ঢাকা, বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫
২৫ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫
২৫ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-অভিবাসনসহ নানা বিষয়ে ট্রাম্প-কমলার নীতিগত অবস্থান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অর্থনীতি-অভিবাসনসহ নানা বিষয়ে ট্রাম্প-কমলার নীতিগত অবস্থান
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের দুই প্রার্থী ডেমোক্র্যাকট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা দেশটির আসন্ন নির্বাচনে দুই প্রার্থী—ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একজনকে বেছে নেবেন। বিবিসি বুধবার এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন বিষয়ে এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থান ও তাদের নীতির তুলনা করেছে।

অর্থনীতি
কমলা বলেছেন, নির্বাচনে জয়লাভ করে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম দিনের অগ্রাধিকার হবে কর্মজীবী পরিবারগুলোর খাদ্য ও আবাসনের খরচ কমানো। 

তিনি মুনাফা বৃদ্ধি নিষিদ্ধ করার, প্রথমবারের মতো বাড়ি কেনা ক্রেতাদের সহায়তা করার এবং আবাসনের সরবরাহ বাড়াতে প্রণোদনা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প ‘মুদ্রাস্ফীতি শেষ করার এবং যুক্তরাষ্ট্রকে আবার সাশ্রয়ী করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  

পাশাপাশি ট্রাম্প সুদের হার কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন, যদিও এটি প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার করলে আবাসন খাতে চাপ কমবে।

গর্ভপাত
কমলা তার প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দুতে গর্ভপাতের অধিকারকে রেখেছেন এবং সারা দেশে প্রজনন অধিকার প্রতিষ্ঠার আইন প্রণয়নের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্প সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বার্তা দিতে লড়াই করছেন। তার প্রেসিডেন্সির সময় সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত তিন বিচারক ১৯৭৩ সালের রো বনাম ওয়েড নামে পরিচিত রায়ে দেওয়া গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার বাতিলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

অভিবাসন
কমলা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবেলায় কাজ করেছেন এবং উত্তরাঞ্চলে অভিবাসন বন্ধ করতে আঞ্চলিক বিনিয়োগে বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে সহায়তা করেছেন।  

২০২৩ সালের শেষে মেক্সিকো থেকে অভিবাসীদের সংখ্যা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছলেও এ সংখ্যা এর পর থেকে হ্রাস পেয়েছে।

এবার প্রচারণায় তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় তার প্রসিকিউটর হিসেবে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। 

অন্যদিকে ট্রাম্প সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ সম্পূর্ণ করা এবং প্রয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে সীমান্ত সুরক্ষিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি রিপাবলিকানদের কমলা সমর্থিত কঠোর সীমান্ত বিল বাদ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবৈধ অভিবাসীদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণবিতারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে জানিয়েছেন।

কর
কমলা বড় ব্যবসা ও বছরে চার লাখ ডলার বা তার বেশি উপার্জনকারী আমেরিকানদের ওপর কর বাড়াতে চান।

পাশাপাশি তিনি পরিবারের ওপর করের বোঝা কমাতে একাধিক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে শিশুকর ছাড়ের সম্প্রসারণ।  

অন্যদিকে ট্রাম্প বহু ট্রিলিয়ন ডলারের করছাড়ের প্রস্তাব করেছেন, যার মধ্যে ২০১৭ সালে তার চালু করা করছাড়ের সম্প্রসারণও রয়েছে, যা মূলত ধনীদের সহায়তা করেছে। তিনি এই করছাড়ের ব্যয় উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে পূরণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দুজনের কর পরিকল্পনাই বাজেট ঘাটতি আরো বাড়াবে। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ঘাটতি বেশি হবে।

পররাষ্ট্রনীতি
কমলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ইউক্রেনকে যত দিন প্রয়োজন, তত দিন সমর্থন করবেন। তিনি এ-ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে চীন নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র একুশ শতকের প্রতিযোগিতায় যে বিজয়ী হয়, তা নিশ্চিত করবেন।

এ ছাড়া কমলা দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে ছিলেন এবং গাজায় যুদ্ধের অবসান চান।

অন্যদিকে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি অনেক বেশি বিচ্ছিন্নতাবাদী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক সংঘাতে জড়ানো থেকে মুক্ত করতে চান। তিনি বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন, যা ডেমোক্র্যাটদের মতে ভ্লাদিমির পুতিনকে সাহস জোগাবে।

এ ছাড়া ট্রাম্প নিজেকে ইসরায়েলের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। তবে তিনি গাজায় যুদ্ধের অবসান কিভাবে করবেন, সে সম্পর্কে তেমন কিছু বলেননি।

বাণিজ্য
কমলা আমদানির ওপর ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন। তিনি এ পরিকল্পনাকে শ্রমজীবী পরিবারগুলোর জন্য একটি জাতীয় কর হিসেবে বর্ণনা করেছেন, ফলে প্রতি পরিবারকে বছরে প্রায় চার হাজার ডলার খরচ করতে হবে। তাই তার আমদানির শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক পদ্ধতির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।  

অন্যদিকে ট্রাম্প তার প্রচারণায় শুল্ককে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বেশির ভাগ বিদেশি পণ্যের ওপর নতুন ১০-২০ শতাংশ এবং চীনের পণ্যগুলোর জন্য আরো উচ্চ শুল্ক প্রস্তাব করেছেন।

জলবায়ু
কমলা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইন পাস করতে সাহায্য করেছেন। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য করছাড়ের প্রগ্রামের আওয়ায় শত শত বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ সম্ভব হয়েছে। কিন্তু তিনি পরিবেশবিদদের বিরোধিতা করা গ্যাস ও তেল পুনরুদ্ধারের কৌশল ফ্র্যাকিংয়ের বিরুদ্ধে তার বিরোধিতা প্রত্যাহার করেছেন।  

অন্যদিকে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকার সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র ও যানবাহন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের ওপর সীমাসহ শত শত পরিবেশ সুরক্ষা নীতি প্রত্যাহার করেছেন। এবারের প্রচারণায় তিনি আর্কটিকের খনন সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন।  

স্বাস্থ্যসেবা
কমলা এমন একটি হোয়াইট হাউস প্রশাসনের সদস্য ছিলেন, যা প্রেসক্রিপশনের ওষুধের খরচ কমিয়েছে এবং ইনসুলিনের দাম ৩৫ ডলারে সীমাবদ্ধ করেছে।  

অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যের চিকিৎসা আইনটি বাতিল করার প্রচেষ্টা আর শুরু করবেন না, ফলে কোটি কোটি মানুষের বীমা বেড়েছিল। এ ছাড়া তিনি করদাতাদের অর্থায়নে প্রজনন চিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছেন, তবে বিষয়টি কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার শিকার হতে পারে।  

অপরাধ
কমলা প্রসিকিউটর হিসেবে তার অভিজ্ঞতা এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার বিষয়টিকে তুলনা করার চেষ্টা করেছেন।  

অন্যদিকে ট্রাম্প মাদকচক্রগুলো ধ্বংস করা, গ্যাং সহিংসতা দমন করা এবং তিনি যেই গণতান্ত্রিক শহরগুলোকে অপরাধ গ্রাস করেছে বলে মনে করেন সেগুলো পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  

অস্ত্র
কমলা বন্দুক সহিংসতা প্রতিরোধকে একটি মূল প্রতিশ্রুতি হিসেবে রেখেছেন। তিনি ও তার রানিং মেট টিম ওয়ালজ—উভয়ই বন্দুকের মালিক হলেও প্রায়ই কড়া আইন প্রবর্তনের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই বাড়ানো বা আক্রমণাত্মক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার মতো পদক্ষেপগুলোর জন্য কংগ্রেসের সাহায্য প্রয়োজন হবে।  

অন্যদিকে ট্রাম্প দ্বিতীয় সংশোধনীর একজন দৃঢ় সমর্থক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন, যা অস্ত্র বহনের সাংবিধানিক অধিকার। মে মাসে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে বলেছিলেন, তিনি তাদের সেরা বন্ধু।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রথমবারের মতো ভারত সফরে দুবাইয়ের যুবরাজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রথমবারের মতো ভারত সফরে দুবাইয়ের যুবরাজ
সংগৃহীত ছবি

প্রথমবারের মতো ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছেন দুবাইয়ের যুবরাজ শেখ হামদান। আজ মঙ্গলবার তিনি ভারতের দিল্লি বিমানবন্দরে পৌঁছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দিনের এই সফর শেষ হবে ৯ এপ্রিল।

প্রথমদিনই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন যুবরাজ হামদান। 

এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করেন যুবরাজ। এ ছাড়া আজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে তার। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কিভাবে জোরদার করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে দুই দেশের।

 

খালিজ টাইমস জানায়, দুবাইয়ের যুবরাজ শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম ভারতে পৌঁছানোর পর দিল্লি বিমানবন্দরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। তাকে স্বাগত জানান ভারতের প্রতিমন্ত্রী সুরেশ গোপী। তার সম্মানে বিমানবন্দরে একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও করা হয়।

মন্তব্য

জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন স্থগিত করেছে জার্মানি

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন স্থগিত করেছে জার্মানি
সংগৃহীত ছবি

জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় নতুন করে কোনো শরণার্থীকে আপাতত গ্রহণ করবে না ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ জার্মানি।

জাতিসংঘের পুনর্বাসন কর্মসূচিটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে জার্মান সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে জার্মান বার্তাসংস্থা ডিপিএ।

স্থগিতাদেশের কারণ জানতে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ইউএনএইচসিআরের প্রতিক্রিয়াও জানার চেষ্টা করছে রয়টার্স।

চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হয় পার্লামেন্ট নির্বাচন। এর আগে অভিবাসন ছিল দেশটির রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।

তারও আগে জার্মানিতে ঘটে যাওয়া কয়েকটি সহিংস হামলার সঙ্গে অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের নাম। এর জের ধরে ভোটের মাঠে ভালো ফল করেছে অভিবাসনবিরোধী অতি-ডানপন্থী দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)। সাধারণ নির্বাচনে ভোটের হিসাবে তাদের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।

ভোট শেষ হলেও অভিবাসন এখনো সমানভাবে আলোচিত।

ভোটের হিসাবে তৃতীয় স্থানে থাকা সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের নিয়ে জোট সরকার গঠনের আলোচনা করছে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ। সেখানেও অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিবেশী ৯টি দেশের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ শুরু করে জার্মানি। এ বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই নিয়ন্ত্রণ জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানির বিদায়ী সরকার। সিডিইউ/সিএসইউ চায়, নিরাপদ দেশ থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের জার্মানির সীমান্ত থেকেই ফিরিয়ে দিতে।

এ নিয়েও চলছে বিতর্ক।

সরকার গঠনের আলোচনা চূড়ান্ত না হলেও এই দুটি রাজনৈতিক দল কোনো কোনো বিষয়ে একমত হয়েছে। তেমন একটি নথি দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেই নথি অনুযায়ী, নতুন করে কোনো ধরনের শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু না করতে সম্মত হয়েছে জার্মানি সম্ভাব্য সরকারের দুই শরিক দল। এ রকম যেসব কর্মসূচিগুলো জার্মানিতে চালু আছে, সেগুলোও যতটা সম্ভব বন্ধ করে দিতেও ঐকমত্যে পৌঁছেছেন দল দুটির শীর্ষ নেতারা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুনর্বাসন কর্মসূচির অংশ হিসাবে চলতি বছর ছয় হাজার ৫৬০ জন শরণার্থীকে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। এই কর্মসূচির আওতায় সাধারণত মিশর, জর্দান, কেনিয়া, লেবানন, পাকিস্তান, লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শরণার্থী বা রাষ্ট্রহীন মানুষদের আশ্রয় দেওয়া হয়। আশ্রয় আবেদনের হিসেবে জার্মানি এখন আর ইইউর শীর্ষ দেশ নয়।

আশ্রয় আবেদন কমেছে জার্মানিতে

ইউরোপীয় ইউনিয়নে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে জমা হওয়া আশ্রয় আবেদনের হিসাবেও জার্মানি এখন আর শীর্ষ দেশ নয়। বেশ কয়েক বছর পর এবার জার্মানিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে ফ্রান্স ও স্পেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গোপন নথির বরাত দিয়ে সোমবার (৭ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে জার্মান দৈনিক ভেল্ট আম জনটাগ।

এতে বলা হয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ফ্রান্স এবং স্পেনে আশ্রয় চেয়ে বেশি আবেদন জমা হয়েছে।

ইইউ'র পরিসংখ্যান কার্যালয় ইউরোস্ট্যাটের ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যানেও তেমন আভাস মিলেছে। দেখা গেছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে ১২ হাজার ৭৭৫টি নতুন আশ্রয় আবেদন জমা হয়েছিল। সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৬৫টি আবেদন জমা পড়েছে ফ্রান্সে এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৯৭৫টি জমা হয়েছে স্পেনে।

৭ এপ্রিল জার্মানির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (বিএএমএফ) জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে জমা হওয়া প্রথমবারের মতো আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা ২০২৪ সালের তুলনায় প্রায় ৪৫ শতাংশ কমেছে। আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে বরাবরের মতোই শীর্ষে রয়েছে সিরিয়া, আফগান ও তুরস্কের নাগরিকরা।

সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, এ বছরের প্রথম তিন মাসে জার্মানিতে অন্তত ৪১ হাজার আশ্রয়ের আবেদন জমা পড়েছে। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলোর কোনো তথ্য তারা প্রকাশ করেনি।

বিএএমএফ বলছে, মার্চে ৯ হাজারেরও কম আবেদন জমা পড়েছে। বেশ কয়েক বছর পর এই সংখ্যাটি প্রথমবারের মতো ১০ হাজারের নিচে নেমেছে।

এমনকি গত বছরেও আশ্রয় আবেদনের হিসাবে শীর্ষে ছিল জার্মানি। ২০২৪ সালে দুই লাখ ৫০ হাজার ৬১৫টি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছিল দেশটিতে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্পেনে জমা হয়েছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ১৭৫টি আবেদন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইতালিতে জমা হয়েছিল এক লাখ ৫৮ হাজার ৬০৫টি আবেদন।

মন্তব্য
মার্কিন শুল্ক

৫ বিমানবোঝাই আইফোন ভারত থেকে নিয়ে গেল অ্যাপল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৫ বিমানবোঝাই আইফোন ভারত থেকে নিয়ে গেল অ্যাপল
ফাইল ছবি : এএফপি

বিদেশি পণ্যে শুল্ক বসিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অতিরিক্ত এই শুল্ক এড়াতে তড়িঘড়ি করে ভারত ও চীন থেকে বিমানবোঝাই আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে অ্যাপল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই মার্চের শেষ সপ্তাহে তিন দিনে ভারত থেকে পাঁচটি ফ্লাইটে আইফোন ও অন্যান্য প্রডাক্ট যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে অ্যাপল।

ভারতে কর্মরত অ্যাপলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া ট্রাম্পের ১০ শতাংশ ‘রিসিপ্রক্যাল ট্যারিফ’ এড়াতেই জরুরি ভিত্তিতে এসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, শুধু ভারত থেকেই নয়, চীনের কারখানাগুলো থেকেও যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি ভিত্তিতে পণ্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সূত্রের বরাতে ওই প্রতিবেদনে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলেছে, শুল্ক এড়াতে ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশের কারখানাগুলো থেকে জরুরি ভিত্তিতে আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। আপাতত ঝক্কি সামাল দেওয়া যাবে। তাই এখনই আইফোনের মূল্য বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

মন্তব্য

বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি : নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি : নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ
নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান। ছবিসূত্র : এএফপি

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করেছেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি মন্তব্য করেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ ঠিক হয়নি। এটি এমন একটি জিনিস, যা আমেরিকার ভোক্তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি করবে এবং এমন সিদ্ধান্ত আমাদের নিরাপত্তা বাড়াতে কোনো ভূমিকা রাখবে না।’

সাক্ষাৎকারে ক্রুগম্যান বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশেও উৎপাদন করা প্রয়োজন, এতে সরবরাহব্যবস্থার ওপর ভরসা করা যায়। এই উভয় বিবেচনায় বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা ঠিক হয়নি।

বাণিজ্য ঘাটতি প্রসঙ্গে ক্রুগম্যান বলেন, সব দেশই কিছু পণ্য উৎপাদন করে, যে পণ্য অন্য দেশ তৈরি করে না, সেটা তারা আরেক দেশ থেকে আমদানি করে। কিন্তু প্রতিটি দেশের সঙ্গেই যে বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে, এর কোনো কথা নেই।

সব কিছুই হতে পারে। কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি থাকার অর্থ এই নয়, যে দেশের হাতে উদ্বৃত্ত আছে, সেই দেশ অন্যায্য বাণিজ্যনীতি অনুসরণ করছে। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন এসব বিশ্বাস করে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

ফলস্বরূপ, আমেরিকান পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপকারী যেকোনো দেশের মতো বাংলাদেশি পণ্যের দাম এখন থেকে আমেরিকান বাজারে আরো বেশি হবে। ট্রাম্পের ঘোষণা অনুসারে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৭শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আগে গড়ে ১৫শতাংশ শুল্ক ছিল, কিন্তু নতুন শুল্ক এখন দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে।


 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ