<p>আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ইউক্রেন যুদ্ধের এক হাজার দিন পূর্ণ হলো। এক হাজার দিন পরেও বিভিন্ন ফ্রন্টে লড়াই চলছে। এখনো কিয়েভে মাঝে মধ্যেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে আবার প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসবেন ডনাল্ড ট্রাম্প।</p> <p>এদিকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই জো বাইডেন রাশিয়ার ভিতরে মার্কিন রকেট হামলার অনুমতি দিয়েছে  ইউক্রেনকে। রাশিয়াও পাল্টা হুমকি দিয়েছে, এমন আক্রমণ হলে তার উপযুক্ত ও কড়া জবাব দেয়া হবে। তবে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এসে এই নীতির পরিবর্তন করতে পারেন। </p> <p>বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু এই পদক্ষেপ নিলে ৩৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির বদল হবে না। এই যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। লাখ লাখ মানুষ বাইরের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সবচেয়ে বড় সংঘাত। এর ফলে সামরিক দিক থেকে কার কত ক্ষতি হয়েছে তা গোপন রাখা হয়েছে। </p> <p>গোয়েন্দাদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পশ্চিমা দেশগুলো যে হিসেব করেছে, তাতে এক দেশের হিসেবের সঙ্গে অন্য দেশের হিসেবের প্রচুর ফারাক রয়েছে। তবে সব প্রতিবেদনই বলছে, দুই পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রচুর মানুষ হতাহত হয়েছে।</p> <p>ইউক্রেনের প্রতিটি অঞ্চলে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই যুদ্ধের সময় থেকে শোক নেমে এসেছে। বড় শহর থেকে দূরের গ্রাম পর্যন্ত সব জায়গায় সামরিক অন্ত্যেষ্টি নিয়মিত হয়েছে, রাতেও বারবার সাইরেন বেজেছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করেছেন। ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন তারা।</p> <p>তবে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প আসার পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তিনি এবার এই যুদ্ধ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন?  প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেয়ার নীতির, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের বিরুদ্ধে ঐক্য়বদ্ধ ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কী হবে?</p> <p>ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দুই দেশের মধ্যে কোনোরকম আলোচনা হয়নি। সম্ভাব্য আলোচনার আগে দুই দেশই তাদের শক্তি বাড়িয়ে নিতে চাইতে পারে। ইউক্রেন ও রাশিয়া চাইবে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের আরো কিছুটা জমি দখল করে নিয়ে আলোচনায় বসতে।</p> <p>রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে ড্রোন পেয়েছে। কুরস্কে উত্তর কোরিয়ার ১১ হাজারের মতো সেনাও যুদ্ধে নেমে পড়েছে। কিয়েভের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া এক লাখ সেনা পাঠাবার ক্ষমতা রাখে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ট্রাম্পের নতুন পরিবহনমন্ত্রী কে এই শন ডাফি?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/19/1732000950-d910c0bfa749cd12cea822ced3c1f8b7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ট্রাম্পের নতুন পরিবহনমন্ত্রী কে এই শন ডাফি?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/11/19/1448308" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ইউক্রেন আবার অগাস্ট থেকে রাশিয়ার কুরস্কের একটা অংশ দখল করে রেখেছে। সেখানে তারা সবচেয়ে দক্ষ সেনা পাঠিয়েছে। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া সেখানে ৫০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। তাছাড়া তারা পূর্ব ইউক্রেনেও দ্রুত কিছু এলাকা দখল করতে চায়।</p> <p>ক্রমশ শীত আসছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাশিয়া একদিনে ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০টি ড্রোন দিয়ে আক্রমণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গভীরে মার্কিন রকেট দিয়ে হামলার অনুমতি দেয়া, ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সাহায্য দেয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।</p> <p>গত দুই বছরে ইউক্রেনের অর্থনীতিতে মাঝারি বৃদ্ধি হয়েছে। তা সত্ত্বেও যুদ্ধের আগের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করলে ইউক্রেনের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে, ইস্পাত শিল্প ও কৃষিক্ষেত্র।</p> <p><strong>রাশিয়ার দাবি ও ন্যাটো</strong></p> <p>ইউক্রেনের প্রোসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, আগামী বছর কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। তবে যে কোনো আলোচনা শুরুর আগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে এবং ইউক্রেনকে উপযুক্ত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে।</p> <p>ক্রেমলিন বলেছে, গত জুনেই প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার উচ্চাশা বন্ধ করতে হবে। আর চারটি এলাকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে।</p> <p>গত শুক্রবার জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ প্রায় দুই বছর পর পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তারপরই জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার নেতা একঘরে হয়ে ছিলেন। এই ফেনের ফলে তার সেই দশা কিছুটা হলেও কমল। জেলেনস্কি সবাইকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, প্রকৃত শান্তি দরকার। কিন্তু এক হাজার দিন পরেও প্রশ্ন হলো, সেই শান্তি কীভাবে আসবে?</p> <p>রাশিয়ার ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনকে অনুমতি দেওয়ার খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট  পুতিন। তবে অতীতে এ ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে সাবধান করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এটি হবে ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটো সামরিক জোটের ‘সরাসরি অংশগ্রহণ’। তবে রাশিয়ার সিনিয়র রাজনীতিকরা একে মারাত্মক উসকানি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রাশিয়ার গভীরে মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে কিয়েভকে ওয়াশিংটনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে ইউক্রেন যুদ্ধ আরো তীব্র হবে, আর তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন একজন জ্যেষ্ঠ রুশ আইন প্রণেতা।</p> <p>রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যালয় ক্রেমলিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রাশিয়ার ভেতরে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতি দিয়ে বাইডেন আগুনে ঘি ঢালছেন।</p> <p> </p> <p> </p>