সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলছে বৈঠক। ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই ইউক্রেনে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেছেন, সবাই এবার যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করুক। জেলেনস্কির দাবি, কিয়েভ লক্ষ্য করে রবিবার রাতভর অন্তত ১৫০টি ড্রোন পাঠিয়েছে রাশিয়া। বেশ কিছু ড্রোন ধ্বংস করা গেলেও কয়েকটি ড্রোন বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। যার জেরে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘নতুন করে রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করার সময় এসেছে। ইউক্রেনে এভাবে আক্রমণ চালানো তাদের বন্ধ করতে হবে। তাহলেই একমাত্র এই যুদ্ধ শেষ করা সম্ভব।’
উল্লেখ্য, রবিবারেই সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে।
সাময়িক সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরো পড়ুন
মেক্সিকোতে খাদে পড়ে গাড়িতে আগুন, ১২ জনের মৃত্যু
রবিবারের বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ জানিয়েছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সদর্থক আলোচনা হয়েছে। আমরা আশাবাদী। বৈঠকে এনার্জি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’ উল্লেখ্যে, রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলাদা করে বৈঠক হওয়ার কথা।
রবিবারের বৈঠকের আগে জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘এই সপ্তাহে এক হাজার ৫৮০টি গাইডেড বোমা, এক হাজার ১০০টি ড্রোন, ১৫টি মিসাইল ইউক্রেন লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছে। উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হলো, এর মধ্যে এক লাখ দুই হাজার বিদেশি সরঞ্জাম ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।’
জেলেনস্কির অভিযোগ, রাশিয়া যে অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে, তা তৈরির সরঞ্জাম রাশিয়ার বাইরে থেকে আসছে, এমন প্রমাণ মিলেছে। জেলেনস্কির বক্তব্য, রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমা দেশগুলো মোতায়েন করেছে, তা আরো পোক্ত করা দরকার।
রাশিয়ার অবস্থান
রাশিয়া অবশ্য দ্রুত সমাধানসূত্র দেখা যাবে বলে মনে করছে না। তারা জানিয়েছে, আলোচনা মাত্র শুরু হয়েছে। এখনো অনেক কঠিন দর-কষাকষি বাকি। ফলে দ্রুত কোনো সমাধানে পৌঁছানো যাবে বলে তারা মনে করছে না।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ২০২২ সালে কৃষ্ণ সাগরের বাণিজ্য চুক্তির পুনর্নবিকরণ। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ওই চুক্তি হওয়ার ফলে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য আফ্রিকা এবং ইউরোপে নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে পেরেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্রুত যুদ্ধ শেষ হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। তার প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, আলোচনা যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি হওয়া সম্ভব বলেই তিনি মনে করেন। ফক্স নিউজকে উইটকফ জানিয়েছেন, সোমবারের আলোচনায় কৃষ্ণ সাগর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে। অর্থাৎ কৃষ্ণ সাগরে কোনো রকম লড়াই হবে না। এই চুক্তি ঠিকমতো হলে সামগ্রিক সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।