<p>ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এই সপ্তাহে তার ‘বিজয় পরিকল্পনা’ দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মিত্রদের সামনে উপস্থাপন করছেন, যার লক্ষ্য রাশিয়াকে একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি মেনে নিতে বাধ্য করা।</p> <p>পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়নি এবং এর বেশ কিছু অংশ গোপন রাখা হবে। তবে জেলেনস্কি কিয়েভে আইন প্রণেতাদের সামনে এর মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। এখন পর্যন্ত এ পরিকল্পনা সম্পর্কে যা জানা গেছে :</p> <p><strong>ন্যাটো সদস্য পদ</strong><br /> জেলেনস্কির ভাষণ অনুযায়ী, ইউক্রেনকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো প্রতিরক্ষা জোটে যোগদানের আমন্ত্রণ পাওয়াই পরিকল্পনার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। </p> <p>তিনি বলেছেন, ‘কয়েক দশক ধরে রাশিয়া ইউরোপের ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে কাজে লাগিয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য না হওয়ার সুযোগ নিয়েছে। এই কারণেই রাশিয়া আমাদের নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপ করার সাহস পেয়েছে।’</p> <p>ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, ন্যাটোতে যোগদান শুধু ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাড়াবে না, বরং ইউরোপ ও পুরো পশ্চিমাবিশ্বের নিরাপত্তা জোরদার করবে।</p> <p><strong>প্রতিরক্ষা</strong><br /> ‘বিজয় পরিকল্পনার’ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কিয়েভের মিত্ররা যেন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে আঘাত হানার অনুমতি দেয়।</p> <p>জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনকে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে স্থল অভিযান চালিয়ে যেতে হবে। সেখানে আগস্টে ইউক্রেন আকস্মিক হামলা চালিয়ে অনেক এলাকা দখল করেছে। </p> <p>তিনি আরো বলেন, মিত্র দেশগুলো যেন ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে, যাতে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রক্ষা করা যায়। পাশাপাশি বিদেশে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন তিনি। </p> <p><strong>অপারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা</strong><br /> পরিকল্পনার তৃতীয় বিষয়টি ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধের ওপর ভিত্তি করে। বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয় এবং এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘গোপন’ সংযোজন রয়েছে, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির নেতাদের জানানো হয়েছে। </p> <p>জেলেনস্কি আইন প্রণেতাদের বলেন, ইউক্রেন একটি ‘সম্পূর্ণ অপারমাণবিক কৌশলগত প্রতিরোধ প্যাকেজ’ চায়, যা তার ভূখণ্ডে মোতায়েন করা হবে। </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘রুশ নেতৃত্ব কেবল তখনই আগ্রাসী আচরণ করে, যখন তারা নিশ্চিত হয়, তাদের ওপর যথাযথ ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া আসবে না।’</p> <p><strong>অর্থনৈতিক শক্তি</strong><br /> পরিকল্পনার চতুর্থ দিকটি ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে ‘ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের গুরুত্বপূর্ণ ধাতু’ রক্ষার ওপর ভিত্তি করে।</p> <p>জেলেনস্কি জানান, এই অংশেও একটি গোপন সংযোজন রয়েছে, যা কেবল ইউক্রেনের মিত্রদের জানানো হবে। তিনি পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদগুলোর যৌথ সুরক্ষা, বিনিয়োগ ও ব্যবহার নিয়ে একটি বিশেষ চুক্তি করে। </p> <p>তিনি বলেন, ‘এই চুক্তি রাশিয়ার ওপর বিদ্যমান অর্থনৈতিক চাপ ব্যবস্থা, বিশেষ করে আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞাকে জোরদার করবে।’</p> <p><strong>যুদ্ধপরবর্তী সময়</strong><br /> পরিকল্পনার চূড়ান্ত অংশটি যুদ্ধপরবর্তী সময় নিয়ে, যখন ‘ইউক্রেন বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও বৃহত্তম সামরিক বাহিনীগুলোর একটি হয়ে উঠবে।’</p> <p>এই অংশে জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো মিত্রদের কাছে সাহায্যের আহ্বান না জানিয়ে বরং তাদের জন্য সম্পদ প্রদানের প্রস্তাব করেন। </p> <p>তিনি বলেন, ‘আমাদের মিত্ররা রাজি হলে, ইউরোপে মোতায়েনকৃত যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর কিছু ইউনিটকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর মাধ্যমে প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনা করছি।’</p>