্ঞান এবং গণিতে অসাধারণ মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। অ্যাডেলেইড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লরেন্স ব্র্যাগ ১৯০৮ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। <br /> সেই সময় তার পিতা হেনরি ব্র্যাগ ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত সম্মানিত ক্যাভেন্ডিস প্রফেসর হিসেবে যোগদান করার আমন্ত্রণ পান। ১৯০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে তারা সপরিবারে ফিরে যান ইংল্যান্ডে। </p> <p>সে বছরই গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট হিসেবে লরেন্স ব্র্যাগ ভর্তি হয়েছিলেন কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে। সেই সঙ্গে তিনি পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এক্স-রে বিচ্ছুরণ নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। মাত্র ২২ বছর বয়সেই তিনি এক্স-রে নিয়ে পিতার গবেষণাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন। গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে তিনি ক্রিস্টালের ভেতরে এক্স-রে বিচ্ছুরণের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এর ফলে এক্স-রে বিচ্ছুরণের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ক্রিস্টালের আণবিক গঠন সম্পর্কে বিশদ তথ্য পাওয়া গেল। এ ব্যাপারে পিতা ও পুত্রের যৌথ গবেষণার ফল প্রকাশিত হলো। এই প্রযুক্তিকে বলা হয় এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটির জন্য ১৯১৫ সালে, হেনরি ব্র্যাগ এবং তার সুযোগ্য পুত্র লরেন্স ব্র্যাগকে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। লরেন্স ব্র্যাগের বয়স তখন ছিল মাত্র ২৫ বছর।</p> <p>পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি। তার এই রেকর্ড আজও অক্ষুণ্ন রয়েছে। অন্যদিকে পিতা ও পুত্রের একই সঙ্গে নোবেল বিজয় ছিল একটি অসাধারণ ঘটনা। </p> <p>পরবর্তীতে এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন জটিল অণুর গঠন প্রণালী সম্বন্ধে মানুষ অনেক তথ্য জানতে পেরেছে। ডিএনএর ডাবল হেলিক্স গঠন আবিষ্কারের পেছনেও এই প্রযুক্তিটির অবদান রয়েছে।</p>