<p>ফাঙ্গাল ইনফেকশন হল ছত্রাকের কারণে ত্বকে বা শরীরের ভিন্ন অংশে হওয়া সংক্রমণ। দাদ, ছুলির, নানা ধরনের চুলকানির ফাঙ্গাল সংক্রমণের কারণে।</p> <p>ছত্রাক কি তা বোধহয় আমরা সবাই জানি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ ব্যাঙের ছাতা। কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মতো ছত্রাক আমাদের সংক্রমিত করতে পারে না। যেসব ছত্রাক শরীরকে সংক্রমিত করে, সেগুলো আসলে মাইক্রো অর্গানিজম। এগুলো খালি চোখে দেখা যায় না। </p> <p>আর্দ্র ও উষ্ণ পরিবেশে এগুলো খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আমাদের ত্বকে এবং শরীরে কিছু নির্দিষ্ট মাত্রায় ছত্রাক থাকে। এগুলো তেমন ক্ষতিকর নয়। তবে এদের সংখ্যা যখন অতিরিক্ত বৃদ্ধি তা ইনফেকশনের কারণ হয়।</p> <p>রিংওয়ার্ম: এটি আমাদের খুব পরিচিত একটা রোগছত্রাক সংক্রমণের ত্বকে গোলাকার, লালচে আকারের চাকা তৈরি করে এবং এতে চুলকানি হয়। এটি শরীরের যেকোনো স্থানে হতে পারে। এটাকেই আমরা ‘দাদ’ বলি। </p> <p>অ্যাথলেটস ফুট: পায়ের তলায় হওয়া ফাঙ্গাল সংক্রমণ, বিশেষত আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায়। এটি চুলকানি, জ্বালাপোড়া, ও ফাটলের কারণ হতে পারে।</p> <p>ইয়েস্ট ইনফেকশন: ক্যান্ডিডা নামক একধরনের ছত্রাকের কারণে হয়, যা মুখ, ত্বক, বা প্রজনন অঙ্গগুলিতে হতে পারে।</p> <p>জক ইচ: এটি ত্বকে হওয়া একধরনের ফাঙ্গাল সংক্রমণ, যা সাধারণত উরু, উরুর ভাঁজ, ও তলপেটে চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।</p> <p>নখের ফাঙ্গাল ইনফেকশন : নখের ওপর বা নখের নিচে ছত্রাক বৃদ্ধি পেয়ে সংক্রমণ সৃষ্টি করে, ফলে নখ হলদেটে বা মোটা হয়ে যেতে পারে।</p> <p>ফাঙ্গাল ইনফেকশন সাধারণত খুব মারাত্মক হয় না, তবে তা দ্রুত ছড়াতে পারে এবং অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, শুকনো এবং আরামদায়ক পরিবেশ বজায় রাখা জরুরি।</p> <p>ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে বাঁচতে কিছু কার্যকরী উপায় হলো:</p> <p>শরীর ও ত্বক পরিষ্কার রাখা: প্রতিদিন গোসল করুন এবং বিশেষত গরমের সময় ঘামের কারণে ত্বকে ফাঙ্গাল বাড়তে পারে, তাই ত্বক শুষ্ক রাখুন।</p> <p>পরিষ্কার ও আরামদায়ক পোশাক পরিধান: ঢিলেঢালা এবং সুতি কাপড় ব্যবহার পরুন। এ ধরনের কাপড়ের ফঁক দিয়ে ত্বকে বায়ু চলাচল করে এবং আর্দ্রতা কম থাকে। একই পোশাক বারবার না পরার চেষ্টা করুন।</p> <p>পায়ের যত্ন নিন: পা শুকনো রাখুন, এবং দীর্ঘ সময় ভেজা বা ঘামে ভিজে থাকা পা যেন না থাকে। প্রতিদিন মোজা পরিবর্তন করুন এবং প্রয়োজনে ফাঙ্গাল প্রতিরোধী পাউডার ব্যবহার করুন।</p> <p>ব্যক্তিগত জিনিসপত্র আলাদা রাখুন: তোয়ালে, চিরুনি, কাঁচি ইত্যাদি ব্যবহার ব্যক্তিগত রাখুন। অন্যের সাথে শেয়ার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।</p> <p>ফাঙ্গাল প্রতিরোধী ওষুধ: যারা খুব বেশি আক্রান্ত, তারা ফাঙ্গাল প্রতিরোধী ক্রিম বা পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করবেন।</p> <p>স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া, যেমন সবুজ শাকসবজি, ভিটামিন সি যুক্ত ফল, ইত্যাদি বেশি করে খান।  </p> <p>নখের যত্ন নিন: নখ নিয়মিত ছাঁটুন এবং পরিষ্কার রাখুন। কারণ  নখের আশপাশে  ফাঙ্গাস সহজেই জন্মাতে পারে। </p> <p>এছাড়াও, ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং কারণ এটি শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে।</p> <p>সূত্র: ল্যানসেট</p>