ঢাকা, শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫
২৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৩ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫
২৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৩ রমজান ১৪৪৬

আফ্রিকা থেকে যাত্রা, অভিবাসী বোঝাই নৌকায় জন্ম নিল এক শিশু

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আফ্রিকা থেকে যাত্রা, অভিবাসী বোঝাই নৌকায় জন্ম নিল এক শিশু
ছবিসূত্র : মেরিটাইম রেসকিউ/রয়টার্স

মানুষে ঠাসা অভিবাসীদের নৌকাটি আফ্রিকা থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে আসছিল, পথেই ফুটফুটে শিশুটির জন্ম হয়। স্প্যানিশ উপকূলরক্ষীদের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে। শিশুটির একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। নবজাতকসহ মা এবং আরো অনেক অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

  

গত ৬ জানুয়ারি ল্যানজারোট দ্বীপে প্রথম অভিবাসী বোঝাই নৌকাটি দেখা যায়। উদ্ধারকারীদের ধারণা, শিশুটির জন্মের পরপরই তারা রাবারের তৈরি ছোট নৌকাটির খোঁজ পেয়েছিলেন। অভিবাসীদের ভিড়ের মধ্যে জন্ম নেওয়া ওই নবজাতকটি ছেলেশিশু। 

উদ্ধারকারী নৌকার ক্যাপ্টেন বলেন, ‘আমরা জানতাম নৌকায় একজন গর্ভবতী নারী আছেন, তবে শিশুটিকে পেয়ে অবাক হয়েছি।

শিশুটি মাত্র ১০, ১৫ বা ২০ মিনিট আগে জন্মগ্রহণ করেছিল।’

ক্যাপ্টেন ডোমিঙ্গো ট্রুজিলো জানান, যখন তারা সেখানে পৌঁছান, তখন মা নৌকায় ভিড়ের মধ্যে শুয়ে ছিলেন এবং শিশুটিকে অন্য একজন যাত্রী ধরে রেখেছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে শিশু এবং মাকে হেলিকপ্টারে করে ল্যানজারোটের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গেছে। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো জটিলতার পাওয়া যায়নি।

আফ্রিকা থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে সমুদ্র পাড়ি দেওয়া খুবই বিপজ্জনক। স্প্যানিশ সরকারের তথ্য অনুসারে, গত বছর ৪৬ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি অবৈধ অভিবাসী দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর জন্য এই পথটি ব্যবহার করেছিলেন।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভারতে ইসরায়েলের পর এবার ব্রিটিশ তরুণীকে ধর্ষণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারতে ইসরায়েলের পর এবার ব্রিটিশ তরুণীকে ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

ইসরায়েলের পর এবার ব্রিটিশ তরুণীকে ভারতের দিল্লিতে ডেকে এনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুজনকে। গ্রেপ্তারকৃতদের একজন ওই তরুণীর বন্ধু। সামাজিকমাধ্যমে আলাপ হওয়ার পর বন্ধুত্ব হয়েছিল তাদের।

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মহারাষ্ট্র এবং গোয়ায় ছুটি কাটাতে ভারতে এসেছিলেন যুক্তরাজ্যের ওই তরুণী। সেখানে গিয়ে সামাজিকমাধ্যমে পরিচয় হয় বন্ধুকে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন তরুণী। কিন্তু বন্ধু তাকে দিল্লি চলে যেতে বলেন। 

বন্ধুর কথায় দিল্লির একটি হোটেলে গিয়ে ওঠেন ব্রিটিশ তরুণী।

পরে মঙ্গলবার রাতে এক সঙ্গীকে নিয়ে ওই হোটেলে যান অভিযুক্ত যুবক। তার পর তাকে ধর্ষণ করেন। অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠ‌েছে।

বুধবার সকালে দিল্লির বসন্তকুঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী।

গ্রেপ্তার করা হয় দুই অভিযুক্তকে। অভিযোগকারি তরুণী যুক্তরাজ্যের নাগরিক হওয়ায় নিয়ম অনুসারে ব্রিটিশ হাই কমিশনকে বিষয়টি জানায় পুলিশ। হাই কমিশনের পক্ষ থেকে ওই তরুণীকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন
টেসলা গাড়ি কিনলেও রাস্তায় চালাতে পারবেন না ট্রাম্প

টেসলা গাড়ি কিনলেও রাস্তায় চালাতে পারবেন না ট্রাম্প

 

উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকেই কর্ণাটকের কোপ্পাল জেলায় এক ইসরায়েলি নারী পর্যটককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল তিন যুবকের বিরুদ্ধে। এমনকি তাদের সঙ্গে থাকা স্থানীয় একটি স্টে-হোম' এর নারী মালিককেও গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল।

এর পাশাপাশি ওই ইসরায়েলি পর্যটকের এক ভারতীয় পুরুষ সঙ্গীকে স্থানীয় একটি খালে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল, পরে তার মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় ভারত জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। পরে তদন্তে নেবে তিন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। 

সূত্র : আনন্দবাজার।

মন্তব্য

শনি গ্রহের আরো নতুন ১২৮টি চাঁদ আবিষ্কার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শনি গ্রহের আরো নতুন ১২৮টি চাঁদ আবিষ্কার
ছবিসূত্র: নাসা/জেপিএল-ক্যালটেক, স্পেস সায়েন্স ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে।

শনি গ্রহের চারপাশে ১০০টিরও বেশি নতুন চাঁদ আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাইওয়ান, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একত্রে এই আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইএইউ)।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এটি সম্ভবত ১০ কোটি বছরের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ফল।

 শনি গ্রহের নর্স গ্রুপ নামক চাঁদগুলো কক্ষপথে বিপরীত এবং কাত হয়ে ঘোরে। তাদের অবস্থানও এই সংঘর্ষের ঘটনার প্রমাণ দেয়। নতুন আবিষ্কৃত চাঁদগুলোও এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।

বৃহস্পতির রয়েছে ৯৫টি পরিচিত চাঁদ, ইউরেনাসের ২৮টি এবং নেপচুনের ১৬টি।

 অন্যদিকে শনির চারপাশে সর্বশেষ ১২৮টি চাঁদ আবিষ্কারের ফলে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৪টি। গবেষকেরা মনে করছেন, এসব চাঁদ সম্ভবত সৌরজগতের প্রাথমিক পর্যায়ে শনি গ্রহের কক্ষপথে একদল বস্তু হিসেবে ছিল, যা পরবর্তীতে একাধিক সংঘর্ষের মাধ্যমে ছোট ছোট টুকরোয় পরিণত হয়। 

গবেষণা দলের প্রধান, তাইওয়ানের অ্যাকাডেমিয়া সিনিকার জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যা ইনস্টিটিউটের পোস্টডক্টরাল গবেষক ড. এডওয়ার্ড অ্যাশটন বলেন, ‘আমরা ১২৮টি নতুন চাঁদ খুঁজে পেয়েছি। আমাদের হিসাব অনুযায়ী, বৃহস্পতির পক্ষে শনিকে আর ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

আরো পড়ুন
ট্রাম্পের চিঠি না দেখেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অস্বীকৃতি খামেনির

ট্রাম্পের চিঠি না দেখেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অস্বীকৃতি খামেনির

 

শনির নতুন আবিষ্কৃত চাঁদগুলো পৃথিবীর চাঁদের মতো বড়, সুন্দর এবং গোলাকার নয়। এগুলো ছোট ছোট চাঁদ, যা আলুর মতো আকৃতির। এগুলোকে একত্রে ‘ইরেগুলার মুনস’ বলা হয়। চাঁদগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে ‘শিফট অ্যান্ড স্ট্যাক’ পদ্ধতি ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পরপর ছবি তুলে চাঁদগুলোর চলার পথ অনুসরণ করেন।

এরপর সেগুলো একত্রিত করলে চাঁদগুলোর উজ্জ্বল ছবি পাওয়া যায়।

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ অধ্যাপক ব্রেট গ্ল্যাডম্যান বলেন, ‘এগুলো সম্ভবত মূলত শনির ধরা পড়া কয়েকটি বড় চাঁদের টুকরো, যা হয় শনির অন্য চাঁদের সঙ্গে, নয়তো কোনো ধাবমান ধূমকেতুর সঙ্গে প্রবল সংঘর্ষের কারণে ভেঙে গেছে।’

এই চাঁদগুলোর গতিবিধি বিশ্লেষণ করলে শনির বিখ্যাত বলয়গুলোর উৎপত্তি সম্পর্কেও নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, শনির বলয় কোনো এক সময় গ্রহটির মহাকর্ষীয় শক্তিতে ধ্বংস হওয়া একটি চাঁদের অবশিষ্টাংশ।

অন্যদিকে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ‘হেরা’ মঙ্গল গ্রহের ছোট চাঁদ ‘ডেইমস’ পর্যবেক্ষণ করবে। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার হেরা মহাকাশযান বুধবার মঙ্গল গ্রহের দিকে উড়ে যাবে এবং এর সবচেয়ে ছোট ও দূরবর্তী চাঁদ ডেইমসের মাত্র ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করবে।

ডেইমস মাত্র ৭ মাইল বিস্তৃত এবং বিজ্ঞানীদের ধারণা, এটি হয় মঙ্গলের কোনো বিশাল সংঘর্ষের ফলে তৈরি হয়েছে, নয়তো এটি কোনো গ্রহাণু, যা মঙ্গলের মহাকর্ষীয় শক্তিতে আটকা পড়েছে। হেরা আরো বৃহৎ চাঁদ ফোবোসকেও ছবি তুলবে এবং এরপর এটি ডিমরফোস নামক এক গ্রহাণুর উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। তিন বছর আগে নাসার একটি মহাকাশযান ইচ্ছাকৃতভাবে একে আঘাত করেছিল।

হেরা ডিমরফোসে পৌঁছে সংঘর্ষের প্রভাব বিশ্লেষণ করবে, যা ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা বিপজ্জনক গ্রহাণুকে প্রতিরোধের কৌশল উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।

সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

টেসলা গাড়ি কিনলেও রাস্তায় চালাতে পারবেন না ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
টেসলা গাড়ি কিনলেও রাস্তায় চালাতে পারবেন না ট্রাম্প
সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্কের মালিকানাধীন টেসলার একটি লাল গাড়ি কিনেছেন। তবে কেনার সময়ই তিনি বলেছেন, তিনি এই গাড়ি চালাবেন না। কারণ রাস্তায় গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই তার। খবর নিউ ইয়র্ক টাইমসের।

 

গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি আমার বন্ধু ইলন মাস্কের কাছ থেকে একটি টেসলা কিনেছি, কিন্তু দুর্ভাগ্য  হলো, আমার গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের রাস্তায় গাড়ি চালানোর অনুমতি নেই। নিরাপত্তার কারণে এই নিয়ম করা হয়েছে। রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সুরক্ষার জন্য এই নিয়ম জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও তাদের পরিবারের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

টেসলার সিইও ইলন মাস্ক সম্প্রতি রাজনৈতিকভাবে সমালোচনা এবং আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, তিনি তার কোম্পানির কাছ থেকে একটি টেসলা গাড়ি কিনবেন। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট তার সবচেয়ে শক্তিশালী উপদেষ্টাকে সমর্থনের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

মাস্ক গত বছর ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন এবং ট্রাম্পের এই মেয়াদের প্রশাসনে তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে ফেডারেল সরকারের ব্যয় সংকোচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার বলেন, ইলন মাস্কের প্রতি আস্থা ও সমর্থন প্রদর্শন হিসেবে তিনি একটি নতুন টেসলা কিনতে যাচ্ছেন। শেয়ার বাজারে টেসলার স্টক মূল্যের পতন হওয়াতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কোম্পানিটি।

২০২৩ সালের কনজিউমার অ্যাফেয়ার্সের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে প্রায় দুই কোটি ৪৩ লাখ মানুষের।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা অন্যান্য সাবেক প্রেসিডেন্টদের এক সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে তাদের আর গাড়ি চালানোর অনুমতি থাকে না।

আরো পড়ুন
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন পাকিস্তানের সেই ট্রেন যাত্রীরা

ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন পাকিস্তানের সেই ট্রেন যাত্রীরা

 

সিক্রেট সার্ভিসের উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এজেন্টরা গাড়ি চালান আর প্রেসিডেন্ট বা সাবেক প্রেসিডেন্ট সেই গাড়িতে চলাফেরা করেন। যদিও এই বিষয়ে কোনো আইন নেই, তাদের নিরাপত্তার জন্যই এই ব্যবস্থা। খুব যদি ইচ্ছে করে চালাতে তাহলে বাড়ির কম্পাউন্ডের ভেতরে চালাতে পারবেন, যেমন চালিয়েছেন, অবসর নেওয়ার পর রোনাল্ড রিগ্যান বা জর্জ ডব্লিউ বুশ তাদের র‌্যাঞ্চে।
 

মন্তব্য

ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন পাকিস্তানের সেই ট্রেন যাত্রীরা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন পাকিস্তানের সেই ট্রেন যাত্রীরা
সংগৃহীত ছবি

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে জিম্মি থাকা সব যাত্রীকে উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর অভিযান শেষ হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে ৩৩ হামলাকারীর সবাই নিহত হয়েছেন। এর আগে হামলাকারীরা ২১ যাত্রীকে হত্যা করেন।

এ ছাড়া অভিযান চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়েছেন।

জিম্মি হওয়া ট্রেন থেকে মুক্তি পেয়ে বিবিসি এএফপি ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের কাছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন যাত্রীরা। বিদ্রোহীদের হাত থেকে বাঁচতে কীভাবে তারা লুকিয়েছিলেন, কী ভাবে প্রতিনিয়ত সন্তানদের বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন, কী কী দেখেছেন, মুক্তির পর সেই ঘটনাবলির ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়েছেন অনেকে। 

ইশাক নুর নামের এক যাত্রী মুক্তির পর বিবিসিকে বলেন, ‘গুলির পর গুলি চলছিল।

আমরা কোনোরকমে দম বন্ধ করে বসেছিলাম। কী হবে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।’ 

সন্তানদের আড়াল করে বসেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফ ও তার স্ত্রী। যাতে কোনোভাবে গুলি তাদের দিকে চলে এলে আগে বাবা-মায়ের গায়ে লাগে।

সন্তানেরা যাতে বেঁচে যায়। আশরাফ বলেন, ‘যাত্রীরা সকলে প্রচণ্ড ভয়ে ছিলেন। যেন মনে হচ্ছিল, এটাই পৃথিবীর শেষ দিন।’

আরেক এক যাত্রী এএফপিকে জানিয়েছেন, সশস্ত্র বন্দুকধারীরা যাত্রীদের পরিচয়পত্র দেখে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন কারা বেলুচিস্তান প্রদেশের, আর কারা বাইরের। পরিচয়পত্র পরীক্ষা করার পর যাত্রীদের সামনেই কয়েকজন সেনাকে গুলি করেন বিদ্রোহীরা।

মোহাম্মদ নাভিদ নামে আরেক যাত্রী বলেন, প্রথমেই আমাদের ট্রেন থেকে নামিয়ে সন্ত্রাসীরা পুরুষ ও নারীদের আলাদা করে দাঁড় করায়। তারপর নারী এবং বয়স্কদের চলে যেতে বলে। ট্রেন নিজেদের দখলে নেওয়ার পর বেলুচ বিদ্রোহীরা নিজেদের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা করছিলেন, মুক্তির পর তাও জানিয়েছেন বন্দিরা। 

মুশতাক মোহাম্মদ বলেন, 'বিদ্রোহীরা মূলত বেলুচ ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। তাদের নেতা বার বার সতর্ক করে দিচ্ছিলেন। সকলকে সজাগ থাকতে বলছিলেন। বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীর গতিবিধির দিকে নজর রাখতে বলা হচ্ছিল। 

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা জেলার বাসিন্দা নোমান আহমেদ জানিয়েছেন, তিনি ওই ট্রেনে ঈদের জন্য বাড়ি ফিরছিলেন।তার কথায়, ‘আমরা যখন বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়, তখন গুলি থেকে বাঁচতে ট্রেনের কামরার দরজা বন্ধ করে দেই। কিছুক্ষণ পর একজন সন্ত্রাসী এসে বাকি যাত্রীদের থেকে নারী এবং বয়স্কদের আলাদা করে নিয়ে যায়। কয়েকজন আহত যাত্রী ট্রেনের মধ্যে থেকে যায়। তারা বের না হতে চাওয়ায় সন্ত্রাসীরা তাদের ওপরে গুলি চালায়।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ট্রেনটিতে মোট ৪৪০ জন যাত্রী ছিল। অভিযানে ৩৩ সন্ত্রাসীর সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত অভিযানের সময় কোনো যাত্রী নিহত হননি। তবে এর আগেই ২১ যাত্রীকে হত্যা করেন হামলাকারীরা।

কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনে গত মঙ্গলবার দুপুরে হামলা চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী। বেলুচিস্তানের বোলান এলাকার কাছে তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে যাত্রীদের জিম্মি করে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রগুলো জানায়, হামলাকারীরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে ‘বিদেশি সহায়তাকারী’দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাদের মধ্যে আফগানিস্তানে থাকা একজন ‘মাস্টারমাইন্ড’ রয়েছেন। এ ছাড়া তারা ট্রেনে থাকা নারী ও শিশুদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। এ কারণে অভিযানে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

এদিকে যাত্রীবাহী ট্রেনে ‘সন্ত্রাসী হামলার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, এই পবিত্র রমজান মাসে নিরীহ যাত্রীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো প্রমাণ করে, ওই সশস্ত্র ব্যক্তিদের ইসলাম, পাকিস্তান ও বেলুচিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ