পৃথিবীতে ফিরলেন সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পৃথিবীতে ফিরলেন সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর
ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে আসছেন সুনীতা। ছবি : নাসা

গত বছরের ৫ জুন বোয়িং নির্মিত স্টারলাইনার রকেটে করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন সুনিতা ও বুচ। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তারা মাত্র আট দিনের জায়গায় মিশনে প্রায় দীর্ঘ ৯ মাস অরবিটে অবস্থান করতে হয়। অবশেষে নাসার নভোচারী নিক হেইগ ও রুশ মহাকাশচারী আলেক্সান্দর গর্বুনভের সঙ্গে স্পেসএক্সের একটি ক্যাপসুলে চড়ে তারা পৃথিবীতে ফিরছেন মার্কিন নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামস।

সব শঙ্কা কাটিয়ে তাদের স্পেসএক্স ক্যাপসুল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে।

এরপর খুলে যায় চারটি প্যারাসুট যা তাদের ফ্লোরিডা উপকূলে পৌঁছে দেয়। এরপর একটি পুনরুদ্ধার জাহাজ ক্যাপসুলটিকে পানি থেকে তুলে নেয়। ক্যাপসুলটি খোলার পরে বেরিয়ে আসেন মহাকাশচারীরা, তখন তারা বিস্মিত হয়ে হাত নাড়িয়েছিলেন। তাদের সহকর্মী ক্রু সদস্যরা তাদের বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছিলেন।

নাসার বাণিজ্যিক ক্রু প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক স্টিভ স্টিচ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ক্রুরা দুর্দান্ত কাজ করছে।’ এর ফলে মাত্র আট দিনের জন্য স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল, এমন একটি মিশন দীর্ঘ ৯ মাস পর সমাপ্তি হলো।

আরো পড়ুন
উদ্বেগজনক অবস্থায় চাঁদাবাজি, নিয়ন্ত্রণে পেরুতে জুরুরি অবস্থা ঘোষণা

উদ্বেগজনক অবস্থায় চাঁদাবাজি, নিয়ন্ত্রণে পেরুতে জুরুরি অবস্থা ঘোষণা

 

নাসার মহাকাশ অপারেশন মিশন ডিরেক্টরেটের ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জোয়েল মন্টালবানো বলেন, ‘ক্রু ৯-কে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া অসাধারণ একটি ঘটনা।’ মহাকাশচারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্পেসএক্স আমাদের একটি দুর্দান্ত অংশীদার।

মহাকাশচারীদের বাড়ি ফিরতে ১৭ ঘন্টা সময় লেগেছে। পৃথিবীতে ফেরার পর তাদের স্ট্রেচারের সাহায্য নিতে হয়েছে। ওজনহীন পরিবেশে এতক্ষণ কাটানোর পর একটি সাধারণ ঘটনা। প্রথমে একটি মেডিকেল টিম তাদের পরীক্ষা করবে এবং তারপর তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হবেন তারা।

মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফেরার পর অনেক পরীক্ষা–নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাদের।

কারণ এত দিন মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার কারণে নানা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় হেরফের ঘটে।

ব্রিটেনের প্রথম মহাকাশচারী হেলেন শারম্যান বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ব্যাপার হবে বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং যাদের সঙ্গে তারা বড়দিন কাটানোর আশা করেছিল তাদের সঙ্গে পুনর্মিলন। পারিবারিক উদযাপন, জন্মদিন এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান যেখানে তারা অংশ নেবে বলে ভেবেছিল। এখন হঠাৎ করেই তারা হয়তো কিছুটা হারিয়ে যাওয়া সময় ফিরে পেতে পারেন।’

আরো পড়ুন
চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা

চীনে সন্তান জন্মদান উৎসাহে নেওয়া হচ্ছে নতুন পরিকল্পনা

 

মার্কিন নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনীতা উইলিয়ামসের গল্প শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের জুনে। তারা মহাকাশ সংস্থা বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানের প্রথম ক্রু পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে অংশ নিচ্ছিল। কিন্তু ক্যাপসুলটি মহাকাশ স্টেশন থেকে যাত্রার সময় বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল এবং মহাকাশচারীদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছিল। এরপর সেপ্টেম্বরের শুরুতে স্টারলাইনার নিরাপদে পৃথিবীতে খালি অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরে আসে, কিন্তু দুই নভোচারী মহাকাশেই থেকে যান। অবশেষে স্পেসএক্সের ক্রু-১০ মিশনের মাধ্যমে তাদের ফেরানো হলো।

নভোচারীদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় রাজনীতিরও একটা ভূমিকা ছিল। ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পরই নাসাকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এমনকি স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কও দ্রুত অভিযান শুরুর পক্ষে ছিলেন। তবে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা দাবি করেছিলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সুনিতা ও বুচকে মহাকাশে ফেলে রেখেছিলেন, যদিও এ ধরনের দাবির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সূত্র : বিবিসি, এপি
 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাকিস্তানে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ পোস্টের অভিযোগে সাংবাদিক আটক

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
পাকিস্তানে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ পোস্টের অভিযোগে সাংবাদিক আটক
প্রতীকী ছবি

পাকিস্তানের অনলাইন মিডিয়া চ্যানেল ‘রাফতার’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ফারহান মল্লিককে রাষ্ট্রদ্রোহী পোস্ট ও ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগে শুক্রবার (২১ মার্চ) আদালতে তোলা হয়েছে।

সংশোধিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফআইএ তাকে গ্রেপ্তার করে। আদালত তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ফারহান মল্লিক ইচ্ছাকৃতভাবে এমন তথ্য প্রচার করেছেন, যা ‘মিথ্যা বা আতঙ্ক সৃষ্টিকারী’ হতে পারে।

সংশোধিত আইনের আওতায় এ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

রাফতার চ্যানেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত কোনো শক্তিশালী প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি, যা মল্লিক বা তার চ্যানেলের বিরুদ্ধে আনা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগকে সমর্থন করে।’

বিগত কয়েক বছরে রাফতার চ্যানেলের বেশ কয়েকটি ভিডিও মিলিয়নের বেশিবার দেখা হয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকার বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

এই গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সরকারি সংস্থাগুলোর এই ধরনের পদক্ষেপ নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।’

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে পাকিস্তান বর্তমানে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫২তম অবস্থানে রয়েছে।

সংশোধিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী ইমান মাজারি বলেছেন, ‘এই আইনের পরিবর্তনগুলো মূলত মতপ্রকাশ দমন, সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার ও সরকারের সমালোচনাকে বন্ধ করার জন্য আনা হয়েছে।

পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। দেশটিতে একাধিকবার ইউটিউব, টিকটক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি বর্তমানে সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’ নিষিদ্ধ রয়েছে।

মন্তব্য

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ক্যান্সার হাসপাতাল বিধ্বস্ত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ক্যান্সার হাসপাতাল বিধ্বস্ত
সংগৃহীত ছবি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ক্যান্সার রোগীদের জন্য পরিচালিত ‘তার্কিস-প্যালেস্টিনিয়ান ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ ধ্বংস হয়েছে।

হাসপাতালটি নেতজারিম করিডরের সালাহ আল দীন স্ট্রিটের কাছে অবস্থিত। এটি এর আগে, ইসরায়েলি বাহিনীর কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

২০১৭ সালে তুরস্ক ৩৪ মিলিয়ন ডলার অনুদানে দিয়ে হাসপাতালটি পুনর্নির্মাণ করা হয়।

শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আজ এটি সম্পূর্ণরূপে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ হাসপাতালে প্রতি বছর ১০,০০০ রোগীকে ক্যান্সারের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ইসরায়েল নেতজারিম করিডর সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। এরপরই হাসপাতালটি ধ্বংস করে দেওয়া হলো।

গাজার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আল-রশিদ স্ট্রিট ব্যবহার করতে হবে, যা ইসরায়েলি আক্রমণের কারণে ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

মন্তব্য

তুরস্কে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ চলছেই

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
তুরস্কে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ চলছেই
ছবি : এএফপি

তুরস্কে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সরকারের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। তুরস্কে বিক্ষোভ-সমাবেশের ওপর চার দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

দেশটির রাজনীতিতে সেক্যুলার দল হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান পিপলস পার্টির-সিএইচপি নেতা একরেম ইমামোগলু।

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করার কথা ছিল এ সপ্তাহের শেষের দিকে।

এর মধ্যেই গত বুধবার দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তার অভিযোগে আরো ১০৫ জনের সঙ্গে ইমামোগুলোকেও আটক করা হয়।

এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে আরো অনেককে আটক করে সরকার। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ-সমাবেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

তার ভাষায়, নাটক করছে বিরোধীরা।

এরদোয়ান বলেন, ‘তারা এতটাই ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে যে, পুলিশকে আক্রমণ এবং বিচারক ও আইনজীবীদের হুমকি দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পৌঁছে গেছে।’

এদিকে, সিএইচপি পার্টির নেতা ওজগুর ওজেল অভিযোগ করেছেন, ১০৫ জনকে আটক করে বিরোধীদের দমনের কৌশল নিয়েছে সরকার।

ইস্তাম্বুলের সিটি হলের বাইরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের সেই চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার অধিকার জনগণের রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া ঘোষণা করেছেন অনলাইনে ২৬১ জন ‘সন্দেহভাজন অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারকে’ শনাক্ত করেছে পুলিশ।

তাদের বিরুদ্ধে ‘মানুষকে ঘৃণা ও শত্রুতার দিকে ঠেলে দেওয়া’ এবং ‘অপরাধে প্ররোচনা দেওয়ার’ অভিযোগ রয়েছে।

ইয়েরলিকায়া বলেন, ‘৩৭ সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে এবং অন্যদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।’

বৃহস্পতিবার ইমামোগলুর এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বার্তায়, ‘এই অন্যায় রুখে দাঁড়াতে’ তুরস্কের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। পরিস্থিতির জন্য এরদোয়ানের দলকে দায়ী করে বিচার বিভাগকেও সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয় ওই পোস্টে।

এতে বলা হয়, ‘পরিস্থিতি শুধু রাজনৈতিক দল ও আদর্শের প্রশ্নে আটকে নেই আর। এখন সাধারণ মানুষ ও তাদের পরিবার পরিজনের ওপরও এর প্রভাব পড়ছে। এখনই সময় আওয়াজ তোলার।’

শহরের বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে লাউডস্পিকারে ইমামোগলুর একটি বক্তৃতার রেকর্ড বাজছে। যাত্রীরা যখন ট্রেনে উঠতে উঠতে শুনছেন, ‘আপনাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি অঙ্গীকার করছি, এই লড়াইয়ে জিতব।’

রাস্তায় মিছিল করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তুরস্কের বিরোধীদের স্লোগান হিসেবে পরিচিত সেই কথাগুলোতে বলা হচ্ছে, ‘আমরা ভীত নই, চুপ করিয়ে রাখা যাবে না আমাদের, আমরা মানব না।’

তবে, এক কোটি ৬০ লাখের বেশি জনসংখ্যার এই শহরে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা এখনও তুলনামূলকভাবে কম। আপাতত, ইমামোগলুকে মুক্তি দিতে এরদোগানের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানোর সম্ভাবনাও কম তাদের।

গত কয়েক মাসে দেশব্যাপী বড় ধরণের অভিযান চালিয়েছে তুরস্ক সরকার। বিরোধী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং বিনোদন জগতের ব্যক্তিত্বরা ছিল সেইসব অভিযানের লক্ষ্যবস্তু। তারই ধারাবাহিকতায় ইমামোগলু এবং অন্যদের গ্রেপ্তার করা হলো।

আগামীতে এমন অভিযানের অংশ হিসেবে আরও অনেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হবে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। ভয় দেখাতেই তাদের আটক করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবশ্য গ্রেপ্তারের জন্য এরদোয়ানকে দায়ী করার সমালোচনা করেছে বিচার মন্ত্রণালয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়েছে তারা।

গত বছর দ্বিতীয় মেয়াদে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন একরেম ইমামোগলু। সেই স্থানীয় নির্বাচনে ইস্তাম্বুল এবং আঙ্কারায় জয়ী হয় তার দল সিএইচপি।

এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পর ওই নির্বাচনেই প্রথমবারের মতো তার দল সারা দেশে ব্যালট বাক্সের হিসাব-নিকাশে পরাজিত হয়েছিল। ব্যক্তিগতভাবে এরদোয়ানের জন্যও ধাক্কা ছিল এটি। তার রাজনৈতিক বেড়ে ওঠা বিশেষ করে ক্ষমতায় আসার পথে একসময় ইস্তাম্বুলের মেয়রও ছিলেন তিনি।

২২ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতার শীর্ষে আছেন এরদোয়ান। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি উভয় পদেই দায়িত্ব পালন করেছেন এরদোয়ান।

মেয়াদের বাধ্যবাধকতার কারণে, সংবিধান পরিবর্তন না করলে তিনি ২০২৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। অন্যদিকে, আগামী রবিবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করবেন সিএইচপির ১৫ লাখ সদস্য। যেখানে, ইমামোগলুই একমাত্র প্রার্থী।

এ ছাড়াও দলটি একটি প্রতীকী নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। তুরস্কের বিভিন্ন জেলায় ব্যালট বাক্স রাখার পরিকল্পনা করেছে তারা। আটক মেয়রের প্রতি সমর্থন জানাতে ওই ব্যালট বাক্সগুলোতে নাগরিকদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের এক্সের মামলা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ইলন মাস্কের এক্সের মামলা
সংগৃহীত ছবি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কন্টেন্ট অপসারণ করতে বেআইনি আদেশের অভিযোগে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম এক্স। মুম্বাই থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে একটি, যারা সরকারিভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট অপসারণের জন্য সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অনুরোধ জানায়।

মামলাটি ভারত সরকারের সেন্সরশিপ ক্ষমতার বিরুদ্ধে এক্সের সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ।

এমন সময়ে এই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, যখন ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক ও টেসলা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতে প্রবেশের প্রস্ততি নিচ্ছে।

মামলাটি ভারতের তথ্য প্রযুক্তি আইনের একটি বিধানকে কেন্দ্র করা হয়েছে, যার অপব্যবহার করে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কন্টেন্ট ব্লক করার আদেশ দিয়ে থাকে।

আইনি সংবাদ সম্পর্কিত ভারতীয় ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ‘এক্সের মতে এই বিধানটি তথ্য ব্লক করার ক্ষেত্রে একটি বেআইনি সমান্তরাল কৌশল হিসেবে অপব্যবহার করা হচ্ছে।’

এই সপ্তাহের শুরুতে মামলাটির সংক্ষিপ্ত শুনানিতে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

আগামী ২৭ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের একটি আদালতে এই মামলার শুনানি হবে।

ভারতে কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে মাস্কের এই প্ল্যাটফর্মটি নতুন নয়। ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনাকারী টুইট ও অ্যাকাউন্টগুলো অপসারণের আদেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করে টুইটার (এক্স-এর আগের নাম)। তখন ভারতীয় আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে প্ল্যাটফর্মটিকে ৬১ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করে।

প্রায় এক বছর পর এক্স জানায়, নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট ও পোস্টগুলোতে সরকারের ব্লক করার আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আপিল বিচারাধীন রয়েছে।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটি এক পোস্টে বলেছিল, ‘আমাদের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারত সরকারের ব্লকিং আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আপিল এখনো বিচারাধীন রয়েছে। আমরা আমাদের নীতি অনুসারে প্রভাবিত ব্যবহারকারীদের এই পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে নোটিশও দিয়েছি।’

পোস্টে আরো বলা হয়, আইনি বিধিনিষেধের কারণে আমরা নির্বাহী আদেশগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। তবে আমরা বিশ্বাস করি, স্বচ্ছতার জন্য সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা অপরিহার্য।

না প্রকাশ করলে জবাবদিহিতার অভাব ও স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে পরিচালিত করতে পারে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ