মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমসেরনগর রেলস্টেশনের পশ্চিম পাশে ব্যক্তি উদ্যোগে রোপণ করা চল্লিশটি পাম গাছের সৌন্দর্যবর্ধন কাজ সম্পন্ন করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। এতে স্থানীয়দের প্রশংসায় ভাসছেন তারা। শুক্রবার ( ১৪ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে বসুন্ধরা শুভসংঘের মৌলভীবাজার জেলা ও কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে পাম গাছগুলোর সৌন্দর্যকরণ কাজ করা হয়।
পরে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন ও র্যালির আয়োজন করা হয়।
এসময় উপস্থিত সুধীজন বসুন্ধরা শুভসংঘের এমন মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করে এবং তাদের অভিনন্দন জানান।
সম্প্রতি শমসেরনগর স্টেশন এলাকায় ২০ বছর ধরে ৪০টি পামগাছের বেহাল দশা, এ বিষয়টি নজরে আসে বসুন্ধরা শুভসংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখার। পরে তারা পরগাছায় বিবর্ণ পামগাছের সৌন্দর্য বর্ধনে এগিয়ে আসেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পামগাছের পরিষ্কার কাজ শুরু হয়।
টানা ১০ দিন ধরে শ্রমিকরা উঁচু পাম গাছের গুড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত পরিষ্কার করেন। শুক্রবার কাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি এম মুহিবুর রহমান মুহিব, শেখ বোরহান উদ্দিন (রহ :) ইসলামী সোসাইটি (বিআইএস) মৌলভীবাজার এর নির্বাহী পরিচালক মো. বোরহান উদ্দিন, কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নুরুল মোহাইমিন মিল্টন, শমসেরনগরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ মখলিছ আলী, সাংবাদিক শাব্বীর এলাহী, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান, নিউজ২৪ জেলা প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম, জাকির হোসেন, মো. ইমদাদুর রহমান, ফাইয়ান আহমদ, মাসুম আহমদ ও মোনাইম খান প্রমুখ।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালের দিকে শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান আবদুল মছব্বির রেলওয়ের কাছ থেকে কৃষিজমি বন্দোবস্ত নিয়ে স্থানটিতে পামগাছ লাগিয়েছিলেন।
প্রথম দিকে গাছ থেকে কিছু ফল আহরণ করা হয়েছিল। পরে কোন কারণে বীজ থেকে তেল আহরণের প্রক্রিয়াজাত করতে সমস্যা তৈরি হয়। সেই থেকে ফল আহরণ থেমে যায়। গাছের প্রতি যত্ন, পরিচর্যাও আর তেমন করা হয়নি। তারপর থেকে গাছগুলো নিজের মতো করে বেড়ে উঠেছে । ফলে পামগাছের বীজ সেখানে মরা অবস্থায় পড়ে আছে। ৪০টি গাছের মধ্যে দুটি গাছ মরে গেছে। বাকী পাম গাছগুলো ২০-২২ বছর ধরে স্টেশনের একদিকে সৌন্দর্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অবশেষে দীর্ঘদিন পর বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পাম গাছগুলোতে ফিরেছে প্রাণ। সৌন্দর্যকরণ করায় নজর কাড়ছে এলাকাবাসীসহ স্টেশনে আগত যাত্রীদের। স্টেশনের প্লাটফর্মে বসলেই পশ্চিমদিকে তাকালে পাম গাছের দিকে চোখ পড়ে সবার। স্থানীয়রা খুবই খুশি বসুন্ধরা শুভসংঘের নিজস্ব অর্থে এমন মহৎ উদ্যোগে।
স্থানীয় শমসেরনগর বাজারের ব্যবসায়ী সৈয়দ মখলিছ আলী বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘের এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। মরা পাম গাছগুলো সংস্কারে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এমন ব্যতিক্রম কর্যক্রম সত্যি আমাদের বিস্মিত ও অভিভূত করেছে।’
শুভসংঘের মৌলভীবাজার জেলা শাখা সভাপতি এম মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ সর্বদাই ভালো কাজে সহযোগিতা করে আসছে। তার অংশ হিসাবে পামগাছ গুলোর পরিচর্যা করা হলো।’
কমলগঞ্জের সাংস্কৃতিক কর্মী নুরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, ‘রেল স্টেশনে আসলে চোখ পড়ে পাম গাছগুলোর দিকে । দীর্ঘদিন জীর্ণদশা থেকে মুক্ত হচ্ছে হয়েছে গাছগুলো। সৌন্দর্য বর্ধনে উদ্যোগ নেয়ায় বসুন্ধরা শুভ সংঘকে সাধুবাদ জানাই।’
শমশেরনগর লামাবাজার এলাকার বাসিন্দা তরুণ সমাজ সেবক ফাইয়ান আহমদ বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে আমরা অভিভূত। এমন অনন্য কাজগুলোর সাথে আমরাও পাশে আছি।’
শমসেরনগর সহকারী স্টেশন মাস্টার সুব্রত কর বলেন, ‘রেলওয়ে জমিতে লাগানো পামগাছ গুলো বসুন্ধরা শুভসংঘের অর্থায়নে পরিষ্কার করায় খুবই ভালো হয়েছে। স্টেশন থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করবেন যাত্রীরা। বসুন্ধরা শুভ সংঘকে অভিনন্দন।’