<p>ইসরায়েল সোমবার লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ জোরদার করেছে। লেবাননের উত্তরে এক বিমান হামলায় কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এখন পর্যন্ত লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল পূর্বে বেকা উপত্যকা, বৈরুতের শহরতলি এবং দক্ষিণ লেবানন, যেখানে ইসরায়েলি সেনা ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মধ্যে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।</p> <p>শহরের মেয়র জোসেফ ট্র্যাড রয়টার্সকে বলেছেন, খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তরাঞ্চলীয় শহর আইতুতে ইসরায়েলি হামলায় একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেটা বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এ ঘটনায় আরো আটজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।</p> <p>ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননের ২৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের আওয়ালি নদীর উত্তরের এলাকায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ নদী ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার (৩৫ মাইল) উত্তরে প্রবাহিত হয়।</p> <p>এদিকে গত রবিবার ইসরায়েলি একটি সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় চার সেনা নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়। এ ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ওই ঘাঁটি পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল লেবাননের সর্বত্র হামলা চালিয়ে যাবে, ক্ষমা করা হবে না।’</p> <p>ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে দক্ষিণ লেবাননে বেশ কয়েকটি শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে এবং এর আশপাশে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আক্রমণ করে। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এ নিয়ে দৃঢ় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।</p> <p>হিজবুল্লাহ এবং এর সামরিক অবকাঠামো নিশ্চিহ্ন করার প্রয়াসে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননের মধ্য দিয়ে তাদের বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। এর পর থেকেই লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তী বাহিনী ইউনিফল ও আইডিএফ-এর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।</p> <p>এর আগে গত রবিবার (১৩ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে নিযুক্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের একটি ঘাঁটিতে ট্যাংক নিয়ে প্রধান ফটক ভেঙে জোরপূর্বক প্রবেশ করেছিল দখলদার ইসরায়েলের সেনারা। এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে লেবাননে নিযুক্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন।</p> <p>নেতানিয়াহু সোমবার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটায়নি। ইউনিফল ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ অভিযোগ করেছে। নেতানিয়াহু জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে উদ্দেশ করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মহাসচিব মহোদয়, ইউএনআইএফআইএল বাহিনীকে বিপদমুক্ত করুন। এটি এখনই, অবিলম্বে করা প্রয়োজন।’ </p> <p>এ বিষয়ে প্রথম মন্তব্যের পর মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে নেতানিয়াহু জানান, ইসরায়েলি বাহিনী কয়েকবার ইউএনআইএফআইএলকে সরে যেতে বলেছে। কিন্তু তারা বারবার এ আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। এতে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের জন্য মানবঢাল তৈরি হয়েছে।’</p> <p>নেতানিয়াহু বলেন, ‘আপনি ইউএনআইএফআইএলের সেনাদের সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা হিজবুল্লাহর জিম্মি হচ্ছে। এতে তাদের ও আমাদের সেনাদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।’ তবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা দক্ষিণ লেবাননে তাদের অবস্থান থেকে সরবে না। ইসরায়েলি হামলায় ইউএনআইএফআইএল-এর শান্তিরক্ষীরা আহত হওয়ার পর শান্তিরক্ষা প্রধান জ্যাঁ পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স এ কথা জানিয়েছেন। </p> <p>সূত্র : রয়টার্স<br />  </p>